বৃহস্পতিবার ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ - ০৮:০৭
জাতি ও বর্ণ নয়, ইমান ও তাকওয়াই ইসলামে মানুষের মর্যাদার মানদণ্ড

হাওজা ইলমিয়ার একজন শিক্ষার্থী ফাতেমা বাতুল বলেন, “ইসলাম মানবমর্যাদা ও সমতার ধর্ম। কোরআন ও হাদিসে বারবার মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, জাতি, বর্ণ বা ভাষা মানুষের শ্রেষ্ঠত্বের মানদণ্ড নয়। প্রকৃত মর্যাদা নিহিত থাকে তাকওয়া, ঈমান ও সৎকর্মে।”

হাওজা নিউজ এজেন্সি: তিনি নবী করীম (সা.)-এর  একট ঘটনার উদাহরণ টেনে বলেন, একদিন আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মাদ (সা.) কয়েকজন সাহাবির সঙ্গে মসজিদে বসে আলাপ করছিলেন। ঠিক সেই সময় নবীর প্রিয় সাহাবি সালমান ফারসি (রহ.) মসজিদে প্রবেশ করলেন। নবী করীম (সা.) হাসিমুখে সালমানকে ডেকে নিজের পাশে বসতে বললেন।

এমন সময় উপস্থিত একজন ব্যক্তি ক্ষুব্ধ হয়ে বলল, “সালমান তো ফারস জাতির লোক। আমরা তো আরব। সে কীভাবে আমাদের সমান হয়ে আমাদের পাশে বসবে? তাকে নিচে বসতে হবে!”

নবী করীম (সা.) ঐ কথায় গভীরভাবে মর্মাহত হলেন এবং সঙ্গে সঙ্গে বললেন, “না! কেউ ফারসি বা আরব হওয়ার কারণে শ্রেষ্ঠ নয়। গায়ের রঙ, ভাষা বা জাতি কোনো শ্রেষ্ঠত্বের মাপকাঠি নয়। আল্লাহর কাছে যিনি সত্যিকার শ্রেষ্ঠ, তিনি তাকওয়াবান, ঈমানদার এবং সৎকর্মপরায়ণ ব্যক্তি।”

এরপর তিনি আল্লাহ তা’লার বাণী তিলাওয়াত করলেন,  “নিশ্চয়ই আল্লাহর কাছে তোমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তি সর্বাধিক সম্মানিত, যে সর্বাধিক তাকওয়াবান।” (সুরা হুজরাত, আয়াত ১৩)

তিনি বলেন, এই ঘটনাটি আমাদের একটি অমূল্য শিক্ষা দেয়—মানুষের প্রকৃত মূল্য তার চরিত্র ও কর্মে। ইসলামি দৃষ্টিকোণ থেকে শ্রেষ্ঠত্ব নির্ধারিত হয় না জন্মস্থান, বংশ বা রঙ দ্বারা; বরং নির্ধারিত হয় আল্লাহভীতি (তাকওয়া) এবং সৎকর্ম দ্বারা।

তিনি শেষে বলেন, আজও আমাদের সমাজে জাতি, বর্ণ, ভাষা কিংবা সামাজিক অবস্থান নিয়ে বিভেদ দেখা যায়। অথচ ইসলাম আমাদের শিখিয়েছে— আমরা সবাই সমান, আমরা সবাই ভাই ভাই। আমাদের প্রকৃত পরিচয় হলো আল্লাহর বান্দা হওয়া। তাই আমাদের কর্তব্য হলো তাকওয়া অর্জন করা, সৎকর্মে অটল থাকা এবং মানুষকে তার চরিত্র ও আমলের ভিত্তিতে সম্মান করা।

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha