রবিবার ১৩ জুলাই ২০২৫ - ১৬:৫৭
ইবনে ওমরের অপমানজনক বায়আত: ইতিহাসের এক করুণ শিক্ষা

ইসলামি ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ এক অধ্যায়ে উঠে আসে এক করুণ ও লজ্জাজনক ঘটনার বিবরণ, যা দলিল হয়ে আছে ইবনে আবিল হাদীদের লেখনীতে।

হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, ইসলামি ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ এক অধ্যায়ে উঠে আসে এক করুণ ও লজ্জাজনক ঘটনার বিবরণ, যা দলিল হয়ে আছে ইবনে আবিল হাদীদের লেখনীতে। ঘটনাটি আব্দুল মালিক বিন মারওয়ানের শাসনামলে সংঘটিত, যখন তার কুখ্যাত প্রতিনিধি হাজ্জাজ বিন ইউসুফ মদিনায় অবস্থান করছিল।

বিখ্যাত সাহাবি আবদুল্লাহ ইবনে ওমর এক রাতে হাজ্জাজের ঘরে উপস্থিত হন। হাজ্জাজ তখন মকরের চাদরে আরামে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। ইবনে ওমরের উদ্দেশ্য ছিল একটি হাদিসের ভিত্তিতে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করা। তিনি রাসূলের (সা.) একটি হাদীস দ্বারা বলেন:
 "من مات وليس في عنقه بيعة مات ميتة جاهلية"
"যে ব্যক্তি মারা যায় অথচ তার গলায় কোনো শাসকের বায়আত নেই, সে জাহেলিয়াতের (অজ্ঞতা যুগের) মৃত্যুতে মারা যায়।"

এই হাদিস স্মরণ করে তিনি হাজ্জাজের হাতে বায়আত করতে আসেন। ইবনে ওমরের এই আচরণে হাজ্জাজ অবজ্ঞা প্রকাশ করে অবিশ্বাস্য অপমানজনক এক ভঙ্গিতে প্রতিক্রিয়া জানান। তিনি তার পা কম্বলের নিচ থেকে বের করে দিয়ে বলেন: "এই পা’টা ধরো, আর এর সঙ্গেই বায়আত করো!"

এই ঘটনা ইতিহাসে কেবল একটি রাজনৈতিক আনুগত্যের নিদর্শন নয়, বরং এটি দেখিয়ে দেয়, কীভাবে একজন মানুষ যখন সত্য ও ন্যায়ের পথ—যেমন ইমাম হুসাইন (আ.)-এর পথ—ত্যাগ করে, তখন তাকে অপমান ও লাঞ্ছনার শিকার হতে হয়।

এই ঘটনার পাশাপাশি ‘ওয়াকিয়ায়ে হাররাহ’ নামক আরেকটি মর্মান্তিক অধ্যায়েও দেখা যায়, ইবনে ওমর মদিনার মুহাজির ও আনসারদের বিপরীতে অবস্থান নিয়ে ইয়াজিদের পক্ষে দাঁড়ান। এইসব ঘটনা ইতিহাসের সেই কঠিন শিক্ষা বহন করে, যেখানে ন্যায়বিচার ও অন্যায়ের মাঝে অবস্থান নেওয়ার দায়িত্ব প্রত্যেক বিশ্বাসীর ওপর বর্তায়।

শেষ কথা:
ইতিহাস নিছক অতীত নয়, বরং ভবিষ্যতের দিশা। যারা সত্যের পাশে দাঁড়ায় না, তাদের অবস্থান একদিন অপমানের পাতায়ই লেখা হয়। ইবনে ওমরের এই ঘটনা তা-ই আজও স্মরণ করিয়ে দেয়।

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha