বৃহস্পতিবার ১২ জুন ২০২৫ - ১৮:৪৬
হাওযা ও রূহানিয়্যাত হচ্ছে ইসলামী বিপ্লবের কথনভিত্তিক অগ্রসার ধারা

আয়াতুল্লাহ আলী রেজা আরাফি বলেছেন: আল্লাহর কৃপায় হাওযা ও রূহানিয়্যাত আজকের দুনিয়ায় ইসলামী বিপ্লবের কথনভিত্তিক (দার্শনিক/বুদ্ধিবৃত্তিক) অগ্রসার ধারার নেতৃত্ব দিচ্ছে।

হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, ইরানের হাওযা বা ধর্মীয় শিক্ষাকেন্দ্রসমূহের প্রধান আয়াতুল্লাহ আলী রেজা আরাফি বলেছেন: আল্লাহর কৃপায় হাওযা ও রূহানিয়্যাত আজকের দুনিয়ায় ইসলামী বিপ্লবের কথনভিত্তিক (দার্শনিক/বুদ্ধিবৃত্তিক) অগ্রসার ধারার নেতৃত্ব দিচ্ছে।

রাশত শহরের আমিরুল মু’মিনিন (আ.) ধর্মীয় বিদ্যালয়ে গিলান প্রদেশের হাওযা কাউন্সিল সদস্যদের এক বৈঠকে তিনি একথা বলেন।

তিনি বলেন, ইমাম খোমেনী (রহ.)-এর নেতৃত্বে, যিনি একজন বিশিষ্ট হাওযা ব্যক্তিত্ব ছিলেন, এক আন্দোলন শুরু হয়েছিল যা দুনিয়ার তাগুতি ও সাম্রাজ্যবাদী ব্যবস্থাকে ক্ষিপ্ত করেছিল। আর এ কারণেই তারা হাওযা ও রূহানিয়্যাতকে দুর্বল করার জন্য সবরকম চেষ্টায় লিপ্ত ছিল এবং এখনও আছে।

তিনি আরও যোগ করেন, সত্য এই যে, শত্রু অনেক আগে থেকেই হাওযা ও প্রভাবশালী ওলামায়ে কেরামকে লক্ষ্য করে পদ্ধতিগত ও সূক্ষ্মভাবে কাজ করছে। বিশ্বে প্রভাবশালী কিছু থিঙ্কট্যাঙ্ক ইরানকে ঘিরে কাজ করছে, যার একটি বড় অংশ হচ্ছে রূহানিয়্যাতকে কেন্দ্র করে।

আয়াতুল্লাহ আরাফি বলেন, শত্রুরা সুপরিকল্পিতভাবে রূহানিয়্যাতের অবস্থান দুর্বল করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তবে আমরা নিজেদের দুর্বলতাও চিহ্নিত করে তা দূর করার চেষ্টা করতে পারি, যাতে হাওযার অবস্থান মজবুত করে ধর্ম, মাযহাব এবং মানুষের সেবা করতে পারি।

তিনি বলেন, সবকিছুর পরও আল্লাহর কৃপায় হাওযা ও রূহানিয়্যাতের এত ক্ষমতা ও গৌরব রয়েছে যে, সামান্য প্রচেষ্টায়ও হাওযা শুধু জাতীয় পর্যায়েই নয়, বরং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।

তিনি আরও বলেন, হাওযা তার ইতিহাসে বহু চ্যালেঞ্জ ও সংকটময় সময় অতিক্রম করেছে এবং সীমিত উপকরণ সত্ত্বেও গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি অর্জন করেছে। আমাদের এগুলো ভুলে গেলে চলবে না।
খোতামায়ে রাহবারীর সদস্য (শিয়া নেতৃবৃন্দের নির্বাচনকারী পরিষদ) হিসেবে তিনি আরও বলেন: ইসলামী বিপ্লবের বরকতে আজ হাওযা বিশ্বব্যাপী ব্যাপক প্রভাব রাখছে। শত্রুরা ‘মোকাবিলার ফ্রন্ট’ (মধ্যপ্রাচ্যের প্রতিরোধ আন্দোলন)-এ বিপ্লবের প্রভাব দেখে রূহানিয়্যাতকে আঘাত করার চেষ্টা করছে।

তিনি বলেন, তবে মনে রাখতে হবে যে ‘মোকাবিলার ফ্রন্ট’ ছাড়াও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো ইসলামী বিপ্লবের গফতোগো/বুদ্ধিবৃত্তিক কথনধারা, যার অগ্রসার শক্তি হচ্ছে রূহানিয়্যাত। আজকের দুনিয়ায় রূহানিয়্যাতের সামনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য তুলে ধরার সুযোগ আছে।

হাওযা ইলমিয়া কোম-এর শিক্ষকমণ্ডলীর সদস্য হিসেবে তিনি আরও বলেন: মর্যাদাপূর্ণ হাওযা গঠনের লক্ষ্যে আজ আমাদের চাই ঐতিহাসিক ও সভ্যতাভিত্তিক গভীর দৃষ্টিভঙ্গি। একে সঠিকভাবে মূল্যায়ন করে ভবিষ্যতের পথনির্দেশনা বের করতে হবে।

তিনি বলেন, আমাদের হাতে বড় সম্পদ আছে, তবে তা কাজে লাগাতে আমাদের পরিবর্তনের পথে এগিয়ে গিয়ে দুর্বলতাগুলো কাটিয়ে উঠতে হবে।

শেষে আয়াতুল্লাহ আরাফি জোর দিয়ে বলেন: পরিবর্তনশীল কার্যক্রম বাস্তবায়নে ও সাংস্কৃতিক প্রোগ্রামসমূহ সফল করতে হাওযাভিত্তিক প্রতিষ্ঠানগুলোর আরও বেশি সমন্বয় ও ঐক্য দরকার।
আমাদের একটি বড় উদ্বেগ হচ্ছে হাওযার ওয়াক্ফ সম্পদ পুনরুজ্জীবন (সংরক্ষণ ও কার্যকর ব্যবস্থাপনা), ইনশাআল্লাহ এ বিষয়ে শিগগিরই ভালো কিছু খবর দিতে পারব।

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha