হাওজা নিউজ এজেন্সি: প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নেতানিয়াহু হেরেদি (অতি-ধর্মীয়) দলের শীর্ষস্থানীয় আইনপ্রণেতা মোশে গাফনিকে ইরানে হামলার পরিকল্পনার কথা আগাম তিন দিন আগে জানান। উদ্দেশ্য ছিল গাফনির দল যাতে সেনা খসড়া থেকে যেশিভা শিক্ষার্থীদের ছাড় দেওয়ার আইনের ব্যর্থতা নিয়ে পার্লামেন্ট (কনেসেট) ভেঙে দেওয়ার হুমকি থেকে সরে আসে।
এই তথ্য প্রকাশ পায় যে, নেতানিয়াহু একটি অনাক্রমিত রাষ্ট্র ইরানের বিরুদ্ধে আগ্রাসন চালিয়ে তার সরকার রক্ষা করার চেষ্টা করেছেন, যা যুদ্ধের বিপজ্জনক রাজনৈতিক ব্যবহারের পরিষ্কার নিদর্শন। এটি তেহরানের দীর্ঘদিনের অভিযোগকে পুনরায় সত্য প্রমাণ করে যে, পশ্চিমা নীরবতা ব্যবহার করে তেলআবিব অঞ্চলটিকে অস্থির করে তুলছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্টের পূর্ণ সমর্থনে ইসরায়েল ১২ দিন ধরে ইরানে যুদ্ধ চাপিয়ে দেয়। এরপর যুক্তরাষ্ট্র ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় বোমা হামলা চালায়। এর পাল্টা জবাবে ইরান কাতারে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম সামরিক ঘাঁটি আল-উদেইদে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়, যেখানে ঘাঁটির গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো লক্ষ্যবস্তু করা হয়। এই হামলার পরই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেন, যা বাস্তবে ইসরায়েলকে ইরানের হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র থেকে রক্ষা করতেই ছিল, কারণ সেগুলো দখলকৃত ভূখণ্ডে নজিরবিহীন ধ্বংস ও আতঙ্ক সৃষ্টি করেছিল।
যুদ্ধবিরতির মাত্র দুই দিন পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ বিচারপ্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করে সমালোচনার মুখে পড়েন, যখন তিনি ইসরায়েলের রাষ্ট্রপতিকে দুর্নীতির অভিযোগে বিচারাধীন নেতানিয়াহুকে “ক্ষমা” করে দিতে বলেন।
ট্রাম্প সামাজিক মাধ্যমে লেখেন, যুক্তরাষ্ট্র যেমন ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইসরায়েলকে "বাঁচিয়েছে", তেমনি এখন নেতানিয়াহুকেও "বাঁচাতে" চায়।
নেতানিয়াহু সেই পোস্টে ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়ে লেখেন, “আমার প্রতি আপনার আবেগপূর্ণ সমর্থন এবং ইসরায়েলের প্রতি আপনার অপরিসীম সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ।”
তবে ইসরায়েলের প্রধান বিরোধী নেতা ইয়াইর লাপিদ ট্রাম্পের বিবৃতির কড়া সমালোচনা করে বলেন, “একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের বিচারিক প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়।”
নিউ ইয়র্ক টাইমস আরও জানায়, নেতানিয়াহু হেরেদি দলের নেতা মোশে গাফনিকে তেলআবিবে সেনা সদর দপ্তরে ডেকে পাঠান এবং তাকে একটি সামরিক গোপনীয়তা চুক্তিতে স্বাক্ষর করিয়ে চার দিনের মধ্যে ইরানে হামলার পরিকল্পনার কথা জানান। মূল উদ্দেশ্য ছিল প্রতিরক্ষা নয়, বরং গাফনির রাজনৈতিক আনুগত্য নিশ্চিত করে অনাস্থা ভোট এড়ানো।
হিব্রু মিডিয়া অনুসারে, গাফনি বৈঠক শেষে উদ্বিগ্ন হয়ে বের হন এবং ভাবেন, নেতানিয়াহু সত্যিই যুদ্ধ করতে যাচ্ছেন নাকি কেবল ভয় দেখাচ্ছেন। শেষ পর্যন্ত গাফনির দল সরকারকে টিকিয়ে রাখার পক্ষে ভোট দেয়।
আপনার কমেন্ট