হাওজা নিউজ এজেন্সি: নামাজে প্রতিদিন আল্লাহকে স্মরণ করা (যা এক মহান জিকির)— মানুষের ব্যক্তিগত চরিত্র ও আধ্যাত্মিক সত্তায় গভীর ও স্থায়ী প্রভাব ফেলে। এই নিয়মিত স্মরণ মানুষের অন্তরে আল্লাহভীতি, আত্মসংযম ও দায়িত্ববোধ জাগ্রত করে।
নামাজের একটি বিশেষ গুণ হলো—এটি মানুষকে ফাহাশা ও মন্দ কাজ থেকে সংরক্ষণ করে। এমনকি কোনো ব্যক্তির নামাজ যদি সব শর্ত ও আদবের দিক থেকে সম্পূর্ণ সঠিক না-ও হয়, তবুও নামাজ আদায়কারী ব্যক্তি অন্তত নাপাক অবস্থা থেকে দূরে থাকে, গাসবি (অন্যায়ভাবে দখলকৃত) পোশাক পরিহার করে এবং নামাজে নিষিদ্ধ বিষয়গুলো থেকে নিজেকে বিরত রাখে।
এই প্রভাব নামাজের বাইরের জীবনেও প্রতিফলিত হয়। ফলে নামাজ আদায়কারীদের আচরণ ও জীবনযাপন তাদের থেকে আলাদা হয়ে যায়, যারা নামাজ পড়ে না এবং জীবনের নানা ক্ষেত্রে কোনো সংযম বা নৈতিক বিধিনিষেধ মানে না।
একজন নামাজি ব্যক্তি যদি নামাজে পূর্ণ মনোযোগ বা গভীর খুশু‘ অর্জন করতে না-ও পারে, তবুও সে দিনে অন্তত পাঁচবার আল্লাহর প্রতি মনোযোগী হয়। এর অর্থ হলো— এক বছরে সে ১,৮২৫ বার আল্লাহকে স্মরণ করে।
এখন যদি কোনো ব্যক্তি ষাট বছর জীবন লাভ করে, তবে সে জীবদ্দশায় কত হাজার বার আল্লাহর দিকে মনোযোগ দিয়েছে—তা সহজেই অনুমান করা যায়। এই ধারাবাহিক স্মরণ মানুষের অন্তরে ঈমানকে জীবিত রাখে এবং তাকে গুনাহ থেকে দূরে থাকার শক্তি জোগায়।
এটিও নামাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ আধ্যাত্মিক উপকারিতা। প্রকৃতপক্ষে নামাজ নিজেই একটি মহান জিকির (ও ইবাদত)। যেমন আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেন—
“وَلَذِكْرُ اللَّهِ أَكْبَرُ”
“নিশ্চয়ই আল্লাহর স্মরণই সর্বশ্রেষ্ঠ (ইবাদত)।” [সূরা আল-আনকাবূত, আয়াত ৪৫]
অতএব, নামাজ কেবল একটি আনুষ্ঠানিক ইবাদত নয়; বরং এটি মানুষের চরিত্র সংশোধন, আত্মশুদ্ধি ও আল্লাহর সঙ্গে স্থায়ী সম্পর্ক গড়ে তোলার এক অপরিহার্য মাধ্যম।
সূত্র: সামারাতে হায়াত (ثمرات حیات), খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ১৩১
আপনার কমেন্ট