হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, আপনার সন্তানদের প্রতিদিনের ঝগড়া কি আপনাকে উদ্বিগ্ন করে তুলছে?
আপনি কি কিশোর ভাইবোনদের অবিরাম তর্ক-বিতর্কে অসহায় বোধ করছেন?
তাহলে এই প্রশ্নটি আপনার কাছেও পরিচিত হতে পারে-“এই ঝগড়াগুলো কি স্বাভাবিক, নাকি এটি আমাদের পরিবারে কোনো গভীর সমস্যার লক্ষণ?”
এই আলোচনায়, মহোদয়া জাহরা ইব্রাহিমি, ইসলামি প্রচার অফিসের নৈতিকতা ও শিক্ষা বিষয়ে গবেষক ও বিশেষজ্ঞ, বৈজ্ঞানিক ও বাস্তব দৃষ্টিকোণ থেকে এই বিষয়টির মূল কারণ বিশ্লেষণ করেছেন।
এই সাক্ষাৎকারের উদ্দেশ্য হলো এমন ব্যবহারিক কৌশল উপস্থাপন করা, যা পরিবারে শান্তি, বোঝাপড়া ও বিকাশের পরিবেশ গড়ে তুলতে সহায়তা করবে।
এই শিক্ষামূলক আলোচনা অভিভাবকদের শিক্ষাগত জ্ঞান উন্নত করার এক সামান্য প্রচেষ্টা হিসেবেও উপস্থাপিত হচ্ছে।
সাক্ষাৎকারের মূল প্রশ্নগুলো
কৈশোরে ভাইবোনদের মধ্যে ঝগড়া ও দ্বন্দ্বের মূল কারণ কী?
কোন বয়সে এই ঝগড়াগুলো বেশি হয় এবং কখন তা কমে আসে?
আমার এই প্রত্যাশা-যে তারা একে অপরের সবচেয়ে ভালো বন্ধু হবে-এটি কি বাস্তবতার বাইরে কোনো আদর্শবাদ, যা তাদের ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে?
যখন আমি একজন অভিভাবক হিসেবে ক্ষমাশীলতা, দয়া, শ্রদ্ধা-ইত্যাদি মূল্যবোধে জোর দিই, কিন্তু সন্তানদের আচরণে তার বিপরীত দেখি, তখন আমি কীভাবে তাদের এই দ্বন্দ্বটি বুঝিয়ে দেব?
বিশেষ করে কৈশোরে ভাইবোনদের মধ্যে বিরোধ কমানোর জন্য কী কী বাস্তব পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে?
প্রাকৃতিক প্রতিযোগিতা আর ধ্বংসাত্মক ঝগড়ার সীমারেখা কোথায়? এবং কখন পরিবারের মানসিক নিরাপত্তা রক্ষার জন্য মনোবিদের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন?
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
কৈশোরে ভাইবোনদের ঝগড়ার কারণ বোঝার জন্য প্রথমেই এই বয়সের বৈশিষ্ট্যগুলো জানা প্রয়োজন। যদি আমরা কিশোরকে সঠিকভাবে বুঝতে পারি, তাহলে তাদের মধ্যে বিরোধ ও সংঘাতের মূল কারণও অনুধাবন করা সহজ হবে।
উদাহরণস্বরূপ, কৈশোরের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা। যখনই কোনো কিশোর অনুভব করে যে তার স্বাধীনতা হুমকির মুখে, তখনই তা ঝগড়া বা বিরোধের রূপ নিতে পারে।
এছাড়াও, এই সময়ে অতিরিক্ত আবেগপ্রবণ প্রতিক্রিয়া খুবই সাধারণ একটি বিষয়। অর্থাৎ, সামান্য উসকানিতেই কিশোররা তীব্র আবেগিক প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারে।
এই প্রতিক্রিয়াগুলো স্বাভাবিক এবং এই বয়সের স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য। কিন্তু কখনও কখনও এগুলোই পারস্পরিক সংঘাত সৃষ্টি করে। এমনও হতে পারে-ভাই বা বোন প্রকৃতপক্ষে কোনো ভুল করেনি, কিন্তু অন্যজনের অতিসংবেদনশীল প্রতিক্রিয়ার কারণে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
কিছু কারণ আবার পরিবারের আচরণ ও অভ্যাস থেকে আসে। যেমন-শৈশব থেকেই পরিবারের সদস্যরা শিশুর ওপর নির্দিষ্ট কিছু “ট্যাগ” বা “লেবেল” (নৈতিক বা আচরণগত) আরোপ করে রাখে।
যখন সেই শিশু বড় হয়ে কিশোরে পরিণত হয়, তখন সে এই আরোপিত পরিচয় বা ধারণা ভাঙতে চায়-এবং সেই প্রক্রিয়াতেই বিতর্ক বা ঝগড়া সৃষ্টি হতে পারে।
অনেক সময় দেখা যায়, পরিবারের আলাপচারিতায় সেই পুরনো লেবেল বা মন্তব্য ভাইবোনদের কেউ উল্লেখ করলে কিশোরটি অপমান বা অবিচারবোধে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখায়, যা তাদের স্বাভাবিক আবেগিক সংবেদনশীলতার কারণেই হয়।
আপনার কমেন্ট