হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, হাওজা-ই-ইলমিয়ার পরিচালক আয়াতুল্লাহ আলিরেজা আ’রাফি, তাফসির শিক্ষকদের সাথে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে, হযরত ফাতিমা যাহরা (সা.আ.)-এর পবিত্র জন্মদিন এবং ইমাম খোমেইনি (রহ.)-এর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, এই মহান দিনগুলোকে যথাযথভাবে স্মরণ রাখা এবং দুই জগতের এই মহীয়সী নারীর মর্যাদা রক্ষা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
হযরত যাহরা (সা.আ.)-এর সম্মান রক্ষার আহ্বান ও অজ্ঞতাপূর্ণ বক্তব্যের নিন্দা
হাওজা-ই-ইলমিয়ার পরিচালক বলেন, হযরত ফাতিমা যাহরা (সা.আ.)-এর পবিত্র মর্যাদা সম্পর্কে যে কোনো অবিবেচনাপ্রসূত বা অশালীন মন্তব্য-বিশেষত অজ্ঞ বা অল্পশিক্ষিত ব্যক্তিদের কাছ থেকে এলে-তা অত্যন্ত দুঃখজনক।
তিনি জোর দিয়ে বলেন: আমাদের সকলের দায়িত্ব হলো উম্মুল আইম্মা ও আল্লাহর অসীম গুণমহিমার উৎস এই মহীয়সী মর্যাদার রক্ষায় জ্ঞানভিত্তিক, প্রজ্ঞাপূর্ণ ও সাহসী ভূমিকা রাখা।
ইমাম খোমেইনি (রহ.)- ইসলামী চিন্তার প্রজ্বলিত সূর্য
হাওজা-ই-ইলমিয়ার উচ্চ পরিষদের এই সদস্য বলেন: ইমাম খোমেইনি (রহ.)-এর মহত্ব এমন এক দীপ্তিমান সূর্যের মতো, যার তুলনা শতাব্দীর পর শতাব্দী সহজে পাওয়া যাবে না। তিনি বিশ্বমঞ্চে ইসলামের পতাকা উঁচু করেছিলেন এবং ধর্মীয় জীবন ও সভ্যতার নবজাগরণ সৃষ্টি করেছিলেন।
ইমাম (রহ.)-এর জন্মদিন হলো এমন এক মহান আন্দোলনের জন্মস্মৃতি, যা বিপুল পরিবর্তন ও সভ্যতার ভিত্তি স্থাপন করেছে।
শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা এবং বিপ্লবের মৌলিক সম্পদগুলোর স্মরণ
আয়াতুল্লাহ আ’রাফি বলেন, শহীদদের স্মৃতি জাতির কাছে অমূল্য।
তিনি মহান শহীদগণ, পবিত্র প্রতিরক্ষা যুদ্ধের শহীদ, সাম্প্রতিক দুই বছরের শহীদ এবং ৫,০০০-এরও বেশি হাওজা-ই-ইলমিয়ার শহীদদের স্মরণ করেন।
তার ভাষায়: শহীদদের এ উজ্জ্বল সমষ্টিই আমাদের মূল ভিত্তি; ইমাম (রহ.) ও শহীদরা বিপ্লবের প্রকৃত সম্পদ।
তিনি আরও বলেন, হাওজা-ই-ইলমিয়া সর্বোচ্চ নেতার অব্যাহত দিকনির্দেশনা ও সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞ। একইসঙ্গে মারাজা-দের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান, যাঁরা হচ্ছেন হাওজার প্রধান পথপ্রদর্শক।
হাওজায় কোরআনিক বিকাশের নতুন অগ্রগতি
আয়াতুল্লাহ আ’রাফি, তাফসির শিক্ষকদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন:
কোরআনিক কাফেলায় আমরা বহু ইতিবাচক অগ্রগতি দেখছি-তরুণ মেধাবী গবেষক থেকে শুরু করে বিশিষ্ট অধ্যাপকদের নতুন উদ্যোগ ও অভিনব গবেষণা।
তিনি বিপ্লব-পরবর্তী কোরআনিক অগ্রগতির চারটি প্রধান ক্ষেত্র উল্লেখ করেন-
১. শত শত উচ্চস্তরের কোরআনিক শিক্ষা ও গবেষণা কেন্দ্র আজ সক্রিয়।
২. দশকের পর দশক ধরে বিশেষায়িত জার্নাল, হাজারো প্রবন্ধ ও শত শত থিসিস প্রস্তুত হয়েছে।
৩. অসংখ্য কোরআনিক সফটওয়্যার এবং বহু ধারাবাহিক ও বিষয়ভিত্তিক তাফসির গ্রন্থ রচিত হয়েছে।
৪. কোরআন অনুবাদ ও তাফসির আজ বিশ্বের বহু ভাষায় বিস্তৃত হয়েছে।
তিনি বলেন, এসব অগ্রগতি বিপ্লব-পূর্ব যুগে ছিল না; এটি ইসলামি বিপ্লব ও শিক্ষকদের-ছাত্রদের নিরলস প্রচেষ্টারই বরকত।
কোরআন-বিশ্বের একমাত্র অকৃত্রিম আসমানি গ্রন্থ
হাওজা-ই-ইলমিয়ার উচ্চ পরিষদের এই সদস্য বলেন: ঐতিহাসিক গবেষণায় স্পষ্ট, বিশ্বের কোনো গ্রন্থ দাবি করতে পারে না যে তা পুরোপুরি বিকৃতি-মুক্ত অবস্থায় আসমান থেকে পৌঁছেছে।
শুধুমাত্র কোরআনই একমাত্র বিকৃতিহীন, স্বচ্ছ ও অক্ষত আসমানি গ্রন্থ-এবং এর জন্য আমাদের কাছে স্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, কোরআন হলো সৃষ্টিজগতের আইন (تکوین) ও বিধানব্যবস্থা (تشریع)— উভয়েরই আয়না।
তিনি উল্লেখ করেন, নাহজুল বালাগায় কোরআনের মহত্ব নিয়ে পঞ্চাশেরও বেশি অনন্য বর্ণনা এসেছে, যেগুলোর প্রতিটি নিয়ে আলাদা আলোচনা প্রয়োজন।
আপনার কমেন্ট