হাওজা নিউজ এজেন্সি: আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী এও উল্লেখ করেছেন যে জাতিগুলি নিষ্ঠুর সায়োনিস্ট শাসনের অপরাধের প্রতি সাধারণ ঘৃণা পোষণ করে এবং ইরানের মহান জাতির বিরুদ্ধে হুমকির ভাষাকে অকার্যকর এবং পরাজিত ভাষা হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
তিনি যোগ করেছেন, প্রতিরোধের ফ্রন্টের জাতি ও কেন্দ্র, যার মধ্যে ফিলিস্তিন, লেবানন ও ইয়েমেনের জনগণ অন্তর্নিহিত ও বিশ্বাসের অনুপ্রেরণা নিয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত ও দুশ্চরিত্র সায়োনিস্ট শাসনের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে।
বিপ্লবের নেতা তার বক্তব্যের শুরুতে শত্রুদের জনগণকে আধ্যাত্মিকতা থেকে দূরে রাখার ব্যর্থতার কথা উল্লেখ করে এই সময়কে আমিরুল মুমিনিনের, অর্থাৎ ন্যায়বিচার, তাকওয়া ও ক্ষমার উচ্চ শিখরের, বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি যোগ করেছেন, ইরানের জনগণ ও মুসলিম জাতিগুলি নবী (সা.) এর পরে সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ হিসেবে হযরত আলী (আ.) এর শিক্ষা গ্রহণের জন্য নাহাজুল বালাগা পড়ুন এবং সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রের কর্মীরা এই মহান বইটি অধ্যয়ন ও শিক্ষাদানে বিশেষ মনোযোগ দিন।
তিনি লাইলাতুল কদরকে প্রার্থনা ও আল্লাহর কাছে ফরিয়াদের একটি মূল্যবান সুযোগ হিসেবে বর্ণনা করেছেন এবং যোগ করেছেন, এই রাতের প্রতিটি ঘণ্টা একটি জীবনের মূল্যবান এবং ইমামগণের প্রতি মনোযোগ ও আশ্রয় এবং বিশেষত যুবকদের প্রার্থনা তাদের ভাগ্য এবং একটি জাতির জীবনের ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারে।
বিপ্লবের নেতা কুরআনের আয়াতের উপর ভিত্তি করে প্রার্থনার গ্রহণযোগ্যতা এবং এর প্রভাবকে পার্থিব ও পরকালীন জীবনে নিশ্চিত বলে বর্ণনা করেছেন এবং যোগ করেছেন, অবশ্যই যদি আমরা নিজেরা প্রার্থনার গ্রহণযোগ্যতার পথে বাধা সৃষ্টি না করি।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আরো বলেন, আমেরিকার জানা উচিত ইরানকে হুমকি দিয়ে তারা কখনোই কিছু অর্জন করতে পারবে না।
আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী বলেন, মার্কিন এবং ইউরোপীয় রাজনীতিবিদরা যে বড় ভুলটি করছেন তা হচ্ছে তারা এই অঞ্চলের প্রতিরোধের কেন্দ্রগুলোকে ইরানের প্রক্সি বাহিনী বলে অভিহিত করছেন। এর মাধ্যমে তাদের অপমান করা হচ্ছে। ইয়েমেনি জাতির উৎসাহ-উদ্দীপনা ও প্রেরণা রয়েছে এবং এই অঞ্চলের দেশগুলোর প্রতিরোধ কেন্দ্রগুলোর উদ্দীপনা ও প্রেরণা রয়েছে।
ফিলিস্তিনের বিষয়ে ইয়েমেনের অতীত ও বর্তমান অবস্থান প্রসঙ্গে বলেন, ফিলিস্তিনে দখলদারি প্রতিষ্ঠার শুরুতেই তা মোকাবিলায় যেসব দেশ অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিল তার মধ্যে একটি হলো ইয়েমেন।ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে ইহুদিবাদী ইসরাইল যে জুলুম করছে ইয়েমেনিরা সেটার বিরোধী। ইয়েমেনি জাতির উৎসাহ-উদ্দীপনা ও প্রেরণা রয়েছে। তাদের বিষয়ে যে বড় ভুলটি করা হচ্ছে তা হলো- (পশ্চিমারা) মনে করছে ইয়েমেনিরা ইরানের পক্ষে প্রক্সি লড়াই করছে। কিন্তু না।
ইসরায়েলি নৃশংসতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বর্তমানে নিষ্ঠুর ইহুদিবাদী ইসরায়েলের নৃশংস ও ঘৃণ্য তৎপরতা অনেক অমুসলিম জাতির হৃদয়কেও বেদনার্ত করে তুলেছে। দখলদার ইসরায়েলের জন্য নিষ্ঠুর শব্দটি পর্যাপ্ত নয়। আমেরিকা বলছে, যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ করতে এসেছিল সেগুলোর বাজেট কমিয়ে দেওয়া হবে। এটাই হলো তারে তথ্যের অবাধ প্রবাহ, লিবারেলিজম, স্বাধীনতা এবং মানবাধিকার!
ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী আরো বলেন, বর্তমানে বিশ্বব্যাপী জাতিগুলো অবশ্যই ইহুদিবাদী ইসরায়েলের শয়তানি ও ঘৃণ্য তৎপরতার বিরোধী। তারা যেকোনো উপায়ে এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ করছে। ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান এই আগ্রাসনের বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছে। ইরানের অবস্থান স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, মাতৃভূমি রক্ষায় তৎপর ফিলিস্তিনি এবং লেবাননি সংগ্রামীদেরকে আমরা সমর্থন করি। এটাই ছিল আমাদের সব সময়ের নীতি ও পদ্ধতি এবং এখনও তা অব্যাহত রয়েছে।
তিনি জাতিগুলির সায়োনিস্ট শাসনের দুষ্টতার বিরুদ্ধে বিরোধিতা এবং যে কোন উপায়ে তার বিরুদ্ধে প্রতিরোধের উপর জোর দিয়ে বলেছেন, ইসলামিক প্রজাতন্ত্র ইরানও এই দুষ্টতার বিরুদ্ধে দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়েছে এবং তার অবস্থান ও পদ্ধতিগুলি স্পষ্টভাবে ঘোষণা করেছে যে তারা ফিলিস্তিনি ও লেবানীয় মুজাহিদদের তাদের দেশ রক্ষায় সমর্থন করে।
ইসলামিক বিপ্লবের নেতা আবারও ইরানের বিরুদ্ধে অশুভ পরিকল্পনাকারীদের হুমকির জবাবে জোর দিয়ে বলেছেন, আমরা কখনও কারো বিরুদ্ধে সংঘর্ষ ও সংঘাত শুরু করিনি কিন্তু যদি কেউ দুষ্টতার সাথে সংঘাত শুরু করে তবে সে জেনে রাখুক যে, সে কঠোর চপেটাঘাত খাবে।
আপনার কমেন্ট