শুক্রবার ৩ অক্টোবর ২০২৫ - ০৯:৪৪
হযরত ফাতেমা মাসুমা (সা.আ.): আব্বাসীয় দমন-পীড়নের যুগে শিয়াদের পথপ্রদর্শক

কেন্দ্রীয় প্রদেশের মহিলা হাওজায়ে ইলমিয়ার অধ্যাপিকা আ‘যাম কারিমি বলেছেন, হযরত ফাতেমা মাসুমা (সা.আ.)-এর কোমে ঐতিহাসিক হিজরত শুধুমাত্র ধর্মীয় ভ্রমণ ছিল না; বরং আব্বাসীয় শাসনের দমন-নীপিড়ন যুগে এটি ছিল একটি কৌশলগত রাজনৈতিক ও সামাজিক পদক্ষেপ।

তিনি হাওজা নিউজ এজেন্সি 'কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে হযরত ফাতেমা মাসুমা (সা.আ.)-এর ওফাত দিবসে শোক প্রকাশ করে বলেন, “যখন শিয়া সমাজ কঠোর নজরদারি ও নিপীড়নের মধ্যে ছিল এবং সামান্য বৈজ্ঞানিক বা ধর্মীয় কার্যক্রমও জীবনঘাতী ঝুঁকিতে ফেলত, তখন হযরত ফাতেমা মাসুমা (সা.আ.) সাহসের সঙ্গে কোমে হিজরত করেছিলেন।”

জনাবা কারিমি বলেন, “তাঁর আগমনের মাধ্যমে কোমে শিয়াদের জন্য একটি বৈজ্ঞানিক, ধর্মীয় ও সামাজিক কেন্দ্র গড়ে ওঠে। এটি শিয়াদের জন্য নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে কাজ করে এবং আব্বাসীয় চাপের মুখে তাদের বিলুপ্তি থেকে রক্ষা করে।”

তিনি আরও যোগ করেন, “হযরত ফাতেমা মাসুমা (সা.আ.) তাঁর জ্ঞান, তাকওয়া ও দৃঢ় ব্যক্তিত্ব দ্বারা আহলে বাইতের অনুসারীদের জন্য প্রকৃতই নিরাপদ আশ্রয়ে পরিণত হয়েছিলেন। কঠিন ঐতিহাসিক সময়ে শিয়াদের পরিচয় রক্ষা ও আহলে বাইতের শিক্ষার প্রচারে তাঁর ভূমিকা অপরিসীম।”

জনাবা কারিমি বলেন, “তাঁর কার্যকর উপস্থিতি ও আলেম ও ছাত্রদের সঙ্গে সম্পর্ক এমন এক পরিবেশ তৈরি করেছিল যেখানে শিয়ারা ভয়-ভীতি ছাড়াই ধর্ম প্রচার ও ইসলামী মূল্যবোধ রক্ষায় সক্ষম হয়েছিলেন।”

তিনি জোর দিয়ে বলেন, “হযরত ফাতেমা মাসুমা (সা.আ.) প্রমাণ করেছেন যে, শিয়াদের নেতৃত্ব ও দিকনির্দেশনা সবচেয়ে প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও নববংশের মহীয়সী নারীদের হাত ধরেই এগিয়ে যেতে পারে।”

কারিমি আরও বলেন, “আজ কোমে তাঁর পবিত্র দরগাহ শুধু আধ্যাত্মিক কেন্দ্র নয়, বরং প্রতিরোধ, নেতৃত্ব এবং শিয়া ইতিহাসে নারীর রাজনৈতিক ভূমিকার প্রতীক হিসেবেও পরিচিত।”

তিনি উপসংহারে বলেন, “হযরত ফাতেমা মাসুমা (সা.আ.) জ্ঞান, নৈতিকতা, সাহস এবং রাজনৈতিক বিচক্ষণতা-এর সমন্বয়ে মুসলিম সমাজের বিশেষত নারীদের জন্য এক অনন্য আদর্শ। তিনি আজও প্রতিরোধ, সচেতনতা এবং ধর্মীয় মূল্যবোধের প্রতি দৃঢ় অঙ্গীকারে সবার জন্য অনুপ্রেরণার উৎস।”

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha