হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, মানুষের মহত্ত্ব কেবল কথায় নয়, তার কর্মে প্রকাশ পায়। উদারতা এমনই এক গুণ, যা হৃদয়কে করে বিশুদ্ধ, আর সমাজকে করে সুন্দর। কিন্তু সকল দানই কি সত্যিকারের উদারতা? বক্তার ভাষায়, “সবচেয়ে উদার মানুষ তিনি, যিনি এমন কাউকে দান করেন যার কাছ থেকে তিনি কোনো প্রত্যাশা করেন না।”
এই এক কথাতেই লুকিয়ে আছে মানবতার আসল শিক্ষা।
সাধারণত আমরা দান বা সহানুভূতি দেখাই, কিন্তু অজান্তেই মনে করি—এর বদলে কিছু না কিছু পাব। কেউ প্রতিদান দেবে, কেউ প্রশংসা করবে, কেউ অন্তত কৃতজ্ঞতার কথা বলবে। অথচ প্রকৃত উদারতা হলো—যখন কেউ দেয়, কিন্তু ফিরতি কিছু আশা করে না।
এই দানই হৃদয়ের দান; এটি আত্মার উদারতা।
বক্তা উদাহরণ দিয়ে বলেন—আমি যদি কাউকে সালাম করি, মনে মনে আশা করি সে পরেরবার আগে সালাম করবে। যদি কারও পাশে দাঁড়াই, আশা করি সে-ও একদিন আমার পাশে দাঁড়াবে। এমনকি আমি যদি কারও আর্থিক সাহায্য করি, তখনও অজান্তেই মনে আশা জাগে—সে অন্তত একদিন “ধন্যবাদ” বলবে। কিন্তু সত্যিকারের উদারতা এই প্রত্যাশা থেকে মুক্ত।
আবার এমনও হয়—আমি যদি নবীর বংশধর হিসেবে, বা একজন সৎ মানুষ হিসেবে আন্তরিকতার সাথে কাউকে সাহায্য করি, কিন্তু এর বিনিময়ে কিছুই না চাই, তখনই তা পরিণত হয় খাঁটি দানে। এই মুহূর্তেই উদারতার প্রকৃত সৌন্দর্য প্রকাশ পায়।
প্রত্যাশাহীন দানই আসলে মানুষকে উন্নত করে। কারণ তখন দান আর অহংকারের প্রকাশ থাকে না; থাকে কেবল মানবতার গভীর অনুভব। যে দান নিজের আত্মতুষ্টির জন্য নয়, অন্যের মঙ্গলার্থে করা হয়—সেই দানই সর্বোচ্চ।
অতএব বলা যায়, সত্যিকারের উদারতা কোনো বস্তুগত ব্যাপার নয়; এটি এক আত্মিক পরিশুদ্ধতা। প্রত্যাশাহীন দানই মানুষকে করে মহান, আর সমাজকে করে আলোকিত।
এই প্রত্যাশাহীন মুহূর্ত—এই নিঃস্বার্থ ভালোবাসাই আসল পরীক্ষা, আর সেখানেই লুকিয়ে আছে মানবতার প্রকৃত মহত্ত্ব।
রিপোর্ট: হাসান রেজা
আপনার কমেন্ট