মঙ্গলবার ১৪ অক্টোবর ২০২৫ - ১৯:২৬
ভালোবাসাময় ইবাদত

ভালোবাসাময় ইবাদত মানুষের আত্মাকে পবিত্র করে, মনকে প্রশান্ত করে এবং জীবনকে আলোকিত করে।

হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, ইবাদত-এটি শুধু একটি ধর্মীয় অনুশাসন নয়; বরং এটি মানুষের আত্মা ও হৃদয়ের গভীর সংযোগের নাম। যে ইবাদত ভালোবাসা থেকে উৎসারিত হয়, সেটিই প্রকৃত ইবাদত। কারণ, ভালোবাসাহীন ইবাদত কেবল শরীরের পরিশ্রম, অথচ ভালোবাসাময় ইবাদত আত্মার পরিতৃপ্তি।

মরহুম কুলাইনি (রহ.) তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ আল-কাফি-এর দ্বিতীয় খণ্ডের ৮৩ পৃষ্ঠায় একটি গভীর তাৎপর্যপূর্ণ বর্ণনা উল্লেখ করেছেন। সেখানে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন—
“সর্বাধিক মর্যাদাবান মানুষ সেই ব্যক্তি, যে ইবাদতকে ভালোবাসে।”
তিনি আরও বলেন, সে ইবাদতের সাথে এমনভাবে যুক্ত হয়, যেন গলায় গলা জড়িয়ে নিয়েছে; ইবাদতের মাধ্যমে পরিশ্রম করে; হৃদয় দিয়ে ইবাদতকে ভালোবাসে—একে কোনো অভ্যাস বা রুটিন হিসেবে নয়, বরং আন্তরিক ভালোবাসা থেকে করে; এবং তার দেহ দ্বারা—দাঁড়িয়ে, বসে, রুকু ও সেজদার মাধ্যমে—ইবাদতের সাথে সম্পূর্ণভাবে যুক্ত হয়, যেন সে ইবাদতের সাথে মিশে গেছে।

এই বাণীতে নবী করিম (সা.) আমাদের শেখাচ্ছেন যে, ইবাদত কেবল বাহ্যিক আনুষ্ঠানিকতা নয়, এটি এক ধরনের ভালোবাসার যাত্রা। যখন মানুষ ভালোবাসার মাধ্যমে ইবাদত করে, তখন তার প্রতিটি দোয়া, প্রতিটি সেজদা, প্রতিটি নিশ্বাস আল্লাহর স্মরণে মিশে যায়। সে তখন ইবাদতকে বোঝা নয়, বরং আনন্দ মনে করে; ইবাদত তার কাছে দায় নয়, বরং প্রিয়তমের সাথে সাক্ষাতের মুহূর্ত।

ভালোবাসাময় ইবাদত মানুষের আত্মাকে পবিত্র করে, মনকে প্রশান্ত করে এবং জীবনকে আলোকিত করে। এমন ইবাদতে কোনো জবরদস্তি নেই, নেই ভয় বা বাধ্যবাধকতার অনুভূতি—আছে শুধু ভালোবাসা, কৃতজ্ঞতা ও আত্মসমর্পণ।

অতএব, আমাদের ইবাদত যেন কেবল রুটিনের অংশ না হয়, বরং হৃদয়ের গভীর ভালোবাসার প্রকাশ হয়। কারণ, যখন ইবাদত ভালোবাসায় ভরে ওঠে, তখন সেটিই হয় মানুষের জীবনের শ্রেষ্ঠ আনন্দ ও আত্মার আসল প্রশান্তি।

রিপোর্ট: হাসান রেজা 

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha