হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, ইসলামের ইতিহাসে হযরত ইমাম হাসান মুজতাবা (আ.)-এর নাম উজ্জ্বল নক্ষত্রের মতো জ্বলজ্বল করছে। যদিও রাজনৈতিক অস্থিরতা ও খলিফাদের যুগে তাঁর জ্ঞানচর্চা ও প্রচারের সুযোগ সীমিত ছিল, তবুও তিনি অসংখ্য হাদিস ও মূল্যবান বাণী রেখে গেছেন, যা আজও মানবতার পথপ্রদর্শক। গবেষকরা উল্লেখ করেছেন, তাঁর বাণী ও শিক্ষামালা মিলিয়ে দশ-বারো খণ্ড গ্রন্থের সমান হয়েছে।
ভালোবাসা ও পাপমোচন
ইমাম হাসান (আ.) বলেন:
“নিশ্চয়ই আমাদের প্রতি ভালোবাসা আদম সন্তানদের পাপ ঝরিয়ে দেয়, যেমন শরতের বাতাস গাছের শুকনো পাতা ঝরিয়ে দেয়।”
(কালেমাতুল ইমাম হাসান, খণ্ড ৭, পৃষ্ঠা ২৫)
এখান থেকে স্পষ্ট হয় যে আহলে বাইতের প্রতি আন্তরিক ভালোবাসা ও অনুরাগ মানুষের আত্মাকে পাপমুক্ত করে দেয়।
আল্লাহকে চেনা মানেই ভালোবাসা
ইমাম হাসান (আ.) আরেকটি বাণীতে বলেন:
“যে আল্লাহকে চেনে, সে আল্লাহকে ভালোবাসে।”
যে ব্যক্তি আল্লাহকে ভালোবাসে, তার জীবন থেকে গুনাহ ও অন্যায় দূর হয়ে যায়।
দুনিয়ার প্রতি বিমুখতা
তিনি আরও বলেন:
“যে দুনিয়াকে চিনে, সে এর প্রতি বিমুখ হয়।”
আসলেই দুনিয়া কখনো কারো প্রতি বিশ্বস্ত নয়। পদমর্যাদা, ধনসম্পদ কিংবা আভিজাত্য—সবকিছুর পরিণতি এক মুঠো কাফনের কাপড় আর একটি ছোট কবর।
মুমিনের পরিচয়
ইমাম হাসান (আ.) বলেন:
“মুমিন কখনো এমন খেল-তামাশায় লিপ্ত হয় না, যা তাকে আল্লাহ থেকে গাফিল করে দেয়।”
বরং মুমিন সর্বদা চিন্তা করে—এই দুনিয়ায় তার আসার উদ্দেশ্য কী? কেবল ভোগ-বিলাস, নাকি আখিরাতের জন্য পুঁজি সংগ্রহ? এ চিন্তাই তাকে আখিরাতের প্রতি মনোযোগী করে তোলে।
হযরত ইমাম হাসান মুজতাবা (আ.)-এর এই অমূল্য বাণীগুলো যুগে যুগে মানুষের হৃদয়ে আলো ছড়িয়ে দিয়েছে। আজকের ভোগবাদী দুনিয়ায় তাঁর শিক্ষা আমাদের জন্য বিশেষ প্রাসঙ্গিক—আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা, দুনিয়ার মোহ থেকে মুক্তি এবং আখিরাতের প্রতি সচেতনতা-ই একজন সত্যিকারের মুমিনের পরিচয়।
আপনার কমেন্ট