হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, আয়াতুল্লাহ আলীরেজা আরাফি বলেন, হওজা ইলমিয়া তার গৌরবময় ইতিহাসে কখনোই কোনো নির্দিষ্ট অঞ্চল বা বিশেষ গোষ্ঠীর মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না। বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে এর কল্যাণ ছড়িয়ে পড়েছে এবং আজও হাওজা তার আন্তর্জাতিক দায়িত্বের বিষয়ে চিন্তা করা উচিত, কেননা ইসলামী বিপ্লবের বরকতে এই ক্ষেত্রে কাজের সুযোগ অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে।
আয়াতুল্লাহ আলীরেজা আরাফি আজ কোম শহরের হযরত আলী ইবনে মুসা রেজা (আ.) কুরআনিক মাদ্রাসায় শিক্ষকদের, প্রশাসকদের এবং ছাত্রদের এক সমাবেশে অংশ নেন। সেখানে তিনি ইসলামী বিপ্লবের দাহে ফজর এবং পবিত্র শাবান মাসের আগমনের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন,
শাবান মাস, রজব মাসের মতোই এক উজ্জ্বল ও চমৎকার আধ্যাত্মিক বাস্তবতা ধারণ করে। সাধারণভাবে, প্রতিটি সময়ের বাহ্যিক রূপ ছাড়াও এক বিশেষ আধ্যাত্মিক গভীরতা থাকে। যখন শাবান মাস আসে, তখন সমগ্র মানবজাতি তার বাহ্যিক দিক থেকে এতে প্রবেশ করে, তবে রজব ও শাবান মাসের এক আধ্যাত্মিক জগৎও রয়েছে, যেখানে প্রবেশ করা সবার জন্য সহজ নয়; বরং এর জন্য বিশেষ প্রস্তুতি ও সাধনার প্রয়োজন হয়।
হওজা ইলমিয়ার পরিচালক বলেন:
যদি কেউ রজব ও শাবান মাসের আধ্যাত্মিক জগতে প্রবেশ করতে চায়, তবে তার জন্য প্রস্তুতির প্রয়োজন। তবে যারা শাবান মাসের প্রকৃত সত্যে প্রবেশ করতে সক্ষম হন, তাদের অবস্থানও সমান নয়। যেমন, পবিত্র কুরআনের বাহ্যিক ও আধ্যাত্মিক দিক রয়েছে, এবং এর গভীরতম অর্থ সরাসরি মহান আল্লাহর সঙ্গে সংযুক্ত, তেমনই রজব ও শাবান মাসেরও বাহ্যিক এবং গভীরতর মাত্রা রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, কুরআনের গভীরতা জ্ঞানের ওপর পরিব্যাপ্ত। সমস্ত বিধান ও জ্ঞান কুরআনে প্রতিফলিত হয়েছে, তবে তার অন্তর্নিহিত অর্থ উপলব্ধি করার জন্য পবিত্রতা আবশ্যক, যা সবার জন্য সহজলভ্য নয়। আমাদের ইবাদতও বিভিন্ন স্তর ও পর্যায়ে বিভক্ত। প্রতিটি সময়ের এক গভীর দিক রয়েছে, যা বোঝার চেষ্টা করা উচিত। বছরের সমস্ত মাসের মধ্যে কিছু বিশেষ সময় রয়েছে, যার সর্বোচ্চ শিখর হলো লাইলাতুল কদর। বছরের মাসগুলোর মধ্যে জুলহিজ্জার প্রথম দশ দিন, রজব, শাবান এবং এর চূড়ান্ত শিখর হলো রমজান মাস ও লাইলাতুল কদর। রজব ও শাবান এক অনন্য সময়সীমা, যেখানে আকাশের দরজাগুলো আরও প্রসারিত হয় এবং আধ্যাত্মিক আলোকরশ্মির প্রবাহ বৃদ্ধি পায়।
শাবানিয়া মোনাজাত: এক পরিপূর্ণ ঐশী শিক্ষা, আত্মজ্ঞান ও পথনির্দেশনা
আয়াতুল্লাহ আ’রাফি বলেন, রজব ও শাবান মাসের মধ্যে আত্মশুদ্ধি ও আধ্যাত্মিক উন্নতির জন্য অপার সম্ভাবনা বিদ্যমান। এই মাসগুলোর দোয়া আমাদেরকে আল্লাহর পথে চলার শিক্ষা দেয়। আমাদের উচিত, এই পবিত্র দোয়ার মাধ্যমে অন্ধকারকে দূর করা, পার্থিব প্রতিবন্ধকতাগুলো অতিক্রম করা এবং শুধুমাত্র আলোতেই সীমাবদ্ধ না থাকা। এটিই ধর্মীয় শিক্ষার মূল আত্মা এবং আলেমদের দায়িত্ব। তাই আমাদের কাজের এক অংশ হলো ইবাদত ও মোনাজাতের প্রতি গভীর মনোযোগ দেওয়া। শাবানিয়া মোনাজাত আসলে এক পরিপূর্ণ শিক্ষাবিধান, যা ঐশী জ্ঞান, আত্মপরিচিতি ও সঠিক পথের দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
আপনার কমেন্ট