রবিবার ২৩ মার্চ ২০২৫ - ২১:০০
সূরা আল-কদর: নবী (সা.) ও তাঁর আহলে বাইত (আ.)-এর সাথে সম্পর্ক কিয়ামত পর্যন্ত

একটি অসাধারণ বর্ণনায় ইমাম সাদিক (আ.) সূরা আল-কদর এবং নবী (সা.) ও তাঁর আহলে বাইত (আ.)-এর মধ্যকার গভীর সম্পর্ক সম্পর্কে ব্যাখ্যা করেছেন, যা কিয়ামত পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।

হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, ইমাম সাদিক (আ.) বলেছেন:

"আল্লাহ, পরাক্রমশালী ও মহান, নবী করিম (সা.)-কে আসমানে উঠিয়েছিলেন... অতঃপর তিনি বললেন: 'হে মুহাম্মাদ! সূরা আল-হামদ তেলাওয়াত করো।' আমি তা পূর্বের মতোই তেলাওয়াত করলাম। এরপর তিনি বললেন: 'পাঠ করো: إِنَّا أَنْزَلْنَاهُ (আমরা এটি অবতীর্ণ করেছি), কারণ এই সূরাটি তোমার এবং তোমার আহলে বাইতের মধ্যে সম্পর্ককে কিয়ামত পর্যন্ত স্পষ্টভাবে তুলে ধরে।'"

তথ্যসূত্র:
তাফসির আহলে বাইত (আ.), খণ্ড ১৮, পৃষ্ঠা ২৩৮
বিহার আল-আনওয়ার, খণ্ড ১৮, পৃষ্ঠা ৩৫৯ / খণ্ড ৭৯, পৃষ্ঠা ২৪১
নূর আল-সাকালাইন

হযরত ফাতিমা (সা.) এবং লাইলাতুল কদর: ইমাম সাদিক (আ.)-এর ব্যাখ্যায় এক গভীর সংযোগ

একটি গভীর বর্ণনায় ইমাম সাদিক (আ.) সূরা আল-কদর এবং হযরত ফাতিমা (সা.) ও ইলাহি জ্ঞানের মধ্যে এক গভীর সংযোগ ব্যাখ্যা করেছেন।

 ইমাম সাদিক (আ.) বলেছেন:
"লাইলাহ (রাত) বলতে বোঝানো হচ্ছে ফাতিমা (সা.), এবং কদর (ফয়সালা) বোঝানো হচ্ছে আল্লাহ। যে ব্যক্তি সত্যিকার অর্থে ফাতিমা (সা.)-কে চিনতে পেরেছে, সে-ই প্রকৃতপক্ষে লাইলাতুল কদরকে উপলব্ধি করেছে। তাঁকে ফাতিমা নামকরণ করা হয়েছে এই কারণে যে, সৃষ্টিকে তাঁর পূর্ণ জ্ঞান অর্জনের ক্ষমতা থেকে আড়াল রাখা হয়েছে।"

তথ্যসূত্র:
তাফসির আহলে বাইত (আ.), খণ্ড ১৮, পৃষ্ঠা ২৪৮
বিহার আল-আনওয়ার, খণ্ড ৪৩, পৃষ্ঠা ৬৫
তাফসির ফুরাত আল-কুফি, পৃষ্ঠা ৫৮১

হযরত ফাতিমা (সা.) লাইলাতুল কদরের প্রকৃত মর্ম

ইমাম সাদিক (আ.)-এর একটি গভীর ব্যাখ্যায় হযরত ফাতিমা (সা.)-এর পরিচয় সরাসরি লাইলাতুল কদরের সাথে সংযুক্ত করা হয়েছে।

 ইমাম সাদিক (আ.) বলেছেন:
"অতএব, এই আয়াত: ‘লাইলাতুল কদর হাজার মাসের চেয়ে উত্তম’ (সূরা কদর: ৩) — এটি ফাতিমা (সা.)-কে নির্দেশ করে।"

তথ্যসূত্র:
তাফসির আহলে বাইত (আ.), খণ্ড ১৮, পৃষ্ঠা ২৪৮
 বিহার আল-আনওয়ার, খণ্ড ২৫, পৃষ্ঠা ৯৭

লাইলাতুল কদর এবং হযরত ফাতিমা (সা.) সম্পর্কে ইমাম সাদিক (আ.)-এর ব্যাখ্যা

একটি গভীর ব্যাখ্যায় ইমাম সাদিক (আ.) লাইলাতুল কদর এবং হযরত ফাতিমা (সা.)-এর মধ্যে গভীর সংযোগ উন্মোচন করেছেন।

হুমরান বর্ণনা করেছেন:
আমি ইমাম সাদিক (আ.)-কে এই আয়াত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম:
"ফেরেশতারা এবং রূহ তাতে অবতীর্ণ হয়..." (সূরা কদর: ৪)

তিনি উত্তর দিলেন:

 "এই আয়াতে ‘ফেরেশতারা’ (الملائکة) বলতে বোঝানো হচ্ছে বিশ্বাসীরা, যারা আহলে বাইতের (আ.) জ্ঞান ধারণ করে।

‘রূহ’ (الروح) বলতে বোঝানো হচ্ছে পবিত্র আত্মা, যা ফাতিমা (সা.)-এর মধ্যে অবস্থান করে।"

 ‘প্রত্যেক বিষয়ের ফয়সালা নিয়ে শান্তি’ (مِنْ كُلِّ أَمْرٍ سَلامٌ) — এর অর্থ হলো তারা প্রত্যেক বিষয়ে নিরাপত্তা ও শান্তির মধ্যে থাকবে।"

তথ্যসূত্র:
তাফসির আহলে বাইত (আ.), খণ্ড ১৮, পৃষ্ঠা ২৬৬
বিহার আল-আনওয়ার, খণ্ড ২৫, পৃষ্ঠা ৯৭
 তাফসির ফুরাত আল-কুফি, পৃষ্ঠা ৫৮১

"ভোরের উদয় পর্যন্ত" — ইমাম মাহদির (আ.)-এর পুনরাবির্ভাবের প্রতি ইঙ্গিত

সূরা আল-কদরের চূড়ান্ত আয়াত সম্পর্কে ইমাম সাদিক (আ.)-এর এক ব্যাখ্যায় তিনি এই আয়াতটিকে ইমাম মাহদি (আ.)-এর পুনরাবির্ভাবের সাথে সংযুক্ত করেছেন।

ইমাম সাদিক (আ.) বলেছেন:
"অবধি ভোরের উদয়" (حَتَّی مَطْلَعِ الْفَجْرِ) (সূরা কদর: ৫)

"এর অর্থ হলো, অবধি কায়েম (ইমাম মাহদি, আ.)-এর পুনরাবির্ভাব পর্যন্ত।"

এই ব্যাখ্যা নির্দেশ করে যে ইলাহি ফয়সালা এবং শান্তির ধারাবাহিকতা ইমাম মাহদি (আ.)-এর পুনরাবির্ভাব পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। ইমাম মাহদি (আ.) পুনরায় আবির্ভূত হয়ে সর্বোচ্চ ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করবেন এবং মানবতার জন্য সত্য পথনির্দেশনা নিয়ে আসবেন।

তথ্যসূত্র:
তাফসির আহলে বাইত (আ.), খণ্ড ১৮, পৃষ্ঠা ২৯২
বিহার আল-আনওয়ার, খণ্ড ২৫, পৃষ্ঠা ৯৭
 তাফসির ফুরাত আল-কুফি, পৃষ্ঠা ৫৮১

লেখাসংগ্রহ ও অনুবাদ: আম্মার সাবিল

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha