হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, ইসরাইল হাইয়াওম ( ইসরাইল টুডে ) সংবাদ পত্রে যায়নিস্ট বিশ্লেষক ইয়োনী বেন মেনাহীম বলেছেন : ইসরাইল ইয়ামানী সশস্ত্র বাহিনীর মুখপাত্র জেনারেল ইয়াহইয়া সারী এবং আরো অন্যান্য ইয়ামানী কম্যান্ডার ও সেনাপতিকে গুপ্ত হত্যার পাঁয়তারা করছে এবং ইয়ামান আক্রমণের জন্য ইসরাইলের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সিদ্ধান্ত গৃহীত পদক্ষেপ সমূহের অপেক্ষায় রয়েছে। ইয়ামানীরা ইসরাইলের বিরুদ্ধে নিজেদের হুমকি বাড়িয়ে দিয়েছে এবং ইয়ামান থেকে প্রেরিত ড্রোন সমূহ ইসরাইলের ভিতরে বিভিন্ন লক্ষ্য বস্তুর ওপর আঘাত হেনেছে। এদিকে ইয়ামানের উচ্চ পদস্থ হুসী কর্মকর্তাগণ ইসরাইলের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন যে গাযা ও সিরিয়ায় ইসরাইলের লাগাতার অবিরাম হামলার চরম মূল্য দিতে হবে।
হাইয়াওম লিখেছে যে সাইয়েদ আব্দুল মালেক আল হুসী ( ৫৪ বছর ) গুপ্ত হত্যার শীর্ষ টার্গেট এবং তাঁর পরে টার্গেট হচ্ছেন মাহদী আল - মুশাত্ব্ যিনি ইয়ামানের সুপ্রিম কাউন্সিল ও সশস্ত্র বাহিনী প্রধান। (ইয়ামানী সশস্ত্র বাহিনীর মুখপাত্র জেনারেল ইয়াহইয়া সারী )
ইয়ামানী প্রতিরক্ষা মন্ত্রী মুহাম্মদ আল - আত্তাফী ( ৫৫ বছর ) হত্যার পরবর্তী টার্গেট । আর ইয়ামানী সেনাবাহিনী প্রধান মুহাম্মদ আব্দুল করীম আর - রাম্মারী তাঁর পরের টার্গেট।
ইয়ামানী নৌবাহিনী প্রধান মুহাম্মদ ফাযেল আব্দুন্নবী ( ৭২ বছর ) ঐ সব ব্যক্তির অন্তর্ভুক্ত যাদেরকে গুপ্ত হত্যার পরিকল্পনা করছে ইসরাইল। বলা হয় যে লোহিত সাগরে বহু ইসরাইলী জাহাজের বিরুদ্ধে আক্রমণ এই নৌপ্রধানের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয়েছে।
ইয়ামানী কোস্ট গার্ড বাহিনীর প্রধান মুহাম্মদ আলী আল - ক্বাদেরীও নৌবাহিনী প্রধান আব্দুন্নবীর পাশাপাশি ইয়ামানী সেনাবাহিনীর সামুদ্রিক অভিযান সমূহ পরিচালনার দায়িত্ব পালন করছেন।
ইসরাইল হাইয়াওম কর্তৃক মুহাম্মদ আলী আত - তালিবীও ইয়ামানী সেনাবাহিনীর ক্ষেপণাস্ত্র , ড্রোন ও উন্নত যুদ্ধাস্ত্রের যন্ত্রাংশের যোগানদাতা হিসেবে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন ।
ইয়ামানী সশস্ত্র বাহিনীর মুখপাত্র জেনারেল ইয়াহইয়া সারীও ( ৫৪ বছর ) যায়নবাদী ইসরাইলের গুপ্ত হত্যা লিস্টে রয়েছেন এবং তেল আবীব তাঁকে মানসিক যুদ্ধের স্থপতি ও অধিনায়ক হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
ইয়োনী বেন মেনাহীম গতকাল মঙ্গলবার উর্ধ্বতন ইসরাইলী সামরিক ও নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে লিখেছে : ইয়ামানে হামলার জন্য ইসরাইল প্রস্তুত এবং রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সিদ্ধান্ত গ্রহণের অপেক্ষায় রয়েছে।
এই যায়নবাদী বিশ্লেষকের ধারণায় আজ ইয়ামানীরা ইসরাইলের বিরুদ্ধে যুদ্ধের প্রথম কাতার ও সারিতে রয়েছে । গত এক সপ্তাহে তারা ইসরাইলে ৬ টি ড্রোন ও ২টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়েছে। ইসরাইল ট্রাম্পের হোয়াইট হাউসের দায়িত্ব গ্রহণের অপেক্ষায় রয়েছে। ট্রাম্প ক্ষমতা নিলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় ইয়ামানীদের বিরুদ্ধে আরো কঠোর ব্যবস্থা ও পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলে ইসরাইল সামুদ্রিক অবরোধ ও বয়কট থেকে রেহাই পাবে বলে ধারণা করছে এই বিশ্লেষক ।
মূল ফার্সী ( https://www.asriran.com/fa/news/1022617 ) থেকে অনুবাদ : মুহাম্মদ মুনীর হুসাইন খান
এ সংবাদ প্রতিবেদন নিয়ে কিছু কথা :
ইয়ামানের বীর নেতাদের গুপ্ত হত্যার ধান্দায় ইসরাইল !
ইয়ামানের এ সব বীর অকুতোভয় নেতাকে আল্লাহ রক্ষা করুন । এরা ঐ সব সৌভাগ্য বান ব্যক্তি যারা শহীদদের পথের অনুসারী এবং ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর সবচেয়ে জঘন্য শত্রুরা ( ইসরাইল ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গং ) তাদের বিরুদ্ধে গুপ্ত হত্যার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।
ফিলিস্তিন ও গাযার সহায় সম্বলহীন মযলূম মুস্তাদ'আফ জনতার পাশে এসে তাঁরা দাঁড়িয়েছেন নিজেদের পার্থিব জীবন ও অস্তিত্বের মায়া ত্যাগ করে। তাঁদের পূর্বসূরি ইয়ামানী নেতৃবৃন্দের অনেকেই ইসরাইল ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এজেন্টদের হাতে শাহাদাত বরণ করেছেন। তবুও মহান আল্লাহর এ সব সিংহ পুরুষ তাদের আদর্শ ও কর্তব্য থেকে বিন্দু মাত্র বিচ্যুত হন নি । আল - হামদুলিল্লাহ ধন্য এরা । এরা এমন পরম গৌরব ও সৌভাগ্যের অধিকারী যে ইসলামের চরম দুশমনরা এদের হত্যা করার ষড়যন্ত্র করছে।
আজ কোথায় আরব ও মুসলিম দেশগুলোর নেতৃবৃন্দ ?! বরং এদের অনেকেই যেমন : তুরস্কের এরদোগান ( নরশকূন ) , মিসরের সিসি ( ছিছি ) , জর্দানের বাদশাহ আবদুল্লাহ ( আব্দুশ শয়তান ) , সৌদী রাজ সালমান , আরব আমিরাত প্রধান ইসলামের চরম ও ১ নং শত্রু ইসরাইল এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় লিপ্ত। গাযার মযলূম ফিলিস্তিনী জনতার পাশে দাঁড়ায় নি এরা বরং এরা ইসরাইলকেই সেবা করে যাচ্ছে কেনা দাসের মতো । এদের কোনো লজ্জা - শরম নেই , বিবেকবোধ ও অনুভূতিও নেই। দুদিনের রাজত্ব ও দুনিয়ার আরাম আয়েশের জন্য এরা ইসরাইল ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পা চাটছে । আজ যদি বীর মুজাহিদ ইয়ামানীদের মতো এরা নিজেদের জীবন প্রাণ ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর জন্য উৎসর্গ করে ইসরাইল ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াত ও প্রতিরোধ করতে তাহলে গাযা ও ফিলিস্তিনের ভাগ্য অন্য রকম হতে পারত ।
রিপোর্ট: মুহাম্মদ মুনীর হুসাইন খান
Your Comment