বুধবার ১২ নভেম্বর ২০২৫ - ১৯:৫০
আহলে সুন্নাতের নির্ভরযোগ্য সূত্রে হযরত ফাতিমা (সা.আ.)–এর শাহাদাতের ঐতিহাসিক স্বীকৃতি

হযরত ফাতিমা (সা.আ.)-এর ঘরে আক্রমণ, তাঁকে আঘাত করা এবং পরবর্তীতে তাঁর শাহাদাত—নবী করিম (সা.)-এর ইন্তেকালের মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই ঘটে যাওয়া এই হৃদয়বিদারক ঘটনা ইসলামের প্রারম্ভিক ইতিহাসের এক অন্ধকার অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত। এই ঘটনার রাজনৈতিক, ঐতিহাসিক এবং আকীদাগত (ধর্মবিশ্বাস সংশ্লিষ্ট) বহুমাত্রিক প্রভাব পরবর্তী সময়ে গভীর ছায়া ফেলেছে।

হাওজা নিউজ এজেন্সি: এই ঘটনার সঙ্গে সুন্নি সম্প্রদায়ের কিছু বিশিষ্ট ও সম্মানিত ব্যক্তিত্বের উপস্থিতি ও ভূমিকা সম্পর্কিত বর্ণনা পাওয়া যায়। এ কারণে অনেক সুন্নি আলেম পুরো ঘটনাটিকে অস্বীকার করেছেন, অথবা বিবরণকে এমনভাবে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছেন যাতে এর বাস্তব চিত্র ম্লান হয়ে যায়।

তবুও, এই সংক্ষিপ্ত নোটে আমাদের উদ্দেশ্য বিতর্ক সৃষ্টি করা নয়— বরং সংক্ষেপে অনুসন্ধান করা এবং সুন্নি ইতিহাসবিদ ও হাদিস বিশেষজ্ঞদের স্বীকৃত প্রামাণ্য গ্রন্থসমূহে পাওয়া বর্ণনার আলোকে ঘটনাটির বিবরণ তুলে ধরা।

দ্বিতীয় খলিফা হযরত ফাতিমা (সা.আ.)-এর বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়ার হুমকির সংবাদ
সুন্নি সাহিত্যভাণ্ডারে বহু ক্ষেত্রে এমন বর্ণনা মিলেছে, যা ইঙ্গিত করে—দ্বিতীয় খলিফা (উমর ইবনে আল-খাত্তাব) হযরত ফাতিমা (সা.আ.)-এর বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন। উদাহরণস্বরূপ, আমরা ইবনে আবি শাইবা’র কিতাব আল-মুসন্‌নাফে এ রকম একটি বর্ণনা পাই। সেখানে তিনি উল্লিখিত করেছেন:
حَدَّثَنَا زَيْدُ بْنُ أَسْلَم عَنْ أَبِيهِ أَسْلَم، أَنَّهُ حِينَ بُويِعَ لأِبِي بَكْرٍ بَعْدَ رَسُولِ اللَّهِ(ص)، كَانَ عَلِيٌّ وَالزُّبَيْرُ يَدْخُلان عَلى فَاطِمَةَ بِنْتِ رَسُولِ اللَّهِ(ص) فَيُشَاوِرُونَهَا وَيَرْتَجِعُونَ في أَمرِهِمْ، فَلَمَّا بَلَغَ ذَلِكَ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ خَرَجَ حَتَّى دَخَلَ على فَاطِمَةَ، فَقَالَ: يَا بِنْتَ رَسُولِ اللَّهِ(ص) وَاللهِ مَا مِنْ أَحَدٍ أَحَبَّ إلَيْنَا مِنْ أَبِيك، وَمَا مِنْ أَحَدٍ أَحَبُّ إِلَيْنَا بَعْدَ أَبِيكِ مِنْكِ، وَأَيْمُ اللهِ مَا ذَاكَ بِمَانِعِيَّ إنْ اجْتَمَعَ هَؤُلاءِ النَّفَرُ عِنْدَكِ أَنْ أَمَرْتُهُمْ أَنْ يُحَرَّقَ عَلَيْهِمْ الْبَيْتُ، قَالَ فَلَمَّا خَرَجَ عُمَرُ جَاؤُوهَا فَقَالَتْ: تَعْلَمُونَ أَنَّ عُمَرَ قَدْ جَاءَنِي وَقَدْ حَلَفَ بِاللهِ لَئِنْ عُدْتُمْ لَيُحَرِّقَنَّ عَلَيْكُمْ الْبَيْتَ وَأَيْمُ اللهِ لَيَمْضِيَنَّ لِمَا حَلَفَ عَلَيْهِ

যায়েদ ইবনে আসলাম তাঁর পিতা আসলামের বর্ণনা উদ্ধৃত করে বলেন— যখন নবীর (ﷺ) পর লোকজন আবু বকরকে ইমাম মেনে গ্রাহ্য করল, তখন আলী (আ.) ও জুবায়ের ফাতিমা (সা.আ.)-র কাছে যেতেন; তাঁর সঙ্গে পরামর্শ করতেন এবং নিজেদের সিদ্ধান্তে দ্বিধান্বিত ছিলেন। যখন এই খবর উমর ইবনে খাত্তাবের কাছে পৌঁছল, তিনি বেরিয়ে গিয়ে ফাতিমার ঘরে ঢুকে বললেন: “হে রাসূলের কন্যা! আল্লাহর শপথ, তোমার বাবার চাইতে আমাদের কাছে আর কেউ প্রিয় নয়, এবং তোমার বাবার পর তোমার চেয়েও আমাদের কাছে আর কেউ প্রিয় নয়; আল্লাহর শপথ, এই ভালোবাসাই আমাকে বাধা দিতে পারবে না—যদি এই লোকেরা তোমার কাছে জড়ো হয়, আমি তাদের বিরুদ্ধে আদেশ করে দেব যাতে তাদের উপর বাড়িটি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়।”

বর্ণনায় বলা হয়—উমর যখন চলে গেলেন, তারা (যারা আশ্রয় নিয়েছিল) তাঁর কাছে ফিরে এলো; তখন তিনি (ফাতিমা) বললেন: “তোমরা জানো যে উমর আমার কাছে এসে আল্লাহর নামে শপথ করে বলেছিল, যদি তোমরা ফিরে যাও তবে তিনি তোমাদের বাড়ি জ্বালিয়ে দেবেন; আল্লাহর শপথ, তিনি তাঁর শপথ বাস্তবে কার্যকর করবেন।”

তাবারি তাঁর ইতিহাস–এ, হিজরী ১১ সালের ঘটনার বর্ণনায়, এই হুমকির উল্লেখ করেছেন:
عَنْ زِيَادِ بْنِ كُلَيْبٍ، قَالَ: أَتَى عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ مَنْزِلَ عَلِيٍّ وَفِيهِ طَلْحَةُ وَالزُّبَيْرُ وَرِجَالٌ مِنَ الْمُهَاجِرِينَ، فَقَالَ: وَاللَّهِ لأَحْرِقَنَّ عَلَيْكُمْ أَوْ لَتَخْرُجُنَّ إِلَى الْبَيْعَةِ

জিয়াদ ইবনে কুলাইব বর্ণনা করেন— উমর ইবনে আল-খাত্তাব  আলী (আ.)-এর গৃহে প্রবেশ করলেন। সেখানে আশ্রয় নিয়েছিলেন তালহা, জুবায়ের ও কয়েকজন মুহাজির। উমর দৃঢ় কণ্ঠে ঘোষণা করলেন: আল্লাহর নামে শপথ! তোমরা যদি বের হয়ে এসে বাইআত গ্রহণ না করো, তবে আমি এই গৃহকে আগুনে সমর্পণ করব।

(অর্থাৎ: উমর তাদের দুই বিকল্প দিয়েছিলেন—বাইআতে যোগদান, না করলে ঘরটি আগুনে জ্বালিয়ে দেওয়ার হুমকি।)

আহলুস সুন্নাহর আরেকজন বিশিষ্ট আলেম, তাঁর গ্রন্থ (আল ইমামা ওয়া আস সিয়াসা) الامامه و السياسه– এ এই ধরনের হুমকির বর্ণনা দিয়েছেন।

وإن أبا بكر رضي الله عنه تفقد قوما تخلفوا عن بيعته عند علي كرم الله وجهه ، فبعث إليهم عمر، فجاء فناداهم وهم في دار علي ، فأبوا أن يخرجوا فدعا بالحطب وقال: والذي نفسه عمر بيده. لتخرجن أو لأحرقنها على من فيها، فقيل ل : يا أبا حفص، إن فيها فاطمة ؟ فقال : وإن..

ইবনে কুতাইবা তাঁর গ্রন্থ আল–ইমামা ওস-সিয়াসা-তে বর্ণনা করেন—অবস্থা এমন ছিল যে আবু বকর যাচাই করলেন যারা তাঁর বাইয়াতে অনুগত হননি তারা আলীর (আ.) বাড়িতে আশ্রয় গ্রহণ করেছে। তিনি তাদের প্রতি উমরকে প্রেরণ করলেন; উমর সেখানে এসে ডাক দিলেন, কিন্তু তারা বেরিয়ে আসতে অস্বীকার করল। তখন উমর কাঠের জোগাড় করতে বললেন এবং বললেন: “যে কেয়ামত পর্যন্ত উমরের প্রাণ আছে, আমি তোমাদের বা ঘরটি জ্বালিয়ে দেব বা তোমরা বের হবে। তখন তাকে বলা হলো: “হে আবা হাফসা! সেখানে ফাতিমা (সা.আ.) থাকেন?” উমর উত্তর দিলেন: “তবু—(তাই-ও-হবে)।

(অর্থাৎ, আবু বকরের প্রতি অনুগত না হওয়া ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে উমর এমন কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন; এমন সময় বলা হয়, ফাতিমা (সা.আ.)-র উপস্থিতি বিষয়টিকে ততটা থামাতে পারেনি।)

সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা
উপরোক্ত সূত্রগুলো সুন্নি ঐতিহ্যের মধ্যেই পাওয়া যায় এবং সেগুলোতে বর্ণিত উপলব্ধি স্পষ্ট—হযরত ফাতিমা (সা.আ.)-এর ঘরে আশ্রয় নেওয়া ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে উমরের কঠোর হুমকি দেওয়ার কাহিনী আছে। ভাষ্যগুলোতে প্রত্যক্ষভাবে বলা হয়—হুমকি ছিল: বাইআতে ফিরে না এলে ঘরটি তাদের ওপর জ্বালিয়ে দেওয়া হবে। কিছু বর্ণনায় বলা হয়, এমন হুঁশিয়ারিতে ফাতিমা (সা.আ.)-র অবস্থানও আলোচিত হয়েছে, তবু ঘটনাটির করুণ অনুষঙ্গ ও রাজনৈতিক গুরুত্ব ইতিহাসে গভীর ছাপ রেখে গেছে।

এই হুমকি, একইভাবে বা সামান্য পার্থক্যপূর্ণ ভাষায়, আহলুস সুন্নাহর অন্যান্য বহু গ্রন্থ ও ইতিহাসচর্চায়ও পুনরাবৃত্তি হয়েছে। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু সূত্র হলো:
– বালাযুরি, আনসাবুল আশরাফ– ইবনে আব্দরব্বাহ, আল-‘আকদুল ফারীদ

– ইবনে আব্দুলবার, আল-ইস্তি‘আব– ইবনে আ’বি হাদীদ, শারহে নাহজুল বালাগা – আবুল ফিদা, মুখতারস আখবারুল বশার – সিয়ুতী, মসনুদ ফাতিমা – মাতকী হিন্দী, কাঞ্জুল আ‘মাল – নুওয়রী, নহায়াতুল আরব ফি ফুনুনিল আদাব – উমর রেজা কাহালা, আ‘লামুন নিসা… এবং আরও অনেকে।

এই বর্ণনাগুলো স্পষ্টভাবে ইঙ্গিত করে যে কিছু ব্যক্তির সাহস এবং জোর—যারা হযরত ফাতিমা (সা.আ.)-কে  তাঁর বাড়িতে আক্রমণ চালানো এবং তা আগুনে জ্বালিয়ে দেওয়ার বিষয়ে হুমকি দিয়েছিলেন। কেবল কথার পর্যায়ে থাকলে হয়তো এ ধরনের হুমকি সীমাবদ্ধ থাকত, তবে ইতিহাসের পাতায় এবং হাদিসগ্রন্থগুলোতে আমরা দেখতে পাই, যে এই দুঃখজনক ঘটনা প্রকৃতপক্ষে ঘটেছিল।

হযরত ফাতিমা (সা.আ.)-এর বাড়িতে আক্রমণ ও প্রহারের সংবাদ
ইবনে কুতাইবা তাঁর গ্রন্থ الامامه و السياسه-এ হযরত ফাতিমা (সা.আ.)-এর বাড়িতে আক্রমণের ঘটনা এভাবে বর্ণনা করেছেন:
ثم قام عمر، فمشى معه جماعة، حتى أتوا باب فاطمة، فدقوا الباب، فلما سمعت أصواتهم نادت بأعلى صوتها: يا أبت يا رسول الله، ماذا لقينا بعدك من ابن الخطاب وابن أبی قحافة، فلما سمع القوم صوتها وبكاءها، انصرفوا باكين، وكادت قلوبهم تنصدع، وأكبادهم تنفطر، وبقی عمر ومعه قوم، فأخرجوا عليا، فمضوا به إلى أبي بكر

তারপর উমর উঠলেন এবং সঙ্গে কিছু লোক নিয়ে ফাতিমা (সা.আ.)-এর দরজার দিকে এগোলেন। তারা দরজা আঘাত করলেন। যখন ফাতিমা তাদের শব্দ শুনলেন, তিনি উচ্চস্বরে বললেন— হে পিতা, হে রাসূলুল্লাহ! তুমি চলে যাওয়ার পর এই ইবনে খাত্তাব ও ইবনে আবি কুফাহ আমাদের কীভাবে প্রতারণা করছে?

যখন লোকেরা ফাতিমার কণ্ঠ এবং কান্না শুনলো, তারা কান্না করতে করতে ফিরে গেল; তাদের হৃদয় যেন ফেটে যাবে, পেটের কষ্ট সহ্য করা কঠিন হয়ে পড়েছিল।

তবে উমর এবং তার কিছু লোক সেখানে রইলেন। শেষপর্যন্ত আলী (আ.)-কে জোরপূর্বক ঘর থেকে বের করা হলো এবং তাঁকে আবু বকরের কাছে নিয়ে যাওয়া হলো।

হযরত ফাতেমা (সা.)-এর গর্ভপাত ও বাড়িতে আক্রমণের ঘটনা
ইব্রাহিম ইবনে সিয়ার নিজাম, একজন মুতাযিলি আলেম ও হাদিসজ্ঞ, যিনি তাঁর সুন্দর ও প্রাঞ্জল ভাষার জন্য নিজাম নামে পরিচিত ছিলেন, বহু গ্রন্থে হযরত ফাতিমা (সা.আ.)-এর বাড়িতে আক্রমণের ঘটনা বর্ণনা করেছেন। তিনি লিখেছেন:
إِنَّ عُمَرَ ضَرَبَ بَطْنَ فاطِمَةَ يَوْمَ الْبَيْعَةِ حَتّى ألْقَتِ الْمُحْسِنَ مِنْ بَطْنِها
বাইআতের দিন উমর ফাতিমা (সা.আ.)-এর পেট প্রহার করেন, যার ফলে তাঁর গর্ভে থাকা সন্তান—যাকে মুহসিন নামে ডাক হয়েছিল—বাচ্চা নষ্ট অথবা গর্ভপাত হয়।

সালাহউদ্দিন জাহাবি তাঁর গ্রন্থ মিযানুল ই‘তিদাল-এ একই ঘটনার উল্লেখ করেছেন:
«عمر ضربه ای با پا بر حضرت زهرا (س) وارد کرد به گونه ای که موجب سقط جنینش گردید»
উমর পায়ের আঘাতে হযরত ফাতিমা (সা.আ.)-কে আঘাত করেছিলেন, যার ফলে তাঁর গর্ভস্থ সন্তান পতিত হয়।

শাহরিস্তানি তাঁর গ্রন্থ মিলাল ও নাহল-এ মুতাযেলি নিজামের বর্ণনা উদ্ধৃত করে লিখেছেন:
إن عمر ضرب بطن فاطمة يوم البيعة حتى ألقت الجنين من بطنها. و كان يصيح: احرقوا دارها بمن فيها، و ما كان في الدار غير عليّ و فاطمة و الحسن و الحسين
বাইআতের দিনে উমর ফাতিমা (সা.আ.)-এর পেটে আঘাত করেন, যার ফলে গর্ভস্থ সন্তান পতিত হয়। তিনি চিৎকার করেছিলেন: বাড়িটিকে এবং সেখানে যারা আছেন তাদেরকে জ্বালিয়ে ফেল!’ তখন ঘরে আর কেউ ছিলেন না—শুধু আলী (আ.), ফাতিমা (সা.আ.), হুসাইন ও হাসান।

এই বর্ণনাগুলো স্পষ্টভাবে দেখায়, হযরত ফাতিমা (সা.আ.)-এর প্রতি আঘাত ও গর্ভপাতের ঘটনা ইতিহাসের এক মর্মস্পর্শী অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। এই বর্ণনা সহ সকল সূত্র আমাদের ইতিহাস ও হাদিসের পাতায় সেই দুঃখজনক মুহূর্তের সাক্ষ্য বহন করে।

ইবনে আবিল হাদীদ তাঁর শারহে নাহজুল বালাগ গ্রন্থে এক হৃদয়বিদারক ঘটনার বর্ণনা করেছেন।

একদল মুশরিক নবী করিম ﷺ–এর সৎকন্যা জয়নাবের উটের পিছু নেয়। তাদের মধ্যে ছিল হাব্বার ইবন আসওয়াদ। যখন সে জয়নাবের হুদজের কাছে পৌঁছায়, বর্শা নিক্ষেপ করে আক্রমণ চালায়। জয়নাব তখন গর্ভবতী ছিলেন। হঠাৎ এই ভয়ঙ্কর আক্রমণে তিনি আতঙ্কিত হয়ে পড়েন, এবং মদীনায় পৌঁছার পর তাঁর গর্ভের সন্তান নষ্ট হয়ে যায়। নবী করিম ﷺ যখন এ সংবাদ জানতে পারেন, তিনি কঠোর নির্দেশ দেন: হাব্বারকে যেখানে পাও, হত্যা করো।

এই ঘটনার পর ইবনে আবিল হাদীদ তাঁর শিক্ষক আবু জাফরের মন্তব্য তুলে ধরেন। আবু জাফর বলেন: যদি রাসূলুল্লাহ ﷺ হাব্বার ইবন আসওয়াদের রক্ত মুবাহ ঘোষণা করেন—কারণ সে জয়নাবকে ভয় দেখিয়ে তাঁর গর্ভপাত ঘটিয়েছিল—তাহলে স্পষ্ট যে, যদি নবী করিম ﷺ জীবিত থাকতেন, তবে তিনি নিশ্চয়ই সেই ব্যক্তিদের রক্তও হালাল করতেন, যারা ফাতিমা (সা.আ.)–কে এমনভাবে ভয় দেখিয়েছিল যে তাঁর গর্ভের সন্তান নষ্ট হয়ে যায়।

ইবনে আবিল হাদীদ তখন জিজ্ঞেস করেন: “তাহলে কি আমি আপনার কাছ থেকে এই কথা বর্ণনা করতে পারি যে, কিছু লোক বলে—ফাতিমা (সা.আ.)–কে ভয় দেখানো হয়েছিল, ফলে তাঁর সন্তান মুহসিন গর্ভেই নষ্ট হয়ে যায়?

আবু জাফর উত্তর দেন: না, এটা আমার নামে বর্ণনা করো না—তবে এর মিথ্যাও আমার নামে বর্ণনা করো না।

এছাড়াও, সুন্নি মতাবলম্বী সমসাময়িক চিন্তাবিদ ও লেখক আবদুল ফাত্তাহ আবদুল মাকসুদ তাঁর গ্রন্থ الإمام علی (ইমাম আলী (আ.)–তে (১৯) হযরত ফাতিমা (সা.আ.)–এর গৃহে সংঘটিত সেই আক্রমণের ঘটনাবলি ও তার সূক্ষ্ম বিবরণ বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেছেন।

যাই হোক, হযরত ফাতিমা যাহরা (সা.আ.)–এর ঘরে হামলার বিষয়টি এমন এক বাস্তবতা, যা সম্পূর্ণ অস্বীকার করা কারও পক্ষেই সম্ভব নয়। এমনকি ওহাবী মতবাদের আধ্যাত্মিক জনক এবং শিয়া বিরোধীদের মধ্যে সবচেয়ে কঠোর সমালোচক হিসেবেও পরিচিত ইবনে তাইমিয়্যা—তিনি পর্যন্ত এই আক্রমণের মূল ঘটনা অস্বীকার করতে পারেননি। বরং তিনি ঘটনাটির জন্য এক হাস্যকর ব্যাখ্যা দাঁড় করানোর চেষ্টা করেন।

তিনি এক হাদীসের সমালোচনায় (যেখানে আবু বকর মৃত্যুর আগে নিজের কর্মকাণ্ড নিয়ে অনুতাপ প্রকাশ করেছেন— যার বিস্তারিত পরবর্তী অংশে আলোচনা করা হবে) এই ব্যাখ্যাটি দেন:
«وَغَايَةُ مَا يُقَالُ: إِنَّهُ كَبَسَ الْبَيْتَ لِيَنْظُرَ هَلْ فِيهِ شَيْءٌ مِنْ مَالِ اللَّهِ الَّذِي يُقَسِّمُهُ، وَأَنْ يُعْطِيَهُ لِمُسْتَحِقِّهِ»
(সবচেয়ে বেশি যা বলা যেতে পারে তা হলো— তারা (আক্রমণকারীরা) ফাতিমা (সা.আ.)–এর ঘরে প্রবেশ করেছিল এই উদ্দেশ্যে যে, সেখানে যদি বায়তুল মালের কোনো সম্পদ সংরক্ষিত থাকে, তবে তা উদ্ধার করে মানুষের মধ্যে ন্যায্যভাবে বণ্টন করবে!)

এই সব বর্ণনা ও ঐতিহাসিক প্রতিবেদন থেকে স্পষ্ট বোঝা যায়— কীভাবে হযরত সিদ্দিকা তাহেরা (সা.আ.) সেই মর্মান্তিক ঘটনার সময় অবমাননা ও আঘাতের শিকার হয়েছিলেন এবং পরিশেষে অত্যন্ত নিপীড়িত অবস্থায় শাহাদাত বরণ করেন।

এ ছিল এমন এক গভীর অবিচার, যার স্বীকারোক্তি এমনকি কিছু সুন্নি সূত্রেও পাওয়া যায়—যেখানে উল্লেখ আছে যে, প্রথম খলিফা মৃত্যুশয্যায় থাকাকালীন হযরত ফাতিমা (সা.আ.)–এর গৃহে হামলার জন্য গভীর অনুতাপ প্রকাশ করেছিলেন।

সুন্নি সূত্রে হযরত ফাতিমা (সা.আ.)–এর গৃহে আক্রমণ ও দরজা ভাঙার ঘটনায় আবু বকরের অনুতাপের প্রতিফলন
সুন্নি ঐতিহাসিক সূত্রগুলোতে বিভিন্ন যুগে বিস্তৃতভাবে উল্লেখ পাওয়া যায় যে, প্রথম খলিফা আবু বকর জীবনের শেষ সময়ে হযরত ফাতিমা (সা.আ.)–এর ঘরে হামলার জন্য গভীর অনুতাপ প্রকাশ করেছিলেন।

তাবারি তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ تاريخ الأمم والملوك (তারিখুল উমাম ওয়াল মুলুক)–এ ১৩ হিজরির ঘটনাবলি বর্ণনা করতে গিয়ে এভাবে লিখেছেন:
«قال أبو بكر رضي الله عنه: أَجَلْ إِنِّي لا آسَى عَلَى شَيْءٍ مِنَ الدُّنْيَا إِلَّا عَلَى ثَلَاثٍ فَعَلْتُهُنَّ وَوَدِدْتُ أَنِّي تَرَكْتُهُنَّ، وَثَلَاثٍ تَرَكْتُهُنَّ وَوَدِدْتُ أَنِّي فَعَلْتُهُنَّ، وَثَلَاثٍ وَدِدْتُ أَنِّي سَأَلْتُ عَنْهُنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وآله، أَمَّا الَّتِي وَدِدْتُ أَنِّي تَرَكْتُهَا، فَوَدِدْتُ أَنِّي لَمْ أَكْشِفْ بَيْتَ فَاطِمَةَ عَلَى شَيْءٍ، وَإِنْ كَانُوا غَلَّقُوهُ عَلَى الْحَرْبِ…»
আবু বকর মৃত্যুর পূর্ববর্তী দিনগুলোতে বলতেন: আমি দুনিয়ার কোনো বিষয় নিয়ে আফসোস করি না, শুধু তিনটি কাজ নিয়ে অনুতপ্ত—যা আমি করেছি, অথচ ইচ্ছা করি যেন তা না করতাম; তিনটি কাজ যা আমি করিনি, অথচ ইচ্ছা করি যেন তা করতাম; এবং তিনটি প্রশ্ন, যা আমি করতে চেয়েছিলাম, কিন্তু রাসূলুল্লাহ (সা.)–কে জিজ্ঞাসা করিনি।

যে তিনটি কাজ আমি করেছি অথচ কামনা করি যেন না করতাম—তার একটি হলো: ইচ্ছা করি, আমি ফাতিমার ঘরের দরজা না ভাঙতাম, যদিও তারা (ঘরের ভিতরে থাকা লোকেরা) আমার বিরুদ্ধে যুদ্ধের মনোভাব পোষণ করেছিল।

মাসউদির বর্ণনায় আবু বকরের মৃত্যুশয্যায় অনুতাপের স্বীকারোক্তি
ইতিহাসবিদ আবুল হাসান আল-মাসউদি তাঁর প্রসিদ্ধ গ্রন্থ مروج الذهب  (মুরুজুয্‌ জাহাব)–এ এ ঘটনাটি এভাবে উল্লেখ করেছেন:
وَ لَهُ كَلامٌ، وَلَمَّا احْتُضِرَ قَالَ: مَا آسَى عَلَى شَيْءٍ إِلَّا عَلَى ثَلَاثٍ فَعَلْتُهَا وَوَدِدْتُ أَنِّي تَرَكْتُهَا، وَثَلَاثٍ تَرَكْتُهَا وَوَدِدْتُ أَنِّي فَعَلْتُهَا، وَثَلَاثٍ وَدِدْتُ أَنِّي سَأَلْتُ رَسُولَ اللَّهِ ﷺ عَنْهَا.
فَأَمَّا الثَّلَاثُ الَّتِي فَعَلْتُهَا وَوَدِدْتُ أَنِّي تَرَكْتُهَا، فَوَدِدْتُ أَنِّي لَمْ أَكُنْ فَتَّشْتُ بَيْتَ فَاطِمَةَ، وَذَكَرَ فِي ذَلِكَ كَلَامًا كَثِيرًا…
আবু বকরের একটি উক্তি এ রকম ছিল যে, মৃত্যুশয্যায় তিনি বলেছিলেন: আমি দুনিয়ার কোনো বিষয় নিয়ে দুঃখিত নই, তবে তিনটি কাজের জন্য অনুতপ্ত—যা আমি করেছি অথচ কামনা করি যেন তা না করতাম; তিনটি কাজ যা আমি করিনি অথচ ইচ্ছা করি যেন তা করতাম; এবং তিনটি বিষয়ে ইচ্ছা করি, যদি রাসূলুল্লাহ ﷺ–কে সেগুলো সম্পর্কে প্রশ্ন করতে পারতাম। যে তিনটি কাজ আমি করেছি অথচ ইচ্ছা করি যেন না করতাম—তার একটি হলো: ইচ্ছা করি, আমি ফাতিমা (সা.আ.)–এর ঘর তল্লাশি না করতাম। এ বিষয়ে তিনি আরও অনেক কথা বলেছিলেন…)

মুত্তাকী হিন্দির বর্ণনায় আবু বকরের অনুতাপ এবং সুন্নি সূত্রে তার প্রতিফলন
আল্লামা মুত্তাকী আল-হিন্দি তাঁর প্রসিদ্ধ গ্রন্থ কানজুল উমাল كنز العمال–এ এই ঘটনার বিস্তারিত এভাবে উল্লেখ করেছেন:
عن عبدالرحمن بن عوف أن أبا بكر الصديق قال له في مرض موته: إني لا آسَى على شيءٍ إلا على ثلاثٍ فعلتُهن ووددتُ أني لم أفعلْهن، وثلاثٍ لم أفعلْهن ووددتُ أني فعلتُهن، وثلاثٍ وددتُ أني سألتُ رسولَ الله ﷺ عنهن، فأما اللاتي فعلتُها ووددتُ أني لم أفعلْها، فوددتُ أني لم أكن أكشفُ بيتَ فاطمةَ، وتركته، وإن كانوا غلقوه على الحرب…»
আবদুর রহমান ইবনে আউফ বর্ণনা করেন যে, আবু বকর সিদ্দীক মৃত্যুর অসুস্থতার সময় তাঁকে বলেছিলেন: আমি দুনিয়ার কোনো কিছু নিয়েই দুঃখিত নই, তবে তিনটি কাজের জন্য অনুতপ্ত—যা আমি করেছি অথচ ইচ্ছা করি যেন তা না করতাম; তিনটি কাজ যা আমি করিনি অথচ ইচ্ছা করি যেন করতাম; এবং তিনটি প্রশ্ন, যা আমি করতে চেয়েছিলাম, কিন্তু রাসূলুল্লাহ ﷺ–কে করতে পারিনি।

যে তিনটি কাজ আমি করেছি অথচ ইচ্ছা করি যেন না করতাম—তার একটি হলো: ইচ্ছা করি, আমি ফাতিমা (সা.আ.)–এর ঘরের দরজা না খুলতাম এবং তাঁকে ও তাঁর ঘরকে অক্ষত রাখতাম, যদিও তারা আমার বিরুদ্ধে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিয়েছিল।

পাদটীকা

১. আল-মুসান্নাফ ফি আল-আহাদীস ওয়াল-আসার, রচয়িতা: ইবন আবি শাইবা আল-কুফি (আবু বকর আবদুল্লাহ ইবন মুহাম্মদ)। গবেষণা ও সম্পাদনা: ইউসুফ আল-হুত ও কামাল। প্রকাশনা: মাকতাবাতুর রুশদ, রিয়াদ। প্রথম সংস্করণ, ১৪০৯ হিজরি। খণ্ড ৯, পৃষ্ঠা ৩২৩।

২. জামে’ আল-আহাদীস, রচয়িতা: জালালুদ্দিন সিউতি। প্রকাশনা: দারুল ফিকর, বৈরুত। ১৪১৪ হিজরি। খণ্ড ২৬, পৃষ্ঠা ৩৯৫।

৩. তারিখুল উমাম ওয়াল মুলূক (তারিখে তাবারি), রচয়িতা: আত্‌-তাবারি, আবু জাফর মুহাম্মদ ইবন জারির। সম্পাদনা: মুহাম্মদ আবুল ফাদল ইব্রাহিম। প্রকাশনা: দারুত্‌ তুরাস, বৈরুত। দ্বিতীয় সংস্করণ, ১৩৮৭ হিজরি। খণ্ড ৩, পৃষ্ঠা ২০২।

৪. আল-ইমামাহ ওয়াস সিয়াসাহ (তারিখুল খুলাফা), রচয়িতা: ইবন কুতাইবা আদ-দিনওয়ারি (আবু মুহাম্মদ আবদুল্লাহ ইবন মুসলিম)। সম্পাদনা: আলি শিরি। প্রকাশনা: দারুল আদওয়া, বৈরুত। প্রথম সংস্করণ, ১৪১০ হিজরি। খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ৩০।

৫. জামাল মিন আনসাবুল আশরাফ, রচয়িতা: আল-বালাধুরি (আহমদ ইবন ইয়াহইয়া ইবন জাবির)। সম্পাদনা: সুহাইল যাকার ও আল-রুজুকলি। প্রকাশনা: দারুল ফিকর, বৈরুত। ১৪১৭ হিজরি। খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ৫৮৬।

৬. আল-ইকদুল ফরিদ, রচয়িতা: ইবন আব্দ রাব্বিহ আল-আন্দালুসি (শিহাবুদ্দিন আহমদ ইবন মুহাম্মদ)। প্রকাশনা: দারুল কুতুবুল ইলমিয়্যাহ, বৈরুত। প্রথম সংস্করণ, ১৪০৪ হিজরি। খণ্ড ৫, পৃষ্ঠা ১৩।

৭. আল-ইস্তিয়াব ফি মারিফাতিল আসহাব, রচয়িতা: ইবন আবদুল বার আন-নুমাইরি আল-কুরতুবি (ইউসুফ ইবন আবদুল্লাহ)। সম্পাদনা: আলি মুহাম্মদ আল-বাজাওয়ি। প্রকাশনা: দারুল জীল, বৈরুত। প্রথম সংস্করণ, ১৪১২ হিজরি। খণ্ড ৩, পৃষ্ঠা ৯৭৫।

৮. শরহে নাহজুল বালাগা, রচয়িতা: ইবন আবি হাদিদ (আবদুল হামিদ ইবন হিবাতুল্লাহ)। সম্পাদনা: মুহাম্মদ আবুল ফাদল ইব্রাহিম। প্রকাশনা: মাকতাবা আয়াতুল্লাহ আল-মারআশি আন-নাজাফি, কুম। প্রথম সংস্করণ, ১৪০৪ হিজরি। খণ্ড ২, পৃষ্ঠা ৪৫।

৯. আল-মুখতাসার ফি তারিখিল বাশার, রচয়িতা: আবুল ফিদা (ইসমাইল ইবন আলি)। প্রকাশনা: দারুল মাআরিফ, বৈরুত। তারিখ অজানা। খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ১৫৬।

১০. মুসনাদে ফাতিমা (সা.আ.), রচয়িতা: জালালুদ্দিন সিউতি। প্রকাশনা: মুআসসাসাতুল কিতাব আস-সাকাফিয়্যাহ, বৈরুত। তারিখ অজানা। পৃষ্ঠা ৩৬।

১১. কানযুল উম্মাল ফি সুনানিল আকওয়াল ওয়াল আফআল, রচয়িতা: আলা উদ্দিন আল-মুতকী আল-হিন্দি (আলি ইবন হাসামুদ্দিন)। সম্পাদনা: বাকরি হিয়ানি। প্রকাশনা: মুআসসাসার রিসালাহ, বৈরুত। ১৪০১ হিজরি। খণ্ড ৫, পৃষ্ঠা ৬৫১।

১২. নিহায়াতুল আরব ফি ফুনুনিল আদব, রচয়িতা: আন-নুয়াইরি (আহমদ ইবন আবদুল ওয়াহাব)। প্রকাশনা: দারুল কুতুব ওয়াস সাওয়াইকুল কাওমিয়্যাহ,কায়রো। ১৯৭৫ খ্রিস্টাব্দ। খণ্ড ১৯, পৃষ্ঠা ৪০।

১৩. আলামুন নিসা, রচয়িতা: উমর রিদা কাহালাহ। প্রকাশনা: মুআসসাসার রিসালাহ, বৈরুত। ১৪০৪ হিজরি। খণ্ড ৪, পৃষ্ঠা ১১২।

১৪. আল-ইমামাহ ওয়াস সিয়াসাহ, একই গ্রন্থের পুনরায় উল্লেখ।

১৫. আল-ওয়াফি বিল ওফায়াত, রচয়িতা: আস-সাফাদি (সালাহুদ্দিন)। সম্পাদনা: আহমদ আল-আরনাউত ও তুরকি মুস্তফা। প্রকাশনা: দার ইহইয়াউত তুরাসিল আরাবি, বৈরুত। প্রথম সংস্করণ, ১৪২০ হিজরি। খণ্ড ৬, পৃষ্ঠা ১৫।

১৬. মিযানুল ই‘তিদাল ফি নাকদির রিজাল, রচয়িতা: আজ-জাহাবি (মুহাম্মদ ইবন আহমদ ইবন উসমান)। সম্পাদনা: আলি মুহাম্মদ আল-বাজাওয়ি। প্রকাশনা: দারুল মাআরিফ, বৈরুত। প্রথম সংস্করণ, ১৩৮২ হিজরি। খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ১৩৯।

১৭. আল-মিলাল ওয়ান নিহাল, রচয়িতা: আশ-শাহরাস্তানি (মুহাম্মদ ইবন আব্দুল কারিম)। সম্পাদনা: মুহাম্মদ বদরান। প্রকাশনা: মুআসসাসা আশ-শরিফ আর-রাদি, কোম। তৃতীয় সংস্করণ, ১৩৬৪ হিজরি شمسی। খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ৭১।

১৮. শারহে নাহজুল বালাগা, একই উৎস, খণ্ড ১৪, পৃষ্ঠা ১৯৩।

১৯. আল-মাজমু’আ আল-কামিলাহ: আল-ইমাম আলী ইবনে আবি তালিব (আ.), রচয়িতা: আবদুল ফাত্তাহ আবদুল মাকসুদ। প্রকাশনা: দারুস সাফওয়াহ, বৈরুত। ১৪৩১ হিজরি। খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ২২৯।

২০. মিনহাজুস সুন্নাহ আন-নাবাওয়িয়্যাহ ফি নাকদে কালামিশ শিয়াতিল কাদারিয়্যাহ, রচয়িতা: ইবন তাইমিয়্যা (তাকিয়্যুদ্দিন আহমদ ইবন আব্দুল হালিম)।

সম্পাদনা: মুহাম্মদ রাশাদ সালিম। প্রকাশনা: জামিয়াতুল ইমাম মুহাম্মদ ইবন সৌদ আল-ইসলামিয়্যাহ, রিয়াদ। প্রথম সংস্করণ, ১৪০৬ হিজরি। খণ্ড ৮, পৃষ্ঠা ২৯১।

২১. তারিখুল উমাম ওয়াল মুলূক (তারিখে তাবারি), একই গ্রন্থ, খণ্ড ৩, পৃষ্ঠা ৪৩০।

২২. মুরুজুয্‌ যাহাব, রচয়িতা: আল-মাসউদি (আলি ইবনুল হুসাইন)। প্রকাশনা: দারুল আন্দালুস, বৈরুত। ১৩৮৫ হিজরি। খণ্ড ২, পৃষ্ঠা ৩০১।

২৩. কানযুল উম্মাল ফি সুনানিল আকওয়াল ওয়াল আফআল, রচয়িতা: আল-মুতকী আল-হিন্দি (আলা উদ্দিন আলি ইবন হাসামুদ্দিন)। সম্পাদনা: বাকরি হিয়ানি ও সাফওয়াতুস সাকা। প্রকাশনা: মুআসসাসার রিসালাহ, বৈরুত। পঞ্চম সংস্করণ, ১৪০১ হিজরি। খণ্ড ৫, পৃষ্ঠা ৬৩১, হাদীস নং ১৪১১৩।

২৪. আল-মুজামুল কাবির, রচয়িতা: আত্‌-তাবরানি (সুলাইমান ইবন আহমদ)।

সম্পাদনা: হামদি ইবন আবদুল মজিদ আস-সালাফি। প্রকাশনা: মাকতাবাতু ইবন তাইমিয়্যা, কায়রো। দ্বিতীয় সংস্করণ, ১৪১৫ হিজরি। খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ৬২, হাদীস নং ৪৩।

২৫. আল-ইকদুল ফরিদ, একই গ্রন্থ, খণ্ড ৫, পৃষ্ঠা ২১।

২৬. মুখতাসার তারিখে দিমাশক (ইবন আসাকির), রচয়িতা: ইবন মানযুর আল-আনসারি (মুহাম্মদ ইবন মাকরিম)। সম্পাদনা: রিয়াদ আব্দুল হামিদ মুরাদ ও মুহাম্মদ মুতী। প্রকাশনা: দারুল ফিকর, দামেস্ক। প্রথম সংস্করণ, ১৪০২ হিজরি। খণ্ড ১৩, পৃষ্ঠা ১২২।

২৭. শারহে নাহজুল বালাগা, একই গ্রন্থ, খণ্ড ২০, পৃষ্ঠা ২৪।

২৮. তারিখুল ইসলাম ওয়া ওফায়াতুল মাশাহির ওয়াল আ’লাম, রচয়িতা: আজ-জাহাবি (মুহাম্মদ ইবন আহমদ ইবন উসমান)। সম্পাদনা: উমর আবদুস সালাম আত-তাদমুরি। প্রকাশনা: দারুল কিতাবুল আরাবি, বৈরুত। দ্বিতীয় সংস্করণ, ১৪১৩ হিজরি / ১৯৯৩ খ্রিস্টাব্দ। খণ্ড ৩, পৃষ্ঠা ১১৭।

২৯. মাজমাউয্‌ জাওয়াইদ ওয়া মাআদিনুল ফাওয়াইদ, রচয়িতা: আল-হাইসামি (নূরুদ্দিন আলি ইবন আবু বকর ইবন সুলাইমান)। সম্পাদনা: হুসামুদ্দিন আল-কুদসি। প্রকাশনা: মাকতাবাতুল কুদসি, কায়রো। ১৪১৪ হিজরি / ১৯৯৪ খ্রিস্টাব্দ। খণ্ড ৫, পৃষ্ঠা ২০৩।

৩০. লিসানুল মিজান, রচয়িতা: ইবন হাজর আল-আসকালানি (আহমদ ইবন আলি ইবন মুহাম্মদ)। সম্পাদনা: দায়েরাতুল মারিফ আন-নিজামিয়া, ভারত।

প্রকাশনা: মুআসসাসাতুল আ’লামি লিলমাতবুয়াত, বৈরুত। দ্বিতীয় সংস্করণ, ১৩৯০ হিজরি / ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দ। খণ্ড ৪, পৃষ্ঠা ১৮৯।

অনুবাদ: হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলিমিন ড. মুহাম্মাদ ফারুক হুসাইন

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha