হাওজা নিউজ এজেন্সি: হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলিমিন নাসের রাফিয়ি তাঁর এক বক্তৃতায় কুরআনের আলোকে জান্নাত ও আল্লাহর মাগফিরাতে পৌঁছানোর পথসমূহ বিষয়টি ব্যাখ্যা করেন।
তিনি বলেন, প্রায়ই একটি প্রশ্ন মানুষ তুলে থাকে— আমরা কী করলে আল্লাহ আমাদের ক্ষমা করবেন এবং জান্নাতে প্রবেশের সুযোগ দেবেন?
এর উত্তরে তিনি উল্লেখ করেন যে, পবিত্র কুরআন সূরা আলে-ইমরানের ১৩৩ নম্বর আয়াতে জান্নাত ও মাগফিরাতের ছয়টি পথ স্পষ্ট করে বর্ণনা করেছে।
আয়াতটি হলো—
وَسَارِعُوا إِلَیٰ مَغْفِرَةٍ مِنْ رَبِّکُمْ وَجَنَّةٍ عَرْضُهَا السَّمَاوَاتُ وَالْأَرْضُ أُعِدَّتْ لِلْمُتَّقِینَ؛ الَّذِینَ یُنْفِقُونَ فِی السَّرَّاءِ وَالضَّرَّاءِ وَالْکَاظِمِینَ الْغَیْظَ وَالْعَافِینَ عَنِ النَّاسِ ۗ وَاللَّهُ یُحِبُّ الْمُحْسِنِینَ
আর তোমরা তোমাদের প্রভুর ক্ষমা এবং সেই জান্নাতের দিকে দ্রুত অগ্রসর হও— যার বিস্তার আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর সমান; যা প্রস্তুত করা হয়েছে মুত্তাকিদের জন্য—যারা স্বচ্ছলতা ও অভাব— দুই অবস্থাতেই ব্যয় করে; যারা রাগ সংবরণ করে; এবং যারা মানুষের ভুলত্রুটি ক্ষমা করে। আর আল্লাহ সৎকর্মশীলদের ভালোবাসেন।
এর ব্যাখ্যায় তিনি জান্নাতের পথে পৌঁছানোর ছয়টি মূল দিকনির্দেশনা তুলে ধরেন—
১. তাকওয়া
নিজের প্রবৃত্তি, জিহ্বা, দৃষ্টি ও শ্রবণসহ সকল আচরণকে নিয়ন্ত্রণ করা। অর্থাৎ জীবনকে এমনভাবে পরিচালিত করা যাতে প্রতিটি কাজ আল্লাহর নির্দেশনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়।
২. ইনফাক (দান-সদকা)
আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য সম্পদ ব্যয় করা—সমৃদ্ধি কিংবা সংকট, উভয় অবস্থায়ই উদার হওয়া।
৩. রাগ নিয়ন্ত্রণ
কুরআনের ভাষায় “আল-কাজিমীনাল গাইয”—অতিমাত্রায় ক্রোধান্বিত হলেও নিজেকে সংবরণ করা এবং আবেগের অতল গহ্বরকে আচরণের ওপর ভর করতে না দেওয়া।
৪. ক্ষমাশীলতা
মানুষের ভুলত্রুটিকে ক্ষমা করা। যে হৃদয় ক্ষমা করতে পারে সে-ই আল্লাহর বিশেষ প্রিয়।
৫. ইহসান ও মানবকল্যাণ
ব্যক্তিগত জীবন থেকে সামাজিক পরিসর পর্যন্ত—ভাল কাজ, সৎ উদ্যোগ ও সুন্দর আচরণে নিজেকে সম্পৃক্ত রাখা। ইহসানই মানুষকে আল্লাহর নৈকট্যের পথে নিয়ে যায়।
৬. তওবা ও ইস্তেগফার
যখনই কোনো পাপ বা ভুল আচরণ ঘটে— অবিলম্বে আল্লাহর দিকে ফিরে আসতে হবে। ইস্তেগফারই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে।
অনুবাদ: হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলিমিন ড. ফারুক হুসাইন
আপনার কমেন্ট