সোমবার ২২ ডিসেম্বর ২০২৫ - ১৯:৩৩
উসমান গায়রতসম্পন্ন ছিলেন, না গায়রতহীন?

উসমানের স্ত্রীর ওপর আঘাত করা হয়, অসম্মানজনক আচরণ করা হয়, এমনকি এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় যেখানে তৃতীয় খলিফা উসমান জানতেন যে তাঁর স্ত্রীর পর্দা ভঙ্গ হতে পারে এবং নামাহরামদের সামনে অশোভন অবস্থা প্রকাশ পেতে পারে।

হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, বলা হয়, উসমানের স্ত্রীর ওপর আঘাত করা হয়, অসম্মানজনক আচরণ করা হয়, এমনকি এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় যেখানে তৃতীয় খলিফা উসমান জানতেন যে তাঁর স্ত্রীর পর্দা ভঙ্গ হতে পারে এবং নামাহরামদের সামনে অশোভন অবস্থা প্রকাশ পেতে পারে। এসব বিষয় সম্পর্কে তিনি অবগত ছিলেন। এটি আপনাদের আকিদা এবং আপনাদের আলেমদের বর্ণিত সহিহ রেওয়ায়েত অনুযায়ীই বলা হয়।
এখন আমার প্রশ্নের উত্তর দিন।
হে আমার আহলে সুন্নাত ভাই ও বোনেরা, আপনি যদি নিশ্চিন্তে ঘুমাতে চান, তাহলে এই ক্লিপটি দেখবেন না, শুনবেন না-চোখ বন্ধ রাখুন, কান বন্ধ রাখুন, একেবারেই চালু করবেন না। কিন্তু আপনি যদি সত্য ও হক্বের অনুসন্ধানকারী হন, তাহলে অবশ্যই এই বক্তব্যটি মনোযোগ দিয়ে শুনুন।
আপনারা কেন দাবি করেন যে হযরত ফাতিমা (সা.)-এর ঘরে হামলার ঘটনায় যেহেতু আমীরুল মু’মিনীন (আ.) যুদ্ধ করেননি, তাই (নাউজুবিল্লাহ) তাঁকে ‘অভিমানহীন’ বা ‘গায়রতহীন’ বলা যায়?
আমি আপনাদের একটি প্রশ্ন করি-আপনাদের তৃতীয় খলিফা উসমানকে আপনারা গায়রতসম্পন্ন মনে করেন, না গায়রতহীন?
এই প্রশ্ন আমি এজন্য করছি যে, তৃতীয় খলিফার গৃহ অবরোধের ঘটনায়-যখন তাঁর বাড়ি ঘিরে ফেলা হয়েছিল, পানি ও খাবার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল, তাঁর বাড়িতে আক্রমণ করার সময়, তাঁর স্ত্রীর ওপর হাত তোলা হয়েছিল এবং তাঁর প্রতি অবমাননাকর আচরণ করা হয়েছিল-এই সব ঘটনাই আপনারা নিজেরাই তৃতীয় খলিফার মৃত্যুর ইতিহাস হিসেবে বর্ণনা করেন।
একটি বিষয় আপনাদের কিতাবে বর্ণনা হয়েছে, এখন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে মনোযোগ দিন-যদি সত্যিই আপনারা হক ও সত্যের অনুসন্ধানী হন। ঘটনাটি হলো, যখন আক্রমণকারীরা উসমানের ঘরে প্রবেশ করে এবং এতসব ঘটনার পর, তখন একটি বিস্ময়কর ঘটনা ঘটে। উসমানের স্ত্রী তাঁকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসেন এবং নিজের কাপড় দিয়ে উসমানকে আড়াল করার চেষ্টা করেন, যেন তাঁকে আক্রমণকারীদের হাত থেকে রক্ষা করা যায়। কারণ বলা হয়, উসমান শারীরিকভাবে ভারী ছিলেন এবং তাঁর স্ত্রী তুলনামূলকভাবে শক্তসমর্থ ছিলেন। এরপর আক্রমণকারীরা-যারা আপনাদের বর্ণনায় সাহাবি ছিলেন-তাঁর স্ত্রীর পোশাক ছিঁড়ে ফেলে, যার ফলে তাঁর পর্দা ভঙ্গ হয়।
এখন প্রশ্ন হলো-এই উসমান গায়রতসম্পন্ন ছিলেন, না গায়রতহীন?
কেউ কেউ বলেন, এসব ঘটনা উসমান আহত হওয়ার পর ঘটেছে, তাই এর সঙ্গে তাঁর অবস্থানের সম্পর্ক নেই। কিন্তু সম্পর্ক আছে। কেননা আপনাদের আলেমরাই বর্ণনা করেন যে, উসমান নিজের মৃত্যুর ব্যাপারে পূর্ব থেকেই অবগত ছিলেন। আপনাদের দাবি অনুযায়ী, রাসূলুল্লাহ (সা.) তাঁকে জানিয়ে দিয়েছিলেন যে এমন পরিস্থিতি আসবে এবং তাঁকে ধৈর্য ধরতে হবে।
অর্থাৎ উসমান জানতেন যে তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে কী ধরনের অবমাননাকর আচরণ হতে যাচ্ছে, তাঁর ওপর আঘাত আসতে পারে, তাঁর পর্দা ভঙ্গ হতে পারে এবং এসব বিষয় তিনি আগে থেকেই জানতেন। এটি আপনাদের আকিদা, আপনাদের আলেমদের বক্তব্য এবং আপনাদের সহিহ রেওয়ায়েত অনুযায়ী।
এখন আমার প্রশ্নের উত্তর দিন-উসমান কি গায়রতহীন ছিলেন, না গায়রতসম্পন্ন?
যেখানে আমীরুল মু’মিনীন (আ.)-এর ক্ষেত্রে এ ধরনের ঘটনাই ঘটেনি, তবুও (নাউজুবিল্লাহ) যদি তিনি যুদ্ধ না করেন, তাহলে তাঁকে গায়রতহীন বলা হয়। অথচ এখানে উসমান ধৈর্য ধারণ করেন, এতসব ঘটনার পরও-এখানে কি এটাকে উসমানের জন্য ফজিলত বলা হয়!
আপনাদের বিবেক কোথায়? আমার এই সাধারণ প্রশ্নের উত্তর দিন-উসমান গায়রতসম্পন্ন ছিলেন, না গায়রতহীন?

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha