হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, আল হুথি উল্লেখ করেন যে গত ২০ মাস ধরে অবিরাম ইসরায়েলি হামলা চলছে এবং শুধু গত এক সপ্তাহেই ২,৪০০-র বেশি ফিলিস্তিনি শহীদ বা আহত হয়েছেন। তিনি জানান, গাজার ৯০ শতাংশ জনগণ গণহত্যার ঝুঁকিতে রয়েছে, যা সমসাময়িক যুদ্ধে এক ব্যতিক্রমী ও মর্মান্তিক বাস্তবতা।
তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে এই হত্যাযজ্ঞে সমান দোষী আখ্যা দিয়ে বলেন, "গাজার মানবিক সহায়তা কেন্দ্রগুলোকে কসাইখানায় পরিণত করার নীতি আমেরিকার তত্ত্বাবধানে তৈরি হয়েছে।" তিনি বলেন, “ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনিরা যখন সাহায্য নিতে যায়, তখন তাদের ওপর গুলি চালানো হয়। তাদের সামনে দুটি পথ — হয় ক্ষুধায় মারা, নয়তো গুলিতে।
মসজিদ ইব্রাহিমি ও পশ্চিম তীরের পরিস্থিতি
আল হুথি সতর্ক করে বলেন, ইসরায়েল মসজিদ ইব্রাহিমি দখল করে একে একটি ইহুদি উপাসনালয়ে পরিণত করার জন্য তার কার্যক্রম জোরদার করেছে। তিনি জানান, পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি অপরাধ অব্যাহত রয়েছে, বহু ফিলিস্তিনি শরণার্থী শিবির খালি করে দেওয়া হয়েছে এবং বিভিন্ন শহরের মধ্যে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টাও চলছে।
তিনি আরও বলেন, ইসরায়েল সেখানে নতুন করে ২২টি বসতি স্থাপন করছে, যা এই অঞ্চলে দখলদারির বড় প্রমাণ। আল হুথির ভাষায়, ফিলিস্তিনি জনগণের একমাত্র পথ হলো প্রতিরোধ।
লেবানন, সিরিয়া ও আরব দেশগুলোর প্রতি সমালোচনা
আনসারুল্লাহ প্রধান ঈদের রাতে বৈরুতের দক্ষিণ অংশ (দাহিয়া)–এ ইসরায়েলি বোমাবর্ষণের তীব্র নিন্দা জানান। তিনি সিরিয়ায় ইসরায়েলি হামলা ও ঘাঁটি স্থাপন নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
তিনি কয়েকটি আরব ও ইসলামি দেশের সমালোচনা করে বলেন, তারা ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি সামান্য সহানুভূতিও দেখাতে অনিচ্ছুক।” তিনি আরও বলেন, “হজের মতো মহান ইবাদত তার প্রকৃত শিক্ষামূলক ও আধ্যাত্মিক উদ্দেশ্য থেকে দূরে সরে গেছে।
ইয়েমেনি সামরিক অভিযান
আল হুথি জানান, ইয়েমেনি বাহিনী সাম্প্রতিক সময়ে ইসরায়েলি লক্ষ্যবস্তুতে ১১টি ব্যালিস্টিক ও হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন হামলা চালিয়েছে, যার মধ্যে ইয়াফা, হাইফা, আশদুদ ও তেল আবিবের বেন গুরিয়ন বিমানবন্দর অন্তর্ভুক্ত। তিনি বলেন, “ইসরায়েলি শত্রুর বিরুদ্ধে বিমান ও সামুদ্রিক অবরোধ চালু রয়েছে।
ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট ও আরব বিশ্বের পরিবর্তিত মনোভাব
আল হুথি ১৯৬৭ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধে মাত্র ছয় দিনে তিনটি আরব সেনাবাহিনীকে ইসরায়েল কীভাবে পরাজিত করেছিল তা স্মরণ করিয়ে দেন। তিনি বলেন, সেই সময় আরব রাষ্ট্রগুলো খার্তুম সম্মেলনে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, তারা ইসরায়েলের সঙ্গে কোনো শান্তিচুক্তি, আলোচনা বা স্বীকৃতি দেবে না।
তিনি আক্ষেপ করে বলেন, আজ সেই দেশগুলোই ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করছে। তবুও গাজার অবরুদ্ধ জনগণ গত ৬০০ দিন ধরে নিরবিচারে প্রতিরোধ চালিয়ে যাচ্ছে।
আপনার কমেন্ট