মঙ্গলবার ২ ডিসেম্বর ২০২৫ - ১০:০০
কোরআন ও হাদিসে ইস্তিগফারের ধারণা

“ইস্তিগফার” অর্থ ক্ষমা প্রার্থনা। এটি আরবি মূল শব্দ “গাফারা” থেকে উদ্ভূত, যার মানে “ঢেকে দেওয়া” বা “আবরণ প্রদান করা”। সেই অর্থে, ইস্তিগফারের মৌলিক ধারণা হলো — আল্লাহর কাছে এমন দোয়া করা যাতে তিনি মানুষের পাপ ঢেকে দেন এবং তা থেকে উদ্ভূত ক্ষতি দূর করে দেন।

হাওজা নিউজ এজেন্সি: কোরআনে গাফারা মূলধারার বিভিন্ন শব্দরূপ মোট ২৩৪ বার ব্যবহৃত হয়েছে। পবিত্র কোরআন সাতবার ইস্তিগফার করতে উৎসাহ দিয়েছে। অনুরূপভাবে, আল্লাহ তাআলা নিজেকে ৯১ বার “গফুর”, ৫ বার “গাফ্‌ফার” এবং ১ বার “গাফির” নামে উল্লেখ করেছেন।

আল্লাহর ক্ষমা, দয়া এবং করুণার এই বিস্তৃত বিবরণ প্রমাণ করে যে তাঁর মাগফিরা সীমাহীন ও অনন্ত। যদিও “মাগফিরা” শব্দের আক্ষরিক অর্থ “ঢেকে দেওয়া”, তবুও মনে রাখতে হবে — মানুষের দেওয়া ক্ষমা এবং আল্লাহর মাগফিরার মধ্যে তুলনা চলে না।

মানুষ যখন কাউকে ক্ষমা করে, তখন ভুলটি শুধুই উপেক্ষা করে; কিন্তু সেই ভুলের প্রভাব মানুষের মন–মস্তিষ্ক এবং কাজের ওপর রয়ে যেতে পারে। কোরআনে বলা হয়েছে, “তাদের কর্ম তাদের অন্তরে পর্দা ফেলে দিয়েছে।”

(সূরা আল-মুতাফ্‌ফিফীন, আয়াত ১৪)

কিন্তু আল্লাহর পক্ষ থেকে পাপ ঢেকে দেওয়া মানে হলো — পাপের প্রভাব, পরিণতি ও ক্ষতিকর দাগ সম্পূর্ণভাবে মুছে দেওয়া। এ কারণেই আল্লাহর মাগফিরা মানুষের কল্পনার অতীত এবং সর্বোচ্চ পর্যায়ের ক্ষমা।

আরও বিস্ময়কর হলো— কখনও কখনও এই মাগফিরা এমন স্তরে পৌঁছে যে, পাপগুলোও সৎকাজে রূপান্তরিত হয়ে যায়। কোরআনে বলা হয়েছে, “…তবে তারা যারা তওবা করে, ঈমান আনে এবং সৎকাজ করে— আল্লাহ তাদের মন্দ কাজগুলোকে সৎকর্মে পরিণত করে দেবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।”

(সূরা আল-ফুরকান, আয়াত ৭০)

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha