বৃহস্পতিবার ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪ - ২২:০৫
২০ জুমাদাস সানিয়া নবী দুহিতা হযরত ফাতিমার ( আ ) শুভ জন্মদিন

হাওজা / ২০ জুমাদাস সানিয়া নবী দুহিতা হযরত ফাতিমার ( আ ) শুভ জন্মদিন উপলক্ষে শুভেচ্ছা ও তাব্রীক ( অভিনন্দন )

হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, হযরত ফাতিমার ( আ ) জন্মগ্রহণের বৃত্তান্ত

  যখন রাসূলুল্লাহ ( সাঃ ) হযরত খাদীজাকে ( আ ) বিবাহ করেন তখন পবিত্র মক্কার রমণীরা এ বিবাহের তীব্র বিরোধিতা করেছিল এবং হয়রত খাদীজা ( আ ) এ থেকে খুবই চিন্তিত ও পেরেশান (বিচলিত) হয়ে গিয়েছিলেন। কিছুদিন গত হয়ে যাওয়ার পর হযরত খাদীজা ( আ ) হযরত ফাতিমাকে ( আ ) গর্ভধারণ করেন । আর গর্ভধারণের অল্প কিছু দিন পরে হযরত ফাতিমার ( আ ) ভ্রূণ মায়ের অন্তরঙ্গ ও ঘনিষ্ঠ সহচর হয়ে যায় যে মাতৃগর্ভের ভিতর থেকে তাঁর ( আ ) সাথে কথোপকথন করতে থাকে। আর হযরত খাদীজাও ( আ ) এ রহস্য ফাঁস করেন নি । অবশেষে একদিন হযরত রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ঘরে প্রবেশ করে বুঝতে পারলেন যে হয়রত খাদীজা ( আ ) কারো সাথে কথা বলছেন। তিনি ( সা ) জিজ্ঞেস করলেন : " কার সাথে কথা বলছিলে ? "  হয়রত খাদীজা ( আ ) বললেন : " আমার গর্ভে যে কন্যা সন্তান আছে তাঁর সাথে কথা বলছিলাম । কারণ সে আমার একাকিত্বের সময় আমার ঘনিষ্ঠ সাথী ও সঙ্গী । " হযরত রাসূলুল্লাহ ( সাঃ ) বললেন : " হে খাদীজা ! জিব্রাইল আমাকে জানিয়েছেন যে মহান আল্লাহ এই মেয়ের বংশধরদের মধ্য থেকে এমন সব নেতাকে মনোনীত করেছেন যাঁরা হবেন ধরণীর বুকে তাঁর খলীফা এবং জগত বাসীদের জন্য তাঁরা হবেন হুজ্জত ( মহান আল্লাহর ধর্ম ও এ সৃষ্টি জগত টিকে থাকার ঐশী দলীল , প্রমাণ ও নিদর্শন ) । " সময় দ্রুত অতিক্রান্ত হচ্ছিল । আর গর্ভাশয়ের অন্ধকার জগৎ থেকে এ পৃথিবীতে নূরের ( আলো ও দ্যুতি) আগমনের অতি সংবেদনশীল মুহূর্তগুলো ঘনিয়ে আসছিল। ঐ সময় হয়রত খাদীজা ( আ ) পবিত্র মক্কা নগরীর মহিলাদের কাছে পয়গাম ( বাণী ) পাঠিয়ে তাদের সাহায্য কামনা করেন । কিন্তু তারা অত্যন্ত তিক্ত ও তিরস্কার ব্যঞ্জক কথা শুনিয়ে তাঁকে ( আ ) সাহায্য করা থেকে বিরত থেকেছিল । হযরত খাদীজা ( আ ) ( তাদের এ রূঢ় আচরণে ) খুবই মর্মাহত , ব্যথিত এবং দু:খ - বিষাদে নিমজ্জিত হয়ে যান । ঠিক তখন হঠাৎ করে শ্যামলা বর্ণের দৃঢ় ব্যক্তিত্বের অধিকারিনী চারজন  মহিয়সী নারী বাড়িতে প্রবেশ করে বললেন : হে খাদীজা ! আমরা মহাপ্রভুর কাছ থেকে আপনাকে সাহায্য করার জন্য এসেছি । আমি ইব্রাহীমের পত্নী সারাহ এবং ইসহাকের মা । আর এ হচ্ছে আসিয়া যিনি হবেন বেহেশতে আপনার সঙ্গী , ঐ অপর জন হচ্ছেন মারিয়াম বিনতে ইমরান যিনি ঈসার মা এবং ঐ মহিলা হচ্ছেন কুলসূম যিনি  মূসার ভগ্নি । অতঃপর ঐ চার মহিলা হযরত খাদীজার চারপাশে বসলেন এবং তাঁকে সাহায্য করতে লাগলেন । অবশেষে এ জগতে পাক পবিত্র অবস্থায় হযরত ফাতিমার ( আ ) অস্তিত্বের নূরের ( আলো ) আগমন হল ও দ্যুতির বিচ্ছুরণ ঘটল । তাঁর জ্যোতি ও সৌন্দর্যের ছটায় পবিত্র মক্কার সকল গৃহ উজালা ও আলোকিত হয়ে গেল । এরপর দশ জন ফেরেশতা বেহেশতী পাত্র ও কাওসার ঝর্ণার পানি হাতে নিয়ে আগমন করলেন এবং নবজাতিকা কন্যাকে গোসল দিয়ে দুটো সাদা ও খোশবু কাপড়ে আবৃত করলেন । আর এই সময় নবজাতিকা হযরত ফাতিমা ( আ ) মুখ খুলে মহান আল্লাহর একত্ব  , পিতা হযরত মুহাম্মাদের ( সা ) রিসালাত , স্বীয় স্বামী হযরত আলী ( আ ) এবং এগারো সন্তান ও বংশধর ইমামের ইমামতের সাক্ষ্য দেন এবং তাঁদের ( ১১ জন সন্তান ও বংশধর ) প্রত্যেকের পবিত্র বরকতময় নাম উচ্চারণ করেন। এরপর উপস্থিত মহিয়সী নারীদের সবাইকে এক এক করে সালাম দেন । অতঃপর মেহমানরা শুভেচ্ছা ,  অভিনন্দন ও সাধুবাদ জ্ঞাপন করে  ঘর থেকে বের হয়ে যান ।

অনুবাদ :  মুহাম্মদ মুনীর হুসাইন খান

Tags

Your Comment

You are replying to: .