শুক্রবার ৭ মার্চ ২০২৫ - ১০:১৪
 দানকারী মুমিনদের জন্য মহান পুরস্কার  

প্রকৃত ঈমান কেবল মুখের দাবি নয়, বরং তা কাজের মাধ্যমে প্রমাণিত হতে হবে।

হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, কোরআন মজিদের সূরা হাশরের ৭ নং আয়াতে প্রকৃত ঈমানের লক্ষণ প্রকাশ করা হয়েছে: প্রকৃত ঈমান কেবল মুখের দাবি নয়, বরং তা কাজের মাধ্যমে প্রমাণিত হতে হবে। ঐশী আয়াতে ঈমান ও দানের মধ্যে সরাসরি সম্পর্ক দেখানো হয়েছে, যা প্রমাণ করে যে হৃদয়ের ঈমান প্রমাণের উপায় হলো ঐ সম্পদ থেকে দান করা, যাতে আল্লাহ আমাদেরকে প্রতিনিধি করেছেন।  

পবিত্র রমজান মাসে প্রতিদিন 'জীবন গঠনকারী আয়াত' নিয়ে আমাদের সাথে থাকুন; এটি কোরআন মজিদের কিছু আয়াতের সংকলন, যার সাথে রয়েছে সংক্ষিপ্ত ও প্রায়োগিক তাফসির, যা জীবনের পথনির্দেশক এবং সুখের দিশারী। এই আয়াতগুলোর মাধ্যমে আমরা পবিত্র রমজান মাসের দিনগুলোকে আল্লাহর বাণী দ্বারা আলোকিত করব।  

হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলিমিন আব্বাস আশজা ইসফাহানি:  

ঐশী আয়াতে ঈমান ও দানের গুরুত্ব  
آمِنُوا بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ وَأَنفِقُوا مِمَّا جَعَلَکُم مُّسْتَخْلَفِینَ فِیهِ ۖ فَالَّذِینَ آمَنُوا مِنکُمْ وَأَنفَقُوا لَهُمْ أَجْرٌ کَبِیرٌ
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম; সূরা হাদিদের ৭ নং আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন: آمِنُوا بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ  অর্থাৎ আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের উপর ঈমান আন।"  

এই ঐশী নির্দেশনা একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় স্পষ্ট করে:  
যদি কেউ জিজ্ঞাসা করে: আমাদের মূলত কী কী বিষয়ে ঈমান আনতে হবে?
এর উত্তর হলো এই আয়াত। ঈমানের ক্ষেত্রে কিছু অপরিহার্য উপাদান রয়েছে, যার মধ্যে প্রথম ধাপে 'মানুষের মধ্যে ঈমানের অস্তিত্ব' অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।  

কিন্তু 'এই ঈমানের লক্ষ্য' কী হওয়া উচিত? এই আয়াতে আল্লাহ বলেন: "আমিনু বিল্লাহি।"  
প্রথম যে বিষয়ে আমাদের ঈমান আনতে হবে, তা হলো 'আল্লাহ তাআলা এবং তারপর তাঁর রাসুল।' এটি হলো প্রথম বিষয় যা আমরা উল্লেখ করেছি।  

এখন আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উঠে:  
আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের উপর ঈমান আনার কোনো লক্ষণ আছে কি?  
আমরা কি শুধু মুখে বলব যে আমরা ঈমান এনেছি, নাকি এই ঈমানের কোনো প্রভাব বা লক্ষণও আছে?  
আয়াতের পরবর্তী অংশ এই প্রশ্নের উত্তর দেয়: "ওয়া আনফিকু মিম্মা জা'আলাকুম মুসতাখলাফিন ফিহি; অর্থাৎ তোমরা যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের উপর ঈমান এনেছ, তোমাদেরকে অবশ্যই তোমাদের ঈমানের ভিত্তিতে কাজ করতে হবে এবং দায়িত্ব পালন করতে হবে।"  

এই দায়িত্বগুলোর মধ্যে একটি, যা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের উপর ঈমানের সরাসরি প্রভাব, তা হলো দান।  
"ওয়া আনফিকু মিম্মা জা'আলাকুম মুসতাখলাফিন ফিহি; যেমন আল্লাহ ঈমানের নির্দেশ দিয়েছেন, তেমনি দানেরও নির্দেশ দিয়েছেন।"
তোমরা যা কিছু হাতে পেয়েছ, তা থেকে দান কর; তোমাদের হাতে যে সম্পদ বা অর্থ এসেছে, তা উত্তরাধিকারসূত্রে হোক বা অন্য কোনো উপায়ে হোক, তা থেকে দান কর এবং অন্যদেরকে দাও।  

দানের সংজ্ঞা  

'দান' শব্দটির ব্যাপক অর্থ রয়েছে, যা আমরা এখানে আলোচনা করব না, তবে সংক্ষেপে বলতে গেলে, 'দান হলো অন্যের সমস্যা সমাধান করা এবং তাদের জীবনের অভাব দূর করা, আমাদের হাতে থাকা সম্পদ দিয়ে।'  

এরপর আল্লাহ এই প্রক্রিয়ার ফলাফল বর্ণনা করেন: "ফাল্লাজিনা আমিনু মিনকুম ওয়া আনফাকু।" পরবর্তী বিষয়টি হলো, যারা প্রকৃতপক্ষে ঈমান এনেছে - তোমাদের মধ্যে যারা মুমিন - এবং দান করে, তাদের কাজের ফলাফল হলো: "লাহুম আজরুন কাবির।" তাদের জন্য রয়েছে মহান পুরস্কার।  

অন্য কথায়, আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের উপর ঈমান, এর প্রভাব হিসেবে আল্লাহর পথে দান, মানুষের জন্য মহান পুরস্কার লাভের কারণ হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন যে, এমন ব্যক্তিদের জন্য মহান পুরস্কার প্রস্তুত রয়েছে।  

ইনশাআল্লাহ, আমরা সবাই প্রকৃত ঈমান ও খাঁটি দানের তাওফিক লাভ করব।

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha