বৃহস্পতিবার ১২ জুন ২০২৫ - ১৭:৫১
ইরানে হামলা হলে কী পরিণতি হবে যুক্তরাষ্ট্র-ইসরাইলের

ইরানের এক শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ইরান বর্তমানে ‘সর্বোচ্চ সামরিক প্রস্তুতির অবস্থায়’ রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র কিংবা ইসরাইল এ সময় কোনো ধরনের আগ্রাসন চালালে, তারা দ্রুত ও অপ্রত্যাশিত প্রতিক্রিয়ার মুখোমুখি হবে।

হাওজা নিউজ এজেন্সি: নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা প্রেসটিভিকে দেওয়া এক বিবৃতিতে এ হুঁশিয়ারি দেন।

তিনি বলেন, ‘ইরান এখন তার সর্বোচ্চ সামরিক প্রস্তুতির স্তরে রয়েছে। যদি যুক্তরাষ্ট্র বা ইহুদীবাদী ইসরাইল আগ্রাসন চালানোর চেষ্টা করে, তাহলে তারা এমনভাবে চমকে যাবে যা তারা কল্পনাও করতে পারবে না’।

‘সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র তাদের সামরিক ঘাঁটিগুলোর পুনঃবিন্যাস করেছে। এটি আসলে ইরানের হুঁশিয়ারির প্রতিক্রিয়ায় একটি প্রতিরক্ষামূলক পদক্ষেপ মাত্র’, যোগ করেন তিনি।

এ নিয়ে শীর্ষ পর্যায়ের ওই নিরাপত্তা কর্মকর্তা বলেন, ‘আমেরিকানদের এ পদক্ষেপ ইরানের প্রতি হুমকি নয়, বরং তাদের আঞ্চলিক স্বার্থ ও ঘাঁটি লক্ষ্য করে ইরান যে প্রতিশোধ নিতে পারে, সেই আশঙ্কায় তারা এমনটা করেছে’।

ইরানী কর্মকর্তার এই মন্তব্য এমন সময়ে এলো, যখন যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্য থেকে আংশিকভাবে কূটনৈতিক ও সামরিক কর্মীদের সরিয়ে নিচ্ছে।

বুধবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর ইরাকের বাগদাদে তাদের দূতাবাস থেকে অ-প্রয়োজনীয় কর্মীদের প্রত্যাহারের নির্দেশ দেয় এবং বাহরাইন, কুয়েত ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের ঘাঁটি থেকে স্বেচ্ছা ভিত্তিতে সেনা পরিবারের সদস্যদের সরিয়ে নেওয়ার অনুমতি দেয়।

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ পদক্ষেপ নিশ্চিত করে বলেন, ‘ওই অঞ্চল বিপজ্জনক হতে পারে বলে আমরা সরিয়ে নিচ্ছি। আমরা আগে থেকে জানিয়ে দিয়েছি, এখন দেখা যাক কী হয়’।

এদিকে মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইসরাইল ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর হামলার প্রস্তুতি নিতে পারে– এমন গোয়েন্দা তথ্য রয়েছে। ফলে আশঙ্কা করা হচ্ছে, ইরান সেই হামলার প্রতিশোধ হিসেবে আমেরিকান স্বার্থে আঘাত হানতে পারে।

এ প্রসঙ্গে ওই ইরানি নিরাপত্তা কর্মকর্তা বলেন, সম্প্রতি ইরান ইসরাইলের গোপন পারমাণবিক কর্মসূচি সংক্রান্ত যে নথিপত্র সংগ্রহ করেছে, তা ‘যুক্তরাষ্ট্র ও জায়োনিস্ট শত্রুর লক্ষ্যবস্তু সংক্রান্ত ব্যাপক গোয়েন্দা সুবিধা’ এনে দিয়েছে।

তিনি জানান, ইরান সম্প্রতি সফলভাবে দুই টন ওজনের ওয়ারহেডসহ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করেছে।

‘ইরান এখন এমন অবস্থানে রয়েছে, যেখানে শত্রুর যেকোনো আগ্রাসনের আগে প্রাণঘাতী প্রতিরোধমূলক হামলা চালিয়ে তাদের চমকে দিতে পারে’, যোগ করেন তিনি।

ইরানি ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ওয়াশিংটন থেকে আসা বিভ্রান্তিকর বার্তাগুলো প্রমাণ করে যে, ‘তাদের কাছে বাস্তব যুদ্ধক্ষেত্রে কোনো কার্যকর কৌশল নেই। তাই তারা মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধেই ভরসা করছে’।

এর আগে গত রোববার ইরানের গোয়েন্দা মন্ত্রী ইসমাইল খতিব নিশ্চিত করেন যে, ইরান গোপনে ইসরাইলের পারমাণবিক কর্মসূচি, পরিকল্পনা ও স্থাপনাসংক্রান্ত যে নথিপত্র সংগ্রহ করেছে। সেগুলো শিগগিরই প্রকাশ করা হবে।

পরদিন সোমবার ইরানের জাতীয় নিরাপত্তা সর্বোচ্চ পরিষদ জানায়, যদি ইসরাইল ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের বিরুদ্ধে আগ্রাসন চালায়, তাহলে তারা ইসরাইলের গোপন পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে পাল্টা হামলা চালাবে।

পরিষদটি আরও বলেছে, এই জটিল গোয়েন্দা অভিযান ছিল ইরানের একটি বৃহৎ পরিকল্পনার অংশ। যার উদ্দেশ্য শত্রুদের প্রোপাগান্ডার মোকাবিলায় গোপন প্রতিরোধ গড়ে তোলা।

সূত্র: মেহের নিউজ | যুগান্তর

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha