রবিবার ৭ ডিসেম্বর ২০২৫ - ২০:৫৬
উমর-এর স্বীকারোক্তি: হযরত আলী (আ.)-এর অনন্য ফজিলত

খলিফা উমর ইবনে খাত্তাব বহুবার প্রকাশ্যে স্বীকার করেছেন হযরত আলী (আ.)-এর অসাধারণ মর্যাদা ও গুণাবলি সম্পর্কে। নবী করিম (সা.)-এর বাণীর ভিত্তিতে তিনি বলেছেন, আলীর তিনটি বিশেষ গুণের যেকোনো একটি যদি তার (উমরের) মধ্যে থাকতো, তবে তা তার কাছে সূর্যের আলো যেসব কিছুর উপর পড়ে-তার সবকিছুর চেয়েও মূল্যবান হতো।

হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, নবী (সা.)-এর ঘোষণা:
খলিফা উমর বলেন,
“আলীর তিনটি বিশেষ গুণ আছে; আমি—উমর-ইচ্ছা করতাম যদি তাদের একটি মাত্রও আমার থাকত। তা হলে এটি আমার কাছে সূর্য যে কিছুর উপর উদিত হয় তার সবকিছুর চেয়েও প্রিয় হতো।”
(তারিখে মদীনা দামিশ্‌ক, খণ্ড ৪২, পৃষ্ঠা ১৬৬)

হজরত আলী (আ.)-এর বিরোধীদের প্রতি উমর (আ.)-এর কঠোর সতর্কবাণী

১. আলীর সাথে তর্ককারীকে উদ্দেশ্য করে উমরের তির্যক মন্তব্য:
সুয়াইদ ইবনে গাফিলা বর্ণনা করেন—উমর এক ব্যক্তিকে দেখেন, যে আলী (আ.)-এর সঙ্গে তর্কে লিপ্ত। কথোপকথন তীব্র হয়ে উঠলে উমর বলেন:
“আমি মনে করি তুমি মুনাফিকদের একজন; আলীর সাথে ঝগড়া করছ কেন?”

এরপর তিনি নবী (সা.)-এর এই বাণী স্মরণ করিয়ে দেন:
“আলী আমার নিকট সেই মর্যাদার অধিকারী, যে মর্যাদা হারুন মূসার কাছে ছিলেন; তবে আমার পরে কোনো নবী নেই।”

২. হজরত আলী (আ.)-কে গালি দেওয়া ব্যক্তিকে উদ্দেশ্য করে:
অন্য বর্ণনায় আছে—উমর এমন একজনকে দেখলেন, যে আলীকে গালি দিচ্ছিল। তিনি জোর দিয়ে বললেন:
“তুমি অবশ্যই মুনাফিকদের একজন।”

তিনি আবার সাক্ষ্য দিলেন নবী (সা.)-এর বাণীর:
“অবশ্যই আলী আমার অনুরূপ, যেমন হারুন মূসার ছিল।”

(তারিখে মদীনা দামিশ্‌ক, খণ্ড ৪২, পৃষ্ঠা ১৬৭)

ইবনে আব্বাস (রা.)-এর বর্ণনা

ইবন আব্বাস (রা.) বলেন, তিনি একবার দেখলেন, সাহাবিদের একটি দল ইসলামের অগ্রগামী ব্যক্তিদের গুণাবলি নিয়ে আলোচনা করছেন। তখন উমর বললেন:

“আমি আলীর ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ (সা.)-কে তিনটি গুণ উল্লেখ করতে শুনেছি। আমি-উমর-ইচ্ছা করতাম, যদি তাদের একটি মাত্রও আমার থাকত। তা হলে এটি আমার কাছে পৃথিবীর সবকিছুর চেয়ে মূল্যবান হতো।”

এই সব বর্ণনা প্রমাণ করে যে উমর নিজেই হযরত আলী (আ.)-এর ফজিলত, মর্যাদা ও নবী (সা.)-এর নিকট তার বিশেষ অবস্থান সম্পর্কে সর্বোচ্চ সম্মান ও স্বীকৃতি প্রদান করেছিলেন।

লেখা: উস্তাদ আয়াতুল্লাহ কাজভীনি 

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha