হাওজা নিউজ এজেন্সি: আসাদুল্লাহ বাহতু অভিযোগ করেন, ইসরাইল ইচ্ছাকৃতভাবে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে “ক্ষুধাকে অস্ত্র” হিসেবে ব্যবহার করছে। তাঁর ভাষায়, “পশ্চিমা বিশ্বে কুকুর-বিড়ালের অধিকার নিয়ে উচ্চকিত আলোচনা হয়, অথচ ফিলিস্তিনিদের প্রকাশ্য গণহত্যার মুখে আমেরিকা ও ইউরোপের মতো মানবাধিকার দাবিদার শক্তিগুলো লজ্জাজনকভাবে নীরব।”
তিনি বলেন, ফিলিস্তিন হলো নবী-রাসূলদের ভূমি। এই ভূমি দখল করে ইসরাইল বড় করার বিভ্রান্তিকর স্বপ্ন কোনোদিনই বাস্তবায়িত হবে না। তিনি আরও যোগ করেন, তথাকথিত “আব্রাহাম চুক্তি” আসলে মুসলমানদের সঙ্গে এক প্রতারণা ও ষড়যন্ত্র, যার বিষয়ে পুরো উম্মাহকে সচেতন থাকতে হবে।
ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলনের প্রশংসা করে আসাদুল্লাহ বাহতু বলেন, প্রতিরোধ নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ার ও ইসমাইল হানিয়ার আত্মত্যাগ এবং হাজারো শিশু, নারী ও পুরুষের শাহাদাত গাজার মাটিতে নতুন প্রজন্মের মাঝে জিহাদ ও প্রতিরোধের চেতনা ছড়িয়ে দিয়েছে। আজ সেই আলো সারা বিশ্বের মুক্তিকামী মানুষের হৃদয়ে ঝলমল করছে।
তিনি তথ্য দিয়ে জানান, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরাইলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে গাজার জনগণ টানা ২২ মাস ধরে প্রতিরোধ চালিয়ে যাচ্ছে। এতে এখন পর্যন্ত ৬২ হাজার ৮৯৫ জন ফিলিস্তিনি শহীদ এবং প্রায় ১ লাখ ৫৮ হাজার ৮৯৫ জন আহত হয়েছেন। বিপুল ধ্বংসযজ্ঞের পরও গাজার জনগণের অটল অবস্থান দখলদার ইসরাইলের অহংকারকে চূর্ণ করেছে। তাঁর মতে, এ প্রতিরোধের দৃশ্য নবী করিম (সা.)-এর সাহাবাদের বদরের বীরত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।
মানবিক পরিস্থিতির বর্ণনায় তিনি বলেন, ইসরাইল মানবিক সাহায্য পৌঁছাতে নানা বাধা সৃষ্টি করছে। জাতিসংঘ ইতোমধ্যেই গাজাকে আনুষ্ঠানিকভাবে দুর্ভিক্ষগ্রস্ত অঞ্চল ঘোষণা করেছে। বর্তমানে অর্ধ মিলিয়নেরও বেশি ফিলিস্তিনি ক্ষুধা ও তীব্র খাদ্য সংকটে দিন কাটাচ্ছেন। দখলদার বাহিনী ইচ্ছাকৃতভাবে মাংস, মাছ, দুগ্ধজাত খাবার, সবজি ও ফলমূলসহ মৌলিক খাদ্য প্রবেশ বন্ধ করে রেখেছে।
আসাদুল্লাহ বাহতু আরও বলেন, বিশ্বজুড়ে প্রতিবাদ, বিক্ষোভ ও আন্তর্জাতিক আদালতে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ সত্ত্বেও ইসরাইল তার আগ্রাসী নীতি চালিয়ে যাচ্ছে এবং গাজার পূর্ণ দখল কায়েম ও “গ্রেটার ইসরাইল” প্রকল্প বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে। এই পদক্ষেপ শুধু মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তাই নয়, বৈশ্বিক শান্তি ও স্থিতিশীলতাকেও ভয়াবহ হুমকির মুখে ফেলছে।
শেষে তিনি বিশ্ব সম্প্রদায়কে বিশেষ করে মুসলিম দেশগুলোকে আহ্বান জানান, নিন্দা বিবৃতিতে সীমাবদ্ধ না থেকে বাস্তবসম্মত ও কার্যকর কৌশল গ্রহণ করতে হবে, যাতে মজলুম ফিলিস্তিনি জাতিকে রক্ষা করা যায় এবং বায়তুল মুকাদ্দাস মুক্তির পথ সুগম হয়।
আপনার কমেন্ট