শুক্রবার ২১ মার্চ ২০২৫ - ২০:১৩
লাইলাতুল ক্বদর মানুষের আধ্যাত্মিক পরিবর্তনের জন্য সুবর্ণ সুযোগ

হুজ্জাতুল ইসলাম কামরান বলেছেন, লাইলাতুল ক্বদর আল্লাহর সাথে পুনরায় অঙ্গীকারাবদ্ধ হওয়া এবং অতীতের জন্য ক্ষমা প্রার্থনার জন্য একটি অনন্য ও সুবর্ণ সুযোগ।

হুজ্জাতুল ইসলাম হুসাইন কামরান ইসফাহানের হাওজা নিউজ এজেন্সি’র সংবাদদাতার সাথে আলোচনায় লাইলাতুল ক্বদরের গুরুত্বের কথা উল্লেখ করে এই রাতকে জ্ঞানের গভীরতা এবং আল্লাহর অনুগ্রহ লাভের জন্য একটি মূল্যবান সুযোগ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি তার বক্তব্যে এ বিষয়ে উল্লেখ করে বলেছেন, লাইলাতুল ক্বদরের গুরুত্ব এবং বৈশিষ্ট্যগুলি সত্যিকার অর্থে বোঝা মুমিনদের দোয়া এবং ইবাদতের গুণমানের উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলে। ইমাম আলী (আ.)-এর বাণী অনুসারে, “এই জ্ঞানই আধ্যাত্মিক পথকে আরও উজ্জ্বল করতে পারে এবং হৃদয়কে স্রষ্টার সাথে সংযুক্ত করতে পারে।”

হুজ্জাতুল ইসলাম কামরান কুরআন নাজিলের কথা উল্লেখ করে বলেছেন, এই রাতটি এমন একটি মহিমান্বিত রাত যেখানে পবিত্র কুরআন, আল্লাহর সর্বশ্রেষ্ঠ গ্রন্থ, নবী করিম (সা.)-এর পবিত্র হৃদয়ে নাজিল হয়েছিল। এমন ঘটনা এই রাতের সীমাহীন সম্ভাবনার ইঙ্গিত দেয়। এই রাতে শান্তি ও নিরাপত্তার পরিবেশ বিরাজ করে এবং ফেরেশতারা ও রূহ আল্লাহর অনুমতিতে ইমাম মাহদী (আ.)-এর হৃদয়ে নাজিল হয়। এই বৈশিষ্ট্যগুলি লাইলাতুল ক্বদরকে হাজার মাসের চেয়ে উত্তম রাতে পরিণত করেছে।

তিনি লাইলাতুল ক্বদরের রাতে সূরা কদর তিলাওয়াতের গুরুত্ব ও ভূমিকা সম্পর্কে বলেছেন, এই মহিমান্বিত সূরাটি এক হাজার বার তিলাওয়াতের পরামর্শ দেওয়া হয়, যা হৃদয়ে গভীর জ্ঞানের অনুপ্রবেশের পাশাপাশি মুমিনদের হৃদয়কে ইমাম মাহদী (আ.)-এর সাথে সংযুক্ত করে। “তানাজ্জালুল মালাইকাতু ওয়ার্ রূহু ফিহা”এই বাক্যটি মুমিনদের দৃষ্টি আল্লাহর হুজ্জাতের রহস্যের দিকে আকর্ষণ করে। প্রতি বছর ফেরেশতাদের অবতরণ শুধুমাত্র আল্লাহর হুজ্জাতের হৃদয়েই সম্ভব এবং এটি লাইলাতুল ক্বদরে ইমাম মাহদী (আ.)-এর সাথে সংযোগের গুরুত্বকে দ্বিগুণ করে তোলে।

এই ধর্মীয় বিশেষজ্ঞ মুমিনদের এই রাত থেকে আধ্যাত্মিক উপকার লাভের আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, লাইলাতুল ক্বদর আল্লাহর সাথে পুনরায় অঙ্গীকারাবদ্ধ হওয়া এবং অতীতের জন্য ক্ষমা প্রার্থনার জন্য একটি অনন্য সুযোগ। মুমিনদের উচিত খাঁটি নিয়ত এবং জ্ঞানে পরিপূর্ণ হৃদয় নিয়ে এই রাতটি দোয়া, তাওয়াসসুল এবং ফরিয়াদে কাটানো এবং কুরআন ও আহলে বাইত (আ.)-কে আল্লাহর রহমতের মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করা।

লাইলাতুল ক্বদর শুধুমাত্র ইবাদতের রাত নয়, বরং এটি আধ্যাত্মিক পরিবর্তন, দৃঢ় সংকল্প এবং হৃদয়কে আল্লাহ ও তাঁর হুজ্জাতের সাথে সংযুক্ত করার সূচনা।

হুজ্জাতুল ইসলাম কামরান উল্লেখ করেছেন, লাইলাতুল ক্বদর আল্লাহর অনুগ্রহ লাভ, ঈমান বৃদ্ধি এবং কুরআন ও আহলে বাইত (আ.)-এর সাথে সংযোগ স্থাপনের জন্য একটি ব্যতিক্রমী রাত।

তিনি মুমিনদের এই পবিত্র রাতের গুরুত্ব উপলব্ধি করে ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনকে পুনর্গঠন এবং উন্নত করার জন্য এর সুযোগগুলি কাজে লাগানোর আহ্বান জানিয়েছেন।

Tags

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha