হাওজা নিউজ এজেন্সি: লেবাননের সরকার দাবি করছে এটি দেশের স্বার্থে এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, কিন্তু বাস্তবে এই পদক্ষেপ পশ্চিমা শক্তি ও জায়োনিস্ট শাসনের প্রভাব প্রদর্শন করছে। গাজা, সিরিয়া, লেবানন, ইয়েমেন ও ইরানের উদাহরণ প্রমাণ করে যে, প্রতিরোধ যদি দৃঢ় থাকে, জায়োনিস্ট শাসন তাদের লক্ষ্য অর্জন করতে পারে না।
পশ্চিম এশিয়ায় প্রতিরোধকে নিরস্ত্রীকরণের প্রয়াস
গত কয়েক বছরে পশ্চিম এশিয়ার বিভিন্ন ঘটনা প্রমাণ করেছে যে, প্রতিরোধকে অস্ত্রহীন করার চেষ্টা জায়োনিস্ট শাসন এবং যুক্তরাষ্ট্রের বিস্তৃত কৌশলের অংশ। তবে এই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলে অঞ্চল নতুন শত্রুপ্রবণ নিয়ন্ত্রণের মুখোমুখি হবে।
সিরিয়ার উদাহরণ
সিরিয়ায় “বাশার আল-আসাদ” সরকারের সময় জায়োনিস্ট শাসনের সঙ্গে সর্বাধিক সমঝোতা লক্ষ্য করা গেছে। ২০১১ সালে অভ্যন্তরীণ সংকট শুরু হওয়ার পর থেকে সিরিয়ায় নিয়মিত লক্ষ্যভিত্তিক আক্রমণ চালানো হয়, যা প্রতিরোধ শিবিরের সদস্য ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা লক্ষ্য করেছে। তখনকার সরকার কোনো কার্যকর জবাব দেয়নি। পরবর্তীতে তুরস্ক ও যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত নতুন জোলানি সরকার প্রকাশ্যভাবে প্রতিরোধবিরোধী মনোভাব নিলেও আক্রমণ বন্ধ হয়নি; বরং আরও তীব্র ও ব্যাপক আকার ধারণ করেছে।
লেবাননের উদাহরণ
গত বছরের শেষের দিকে লেবাননের দক্ষিণে জায়োনিস্ট হামলা শুরু হয়। লক্ষ্য ছিল হিজবুল্লাহকে ধ্বংস করা। সর্বোচ্চ শক্তির আক্রমণ সত্ত্বেও হিজবুল্লাহ থামানো যায়নি। নিহত হন হিজবুল্লাহ নেতা এবং কমান্ডারগণ। প্রতিরোধের ধারাবাহিকতা দেখিয়েছে যে, জায়োনিস্ট শাসন তাদের লক্ষ্য পূরণ করতে পারে না।
ইয়েমেনের উদাহরণ
গাজার প্রথম আক্রমণের পরই ইয়েমেনের সশস্ত্র বাহিনী লোহিত সাগরে জায়োনিস্ট শাসনের বিরুদ্ধে কার্যক্রম শুরু করে। নিয়মিত রকেট ও ড্রোন হামলা চালিয়ে তারা প্রতিরোধ অব্যাহত রেখেছে। এর ফলে ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের সমন্বিত বাহিনী অঞ্চল ত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছে।
ইরানের উদাহরণ
২০২৫ সালের জুনে ইরানের বিরুদ্ধে জায়োনিস্ট হামলা ১২ দিনের যুদ্ধে পরিণত হয়। ইরান সশস্ত্র বাহিনী ও প্রতিরোধ শক্তি আক্রমণ প্রতিহত করে। ফলে জায়োনিস্ট শাসন যুদ্ধের মাঝেই শান্তি চুক্তি ও যুদ্ধবিরতি খুঁজতে বাধ্য হয়।
গাজার উদাহরণ
গাজা দুই বছর ধরে ধ্বংসযজ্ঞের শিকার হলেও, জনগণ প্রতিরোধ থেকে সরে যায়নি। স্থানীয় জনগণের সহায়তায় প্রতিরোধ কার্যকর হয়েছে। জায়োনিস্ট শাসন পশ্চিমা সমর্থন সত্ত্বেও পরিকল্পিত ধ্বংস সফল করতে পারছে না।
পরিসমাপ্তি, সব উদাহরণ প্রমাণ করে যে, জায়োনিস্ট শাসন শুধুমাত্র প্রতিরোধের জবাবে বুঝতে পারে। প্রতিরোধ দৃঢ় থাকলে তাদের কৌশল ব্যর্থ হয়। যদি প্রতিরোধ হালকা হয় বা বিভ্রান্ত হয়, তবেই জায়োনিস্ট ও পশ্চিমা ষড়যন্ত্র কার্যকর হয়।
আপনার কমেন্ট