বৃহস্পতিবার ১৬ অক্টোবর ২০২৫ - ১৯:১৮
গাজার দিগন্তে পৌঁছেও থেমে গেল মানবতার জাহাজ

ব্রিটিশ মানবিক কর্মী সারা উইলকিনসন:

গাজার দিগন্তে পৌঁছেও থেমে গেল মানবতার জাহাজ

ব্রিটিশ কর্মীর কান্নাভেজা কণ্ঠে আহ্বান: “আমি গাজাকে দেখেছি…”

সারা উইলকিনসন, আমি বুঝেছি-ইসরাইলিরা মানুষ নয়। তাদের হাত আছে, মুখ আছে, কিন্তু তারা আমাদের মতো নয়। তারা দানব।

হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, গাজা উপকূলে মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার এক মরিয়া প্রচেষ্টা শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হলেও, সেই অভিজ্ঞতা গভীরভাবে নাড়া দিয়েছে ব্রিটিশ মানবিক কর্মী সারা উইলকিনসনকে। গাজা থেকে মাত্র ৩৭ মাইল দূরে অবস্থান করেও সেখানে পৌঁছাতে না পারার কষ্ট তিনি শেয়ার করেছেন আবেগঘন ভাষায়।

“আমি গাজার খুব কাছাকাছি ছিলাম, কিন্তু সেখানে পৌঁছাতে পারিনি…”-গভীর অনুশোচনায় এভাবেই শুরু করেন তিনি।

গত তিন দিনে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো সম্পর্কে বর্ণনা দিতে গিয়ে সারা বলেন, আমি বুঝেছি-ইসরাইলিরা মানুষ নয়। তাদের হাত আছে, মুখ আছে, কিন্তু তারা আমাদের মতো নয়। তারা দানব। তারা আমাদের পানি কেড়ে নিয়েছে, আমাদের খাদ্য কেড়ে নিয়েছে। আমরা গাজা থেকে মাত্র ৩৭ মাইল দূরে ছিলাম; আমি গাজাকে চোখে দেখতে পাচ্ছিলাম।

উইলকিনসন জানান, সহায়তাবাহী নৌবহরটি গাজার পথে যাত্রা শুরু করেছিল যুদ্ধবিধ্বস্ত মানুষের কাছে খাদ্য, ওষুধ ও পানি পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে। কিন্তু পথে ইসরাইলি বাহিনীর বাধার কারণে তারা লক্ষ্য পূরণে ব্যর্থ হয়।

তিনি দৃঢ় কণ্ঠে বলেন, পরের বার আমরা এটি করতে পারব, ইনশাআল্লাহ। পরের বার, আর ইসরাইলিদের কাছে আমাদের থামানোর মতো যথেষ্ট জাহাজও থাকবে না।

শেষে তিনি এক আবেগময় বাক্যে বলেন, “আমি দেখেছি-আমি গাজাকে দেখেছি।”

মানবিক সহায়তার পথে অবরোধ

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে গাজার দিকে পাঠানো সহায়তাবাহী নৌযানগুলোকে একাধিকবার বাধার মুখে পড়তে হয়েছে। ইসরাইলি নৌবাহিনী অনেক ক্ষেত্রেই এই জাহাজগুলোর গন্তব্য পরিবর্তনে বাধ্য করেছে বা আটকে দিয়েছে।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া

মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চলে মানবিক সহায়তা পৌঁছানো আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের অংশ, যা কোনোভাবেই বাধাগ্রস্ত করা উচিত নয়। জাতিসংঘের কর্মকর্তারাও গাজায় মানবিক সংকট ক্রমশ অবনতির দিকে যাচ্ছে বলে সতর্ক করেছেন।

শেষ কথা

সারা উইলকিনসনের এই বক্তব্য এখন সামাজিক মাধ্যমে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। অনেকেই তার সাহস ও মানবিকতার প্রশংসা করছেন। যদিও বিতর্কও উঠেছে, তার বক্তব্যে ব্যবহৃত কঠোর ভাষা নিয়ে-তবে কেউই অস্বীকার করছেন না, গাজার দিকে সাহায্য পৌঁছানো এখন শুধু মানবিক নয়, নৈতিক দায়িত্বও।

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha