শনিবার ১৯ জুলাই ২০২৫ - ১৩:৩২
কারবালার এক অনন্য মুহূর্ত: ইমাম হুসাইনের আহ্বান ও আত্মীয়দের অটল অঙ্গীকার

কারবালার প্রান্তরে ইমাম হুসাইন (আ.) তাঁর সাথীদের সামনে একটি চূড়ান্ত ঘোষণা দেন, যেখানে তিনি বলেন: "আমি তোমাদের অনুমতি দিলাম, তাহলে তোমরা সবাই চলে যেতে পারো।

হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, কারবালা, মোহররম ৬১ হিজরী —
ইতিহাসের এক হৃদয়বিদারক অথচ গৌরবময় অধ্যায়ে, কারবালার প্রান্তরে ইমাম হুসাইন (আ.) তাঁর সাথীদের সামনে একটি চূড়ান্ত ঘোষণা দেন, যেখানে তিনি বলেন: "আমি তোমাদের অনুমতি দিলাম, তাহলে তোমরা সবাই চলে যেতে পারো। যে কেউ যেতে চায়, যেতে পারে।"

এই ঘোষণাটি ছিল গভীর এক নৈতিক ও মানবিক আহ্বান। তিনি বুঝাতে চেয়েছিলেন যে, তাঁর সংগ্রাম শুধু নিজের বা পরিবার পরিজনের জন্য নয়, বরং সত্য ও ন্যায়ের রক্ষার্থে, যেখানে কারো প্রতি জোর করা নেই। প্রত্যেককে তিনি মুক্তভাবে সিদ্ধান্ত নেবার সুযোগ দেন।

কিন্তু এই মুক্তির আহ্বানে যে প্রতিক্রিয়া তিনি পান, তা ইতিহাসে অনন্য উদাহরণ হয়ে রয়ে গেছে। ইমামের ভাইয়েরা, তাঁদের সন্তানরা এবং আব্দুল্লাহ ইবনে জাফরের পুত্রগণ — অর্থাৎ জনাবা জয়নাব (সা.)-এর সন্তানরা — একযোগে ফিরে এসে দৃঢ়তার সঙ্গে বলেছিলেন:
"لم نفعل ذلک؟"
"আমরা এটা কেন করবো? আমরা কোথায় যাবো? তোমার পরে তো জীবনের কোনো মানেই থাকে না।"

এবং তাঁরা আরও বলেছিলেন:
"لا ارانا الله ذلک ابدا"
"আল্লাহ আমাদের কখনো সেই দিন না দেখাক।"

এই বক্তব্য শুধু তাঁদের আবেগপ্রবণ অবস্থান নয়, বরং এক অমোঘ সত্যের ঘোষণাও বটে — যে তাঁরা ছিলেন ইমামের সঙ্গে ন্যায় ও সত্যের পথে চূড়ান্ত আত্মত্যাগে প্রস্তুত।

তাঁদের এই প্রত্যুত্তর, কারবালার ইতিহাসে শুধু সাহসিকতার নিদর্শন নয়, বরং আত্মিক ও নৈতিক অঙ্গীকারের এক চিরন্তন দলিল। যেখানে আত্মীয়তার বন্ধনের চেয়েও বড় হয়ে ওঠে আদর্শের প্রতি অঙ্গীকার।

আজও এই ঘটনা স্মরণ করিয়ে দেয়, কীভাবে কিছু মানুষের অবিচল সিদ্ধান্ত এবং আত্মত্যাগ কোটি কোটি মানুষের হৃদয়ে অনুপ্রেরণা হিসেবে চিরস্থায়ী হয়ে থাকে।

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha