বৃহস্পতিবার ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪ - ২২:২৬
ইসরাইলী সেনাবাহিনীর বিমান হামলা সিরিয়ার প্রতিরক্ষা ও সামরিক সামর্থ্যকে চুরমার করে দিয়েছে !

হাওজা / ইসরাইলী সেনাবাহিনীর বিমান হামলা সিরিয়ার প্রতিরক্ষা ও সামরিক সামর্থ্যকে চুরমার করে দিয়েছে !

হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, ইসরাইলের হিসাব মতে সিরিয়ার ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপ যোগ্য ক্ষেপণাস্ত্রের ৯০% ধ্বংস করা হয়েছে।

এ খবর নিয়ে কিছু বিশ্লেষণ :

   ‌তাহলে হাইআত তাহরীরিশ শামের নেতৃত্বে তথাকথিত টেরোরিস্ট গোষ্ঠী সমূহ কর্তৃক বাশার আসাদ সরকারের পতন আসলে ও প্রকৃত পক্ষে ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর সবচেয়ে বড় দুশমন ইসরাইলের পক্ষেই গেছে এবং এই সুযোগে ইসরাইল সিরিয়ার প্রতিরক্ষা ও সামরিক শক্তি সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দিয়েছে যাতে ভবিষ্যতে সিরিয়া ইসরাইলের জন্য শক্তিশালী প্রতিপক্ষ ও হুমকি হতে না পারে। আর ইসরাইল নিজেও বলছে যে সিরিয়ায় বাশার আসাদ সরকারের পতনের আশায় ছিল ইসরাইল দীর্ঘ দিন ধরে। অতঃপর তা বাস্তবায়িত হলে ইসরাইল ফাঁকা মাঠে গোল দেয় । অথচ বাশার আসাদ সরকার বিদ্যমান থাকা কালে ইসরাইল এ কাজ করতে পারে নি । কিন্তু তুরস্ক, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইসরাইল ও আরব প্রতিক্রিয়াশীল চক্রের সমর্থনপুষ্ট সন্ত্রাস তাকফীরী গোষ্ঠী গুলো বাশার আসাদ সরকারের পতন ঘটিয়ে ইসরাইলের বহু উপকার সাধন করে যা পবিত্র কুরআনের এ আয়াতের সম্পূর্ণ পরিপন্থী। এ আয়াতটি :

وَ أَعِدّّوْا لَهُمْ مَا اسْتَطْعْتُمْ مٌّنْ قُوَّةٍ وَ مِنْ رِّبَاطِ الْخَیْلِ تُرْهِبُوْنَ بِهٖ عَدُوَّ اللّٰهِ وَ عَدُوَّکُمْ وَ آخَرِیْنَ مِنْ دُوْنِهِمْ لَا تَعْلَمُوْنَهُمُ اللّٰهُ یَعْلَمُهُمْ .

এবং তোমরা তাদের ( শত্রুদের প্রতিরোধের ) জন্য যথাসাধ্য শক্তি ( সংগ্রহ কর ) এবং অশ্বের সারি প্রস্তুত রাখ যাতে এর মাধ্যমে তোমরা আল্লাহর শত্রু, তোমাদের শত্রু এবং তাদের ছাড়া অন্যদের -- যাদের তোমরা চিন না ( ও  জান না ) কিন্তু আল্লাহ তাদের জানেন ( ও  চিনেন ) -- ভীত ও সন্ত্রস্ত রাখতে পার । ( সূরা -ই আনফাল ৮ : ৬০ )

    তুরস্কের মুনাফিক দ্য গ্রেট এরদোগান , মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র , ইসরাইল ও আরব প্রতিক্রিয়াশীল চক্রের সমর্থনপুষ্ট টেরোরিস্ট হাইআত তাহরীরিশ শামের নেতৃত্বে সন্ত্রাসী  তাকফীরী গোষ্ঠী সমূহ জটিল কুটিল হাইব্রিড যুদ্ধ প্রক্রিয়ায় বাশশার আল আসাদ সরকারের পতন ঘটিয়ে সিরিয়ায় ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর সবচেয়ে বড় দুশমন ইসরাইলের আক্রমণ ও আগ্রাসনের পথ উন্মুক্ত ও সুগম করে দেয় যার ফলে ইসরাইল নির্ভয়ে ও বিন বাধায় ও বিনা প্রতিরোধে অনায়াসে চড়ুই ভাতির মতো সিরিয়ায় ব্যাপক বোমাবর্ষণ করে দেশটির শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ও সামরিক অবকাঠামো সহ সকল অবকাঠামো এই গত কয়েক দিনে সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দিয়েছে। এই হায়াত তাহরীরিশ শাম ও সকল তাকফীরী সালাফী গোষ্ঠী এবং তাদের সিরিয়ায় ক্ষমতা দখল ইসরাইলকে মোটেও ভীত সন্ত্রস্ত করে নি বরং দেশটির শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ও সামরিক অবকাঠামো সম্পূর্ণ ধ্বংস করার সাহস যুগিয়েছে। কারণ সিরিয়ার ক্ষমতা দখলকারী সন্ত্রাসী তাকফীরী গোষ্ঠী গুলো খুবই দুর্বল বরং ইহুদী নাসারাদের ( ইসরাইল , মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র , ইউক্রেন কর্তৃক অস্ত্র শস্ত্রে সজ্জিত) এবং কপট এরদোগানের সাহায্য , সমর্থন , শক্তি ও সাহায্য নিয়ে ক্ষমতায় এসেছে এবং এ জন্য ইসলামের ১নং দুশমন ইসরাইল , মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমাদের ওপর নির্ভরশীল। তাই সিরিয়ায় এ সব সালাফী তাকফীরী সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আসলে ইসলাম , মুসলিম উম্মাহ ও আল্লাহর দুশমন ইসরাইল , মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমাদের পদসেবায় লিপ্ত । তুরস্কের সাথে ইসরাইল , মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমাদের অর্থাৎ মহান আল্লাহ, ইসলাম ও মুসলিম  উম্মাহর প্রধান শত্রুদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ও সহযোগিতা বিদ্যমান। মূলতঃ মার্কিন - ইসরাইল - তুরস্কের যৌথ ষড়যন্ত্র ও পরিকল্পনায়  সিরিয়ায় বাশার আসাদ সরকারের পতন ও ক্ষমতার পটপরিবর্তন করা হয়েছে। তাই তুরস্কও ইসলামের প্রধান শত্রুদের সহযোগী ও পদসেবী । আর এ কারণেই ইসরাইল সিরিয়ার সার্বিক অবকাঠামো ধ্বংস করতে তুরস্ক ও হাইআত তাহরীরিশ শামের নেতৃত্বে সালাফী সন্ত্রাসী তাকফীরী গোষ্ঠী গুলো ও নব্য প্রতিষ্ঠিত সিরীয় প্রশাসনকে গণনার মধ্যেই আনবে না।

  উক্ত আয়াতে আল্লাহ পাক মুসলমানদের ওপর ঐ ধরনের শক্তি সঞ্চয় করা ওয়াজিব ও ফরয করেছেন যা দেখে মহান আল্লাহ ও মুসলমানদের শত্রুরা ভয় করে । কিন্তু এ সব সালাফী তাকফীরী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর শক্তিকে ইসরাইল মোটেও ভয় করে না বরং ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বাশশার আসাদ সরকারের পতন ঘটিয়ে ঐ সরকারের আমলে গোড়ে ওঠা সিরীয় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা , অবকাঠামো ও সামরিক শক্তি , যা ছিল ইসরাইলের ভীতির কারণ ও চক্ষুশূল তা শূন্যতা ও বিশৃঙ্খলার সুযোগ নিয়ে ইসরাইল সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দিয়েছে। আসলে হাইআত তাহরীরিশ শাম ও সালাফী তাকফীরী সন্ত্রাসী গোষ্ঠী গুলো  বাশার আসাদ সরকারের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধই করে নি । কারণ ঐ সেনাবাহিনীকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে নিষ্ক্রিয় করে ফেলা হয়েছিল যার ফলে তারা লড়াই না করে বিদ্রোহীদের কাছে শহর সমূহ অর্পণ করে পিছু হটতে থাকে দামেশকের পতন হওয়া পর্যন্ত।

   আর এই বিদ্রোহী সালাফী তাকফীরী সন্ত্রাসী গোষ্ঠী গুলো যদি প্রকৃত পক্ষে লড়াকু হত তাহলে ইসরাইল সিরিয়ায় আগ্রাসন চালিয়ে সিরীয় ভূখণ্ড ( স্ট্র্যাটেজিক কুনাইতারা ও গোলান মালভূমির সিরিয়ার নিয়ন্ত্রণাধীন অংশ ) দখল এবং দামেশকের উপকণ্ঠ পর্যন্ত অগ্রসর হওয়ার সাহস দেখাত না । আর হাইআত তাহরীরিশ শাম ও সালাফী তাকফীরী সন্ত্রাসী গোষ্ঠী গুলো ইসরাইলের এই আগ্রাসন প্রতিহত করা তো দূরের কথা সামান্য তম মৌখিক প্রতিবাদও জানায় নি ।

   অতএব এই আয়াত থেকে প্রমাণিত হয় হায়াত তাহরীরিশ শাম গং আসলে মুসলমানদের প্রকৃত এক নম্বর দুশমনদের ভীত সন্ত্রস্ত করতে অপারগ ও অক্ষম এবং এ কারণে তারা আসল খাঁটি ইসলামের প্রতিনিধিত্ব করে না বরং তারা মহান আল্লাহ , ইসলাম ও মুসলমানদের প্রধান ও প্রকৃত দুশমন ইসরাইল , মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও পাশ্চাত্যেরই সেবাদাস ।

রিপোর্ট: হামেদ সাবের

Tags

Your Comment

You are replying to: .