হাওজা নিউজ এজেন্সির প্রতিবেদককে দেওয়া সাক্ষাত্কারে মাদ্রাসা কুরআন ও হাদিস প্রচার বিভাগের পরিচালক হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলিমীন সাইয়্যেদ মোহসেন আজাদি মাদ্রাসা পুনঃপ্রতিষ্ঠার শততম বার্ষিকী উপলক্ষে আয়াতুল্লাহিল উজমা হাজ শেখ আব্দুল করিম হায়েরি ইয়াজদি (রহ.)-এর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, "মাদ্রাসার মহান চিন্তাবিদ ও ফকিহদের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে আলেমদের নির্দেশনায় ইসলামী জ্ঞানের প্রসার ও সমাজে নৈতিকতার উত্থানে অনন্য ভূমিকা রেখেছে।"
তিনি যোগ করেন, "ইমাম খোমেইনি (রহ.)-এর মতো মহান ব্যক্তিত্বের গঠন, যিনি ফাইজিয়ায় তাঁর ঐশী আন্দোলন শুরু করেছিলেন, তা মাদ্রাসার ঐতিহাসিক ঘটনাবলি ও ইসলামী সংস্কৃতির পুনর্জাগরণে গভীর প্রভাবের সাক্ষ্য দেয়। এই আন্দোলন কেবল ইরানেই নয়, সারা বিশ্বে জুলুম ও আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রামের নতুন পথ তৈরি করেছে এবং ইসলামী চিন্তাধারায় প্রাণসঞ্চার করেছে। নিঃসন্দেহে এটি কওমি মাদ্রাসার মতো ইসলামী শিক্ষাকেন্দ্রগুলোর অমূল্য অবদান, যার ফলাফল কিয়ামত পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে এবং মুসলিম সমাজের জন্য পথপ্রদর্শকের আলোকবর্তিকা হিসেবে কাজ করবে।"
নৈতিকতা প্রচারে মাদ্রাসার ভূমিকা:
তিনি ইসলামের শিক্ষাকে ভিত্তি করে সমাজে নৈতিকতা প্রচারে মাদ্রাসার ভূমিকার ওপর জোর দিয়ে বলেন, "ইসলামী নৈতিকতা, যা ব্যক্তি ও সমষ্টির সফলতার মূলভিত্তি, তা হাওজাগুলোতে ঐশী জ্ঞান ও আহলে বাইত (আ.)-এর সুন্নাহর আলোকে শিক্ষার্থী ও প্রচারকদের শেখানো হয়। এভাবেই ইসলামী সমাজের নৈতিক ভিত্তি রচিত হয়।"
হুজ্জাতুল ইসলাম আজাদি উল্লেখ করেন, "মাদ্রাসার নৈতিকতা শিক্ষকরা কুরআনিক নীতির মাধ্যমে তাকওয়া, সততা, আমানতদারিতা ও ইখলাস বৃদ্ধিতে কাজ করেন। নৈতিকতা বিষয়ক সেমিনার, মূল্যবান গ্রন্থ রচনা ও ধর্মীয় পরামর্শ প্রদান সমাজে সদগুণ প্রতিষ্ঠার অন্যতম উপায়।"
কুরআনিক শিক্ষায় মাদ্রাসার অবদান:
তিনি বলেন, "মাদ্রাসা সর্বদা কুরআনের ব্যাখ্যা, গবেষণা ও শিক্ষার কেন্দ্রবিন্দু। বিশিষ্ট মুফাস্সিরদের প্রশিক্ষণ, ব্যাপক গবেষণা, তাফসির প্রতিযোগিতা ও কিরাত শিক্ষার ব্যবস্থা এর উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। শিক্ষার্থীরা ফিকহ ও উসুলের পাশাপাশি কুরআনিক জ্ঞান অর্জন করে সমাজে তা প্রচারে ভূমিকা রাখেন।"
মিডিয়ায় ইসলামী বার্তা প্রচার:
মিডিয়াকে ইসলামী শিক্ষা প্রচারের গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার উল্লেখ করে তিনি বলেন, "মিডিয়া ইসলামী সমাজের আধ্যাত্মিক চাহিদা পূরণে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। মাদ্রাসাকে মিডিয়া বিশেষজ্ঞ প্রশিক্ষণ, ডিজিটাল কন্টেন্ট তৈরি ও সোশ্যাল মিডিয়া নেটওয়ার্কের মাধ্যমে আরও সক্রিয় হতে হবে।"
যুবসমাজের প্রতি আহ্বান:
শতবার্ষিকীতে তিনি যুবক ও পরিবারদের মাদ্রাসায় যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, "এই আলোকিত পথে অংশ নিয়ে ইসলামী সভ্যতা বিনির্মাণে ভূমিকা রাখুন। জ্ঞান, নৈতিকতা ও আধ্যাত্মিকতার মাধ্যমে কুরআনিক শিক্ষার প্রসারে এগিয়ে আসুন।"
উপসংহার:
মাদ্রাসা নৈতিকতা, কুরআন ও সততার অটল দুর্গ হিসেবে আজও প্রজ্জ্বলিত। ইমাম খোমেইনি (রহ.)-এর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে এই প্রতিষ্ঠান ইসলামী বিশ্বের পথপ্রদর্শক হিসেবে তার মিশন অব্যাহত রাখবে।
আপনার কমেন্ট