সোমবার ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫ - ০৯:০০
শিশুর চরিত্র ও নৈতিক গঠনে তার নামকরণের প্রভাব

নাম কেবল একটি শব্দ নয়; বরং তা সংস্কৃতি, পরিচয় ও বিশ্বাস বহনকারী একটি পাত্র। ইসলামি নামগুলো একা একা ঈমানের প্রমাণ না হলেও, সেগুলোকে ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক প্রতীক (চেতনা) হিসেবে সংরক্ষণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ চেতনা ও প্রতীক হারিয়ে গেলে ধীরে ধীরে মূল পরিচয় ও মূল্যবোধও বিলুপ্ত হয়ে যায়।

হাওজা নিউজ এজেন্সি: পাশ্চাত্য প্রভাবের কারণে আমাদের সমাজে নামকরণের ক্ষেত্রে একটি ভুল মানসিকতা গড়ে উঠেছে। অনেকেই মনে করেন ইসলামি নামগুলো পুরোনো বা আধুনিকতার সঙ্গে বেমানান, এবং এগুলো সন্তানের ব্যক্তিত্বে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। তাই তারা ইমাম হাসান ও ইমাম হুসাইন (আ.)-এর প্রতি বিশ্বাস থাকা সত্ত্বেও সন্তানদের ইসলামি নাম দিতে অনীহা প্রকাশ করেন।

এভাবে মনে করা হয় যে মুসলমান হওয়া নামের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়; ফলে ইসলামি নাম পরিহার করে প্রাচীন অমুসলিম সভ্যতার নাম গ্রহণ করলেও কোনো ক্ষতি নেই। অথচ বাস্তবতা হলো— যখন আমরা আমাদের ধর্মীয় প্রতীকগুলো ধীরে ধীরে হারাতে থাকি, তখন এর অনিবার্য প্রভাব পড়ে বিশ্বাস, চেতনা ও পরিচয়ের ওপর।

নিশ্চয়ই ইসলামের মূল বাস্তবতা কেবল নামের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। কারো নাম হাসান বা কামরান হওয়াই তার ঈমানের মানদণ্ড নয়। ইতিহাসে এমন বহু মানুষ রয়েছে, যাদের ইসলামি নাম থাকা সত্ত্বেও তারা ইসলামের ক্ষতি করেছে। অতএব, নামের মাধ্যমেই কেউ মুসলমান হয় বা ইসলাম ত্যাগ করে— এ কথা বলা সঠিক নয়।

তবে নামকে একটি পরিচয়বাহী মাধ্যম হিসেবে সংরক্ষণ করা অপরিহার্য, যাতে এর মাধ্যমে ধর্মীয় বিশ্বাস, সাংস্কৃতিক চেতনা ও আত্মিক পরিচয় ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে অক্ষুণ্ণভাবে পৌঁছে দেওয়া যায়।

সূত্র: শহীদ মুর্তজা মোতাহহারী (রহ.), মাজমু‘য়ে আসার, “ইসলামি প্রতীকসমূহের সম্মান রক্ষার প্রয়োজনীয়তা” (পনেরোটি ভাষণ), খণ্ড ২৫, পৃষ্ঠা ৩৬৭

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha