হাওজা নিউজ এজেন্সি: গত ২৮ রমজান (২৯ মার্চ ২০২৫) সন্ধ্যায় রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার বজরুক গ্রামে অবস্থিত শিয়া ইমামবাড়িতে এক নৃশংস হামলা সংঘটিত হয়। স্থানীয় শিয়া সম্প্রদায়ের প্রায় ১৫টি পরিবারের উদ্যোগে ইফতার মাহফিল ও তাবলীগী কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছিল। হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলিমিন মাওলানা জনাব ড. আব্দুল হান্নান, হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলিমিন জনাব আলী রেজা নাজাফিসহ ১৪ মাসুমীন (আ.)-এর অনুসারীরা এতে অংশগ্রহণ করেন। ইফতার ও নামাজের প্রস্তুতির সময় পাশের গ্রামের ৮০–১০০ জন উগ্র তাকফিরি আহলে হাদিস ও সালাফি মতাদর্শের অনুসারী গোষ্ঠী ইমামবাড়িতে অতর্কিত হামলা চালায়। তারা ইমামবাড়ির সম্পত্তি লুণ্ঠন ও ধ্বংস করে, পবিত্র কুরআন শরীফের অবমাননা করে এবং উপস্থিতদের জীবননাশের হুমকি দেয়। আক্রান্তরা প্রাণ বাঁচাতে স্থানীয় মুবাল্লিগ ক্বারী সাদিকুল ইসলামের বাড়িতে আশ্রয় নেন। এ সময় গ্রামের মহিলারা সাহসী ভূমিকা রাখেন ও হামলাকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন।
আইনগত পদক্ষেপ: স্থানীয় মুবাল্লিগ ক্বারী সাদিকুল ইসলাম (মোবাইল: +৮৮০১৭৪০-৫৫৫৩৭৫) বদরগঞ্জ থানায় একটি ডায়েরি (প্রাথমিক অভিযোগ) নম্বর ০১/২৪ দায়ের করেছেন। তবে এখনো কোনো অভিযুক্তকে গ্রেফতার বা তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে জানা যায়নি।
আক্রান্তদের আহ্বান ও দাবিসমূহ:
১. তদন্ত ও বিচার: ঘটনায় জড়িত সকল হামলাকারীর দ্রুত গ্রেফতার, স্বচ্ছ তদন্ত ও কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা।
২. নিরাপত্তা: শিয়া সম্প্রদায়ের ধর্মীয় স্বাধীনতা ও নিরাপত্তা রক্ষায় প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ।
৩. সচেতনতা: ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখতে স্থানীয় পর্যায়ে সামাজিক সংলাপ ও সচেতনতামূলক কর্মশালা আয়োজন, বিশেষত আহলে হাদিস ও সালাফি মতাদর্শের সাথে সম্পৃক্ত গোষ্ঠীর মধ্যে সহিষ্ণুতা বৃদ্ধিতে উদ্যোগ নেওয়া।
৪. ক্ষতিপূরণ: ইমামবাড়ির ক্ষয়ক্ষতি মূল্যায়ন করে ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সহায়তা প্রদান।
জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি অনুরোধ:
বাংলাদেশের সংবিধান ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনে ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকার সুরক্ষিত। এই ঘটনায় সরকারি প্রশাসন, মানবাধিকার সংগঠন ও ধর্মীয় নেতৃবৃন্দের তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ প্রয়োজন। আহলে বায়েত (আ.)-এর অনুসারীসহ সকল প্রগতিশীল শক্তিকে এই হামলার প্রতিবাদে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।
আপনার কমেন্ট