হাওজা নিউজ এজেন্সি: এই সাক্ষাতে আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী বিশেষভাবে উল্লেখ করেছেন যে, দেশের অর্থনৈতিক উন্নতি ও উৎপাদন শক্তি বৃদ্ধির জন্য শ্রমিকদের অবদান অপরিহার্য এবং তাদের সুরক্ষা, কর্ম পরিবেশ এবং দক্ষতা বৃদ্ধির বিষয়গুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
শ্রমিকদের জন্য উন্নত কর্মপরিবেশ এবং সুরক্ষা:
আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী শ্রমিকদের নিরাপত্তা এবং কর্মশক্তি সুরক্ষার প্রতি গুরুত্বারোপ করেছেন। তিনি বলেছেন যে, শ্রমিকদের কর্মস্থলে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা উচিত এবং শ্রমিকরা যাতে তাদের জীবিকা নির্বাহের জন্য নিরাপদ এবং স্থিতিশীল কর্মক্ষেত্র পায়, সে ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী বলেন, “শ্রমিকদের জীবিকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, তাদের কাজের পরিবেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং তাদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া জরুরি।” তিনি বিশেষভাবে কাজের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন।
অর্থনীতি এবং অভ্যন্তরীণ পণ্যের গুরুত্ব:
তিনি ইরানের অর্থনৈতিক উন্নতি এবং উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য অভ্যন্তরীণ পণ্য ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমাদের দেশে উৎপাদিত পণ্য ব্যবহার করা উচিত, যা দেশের অর্থনীতির জন্য উপকারী এবং বিদেশি পণ্য কেনার থেকে বিরত থাকতে হবে।” তিনি আরো বলেন যে, “কিছু ক্ষেত্রে, যদি স্থানীয় পণ্যের মান কম থাকে, তবে তার মান উন্নত করা উচিত।” এই প্রসঙ্গে, তিনি ইরানী শিল্পের উন্নতির জন্য স্থানীয় উৎপাদন ও উৎপাদনশীলতার প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেছেন।
শ্রমিকদের সুবিধা এবং অংশীদারিত্ব:
শ্রমিকদের উপকারিতা বাড়ানোর জন্য তাদের উৎপাদনে অংশীদারিত্বের বিষয়টি গুরুত্ব পেয়েছে। আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী বললেন, “যদি শ্রমিকরা উৎপাদনের লাভে অংশ নেয়, তবে তাদের কাজের গুণমান এবং উৎপাদনশীলতা বাড়বে।” তিনি শ্রমিকদের জন্য উপযুক্ত বাসস্থান এবং জীবনযাত্রার সুবিধা নিশ্চিত করার গুরুত্বও উল্লেখ করেছেন, যাতে তারা তাদের কাজের জন্য আরও উৎসাহী হতে পারে।
ফিলিস্তিনে গণহত্যা এবং আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া:
আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী ফিলিস্তিনের জনগণের প্রতি চলমান সহিংসতা এবং অবরোধের অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, “ফিলিস্তিনের সমস্যা কখনোই ভুলে যাওয়া উচিত নয়। এটি শুধু ফিলিস্তিনের জনগণের সমস্যা নয়, এটি বিশ্বের সকল মুসলিম জাতির সমস্যা।” তিনি যুক্তরাষ্ট্র এবং ব্রিটেনের ভূমিকা নিয়ে কঠোর মন্তব্য করেছেন, এবং বলেন যে, এই দুটি দেশ ইসরাইলের সহিংসতা এবং হত্যাযজ্ঞের পেছনে রয়েছে। তিনি বলেছেন, “মুসলিম জাতির উচিত একত্রিত হয়ে ইসরাইল এবং তার মিত্রদের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো।”
উন্নতি এবং ভবিষ্যৎ দৃষ্টিভঙ্গি:
আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী তাদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে বলেছেন, যারা দেশের উন্নতির জন্য কঠোর পরিশ্রম করছেন এবং বলেছেন যে, তিনি আশা করেন যে, ইরান ও অন্যান্য মুসলিম দেশ একদিন ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা দেখতে পাবে। তিনি মুসলিম দেশগুলিকে ঐক্যবদ্ধভাবে এই সংগ্রামে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।
মন্ত্রীর বক্তব্য:
এছাড়াও, এই সভায় ইরানের মন্ত্রী মোহাম্মদ সেজাদ মিদরি, যিনি শ্রমিকদের বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন, শ্রমিকদের সুখী ও সমৃদ্ধ জীবন নিশ্চিত করতে নানা পদক্ষেপের প্রস্তাব করেছেন। তিনি বলেন, “শ্রমিকরা আমাদের অর্থনৈতিক নীতি বাস্তবায়নের চালিকা শক্তি, এবং তাদের সঠিক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা দেশের উন্নতির জন্য অপরিহার্য।”
মিদরি বলেন, “শ্রমিকদের নিরাপত্তা এবং অধিকার সুরক্ষিত করা, তাদের কাজের পরিবেশ উন্নত করা, এবং আয় বাড়ানোর জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এই বৈঠকটি শ্রমিকদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি তাদের নিরাপত্তা, অধিকার এবং ভবিষ্যতের উন্নতির দিকে মনোনিবেশ করেছে। আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ীর ভাষণের মাধ্যমে দেশের অভ্যন্তরীণ শক্তি এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ফিলিস্তিনের প্রতি সমর্থনের কথা পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে, যা আগামী দিনের রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক দিকগুলিতে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে আসবে।
আপনার কমেন্ট