শুক্রবার ১২ ডিসেম্বর ২০২৫ - ১৭:১১
স্বামীর সহায়তা মায়ের শান্তি ও পারিবারিক স্থিতি নিশ্চিত করে

মাশহাদে খোরাসান হাউজার সাংস্কৃতিক–প্রচার উপদফ্তরের অধীন পরিবার পরামর্শ কেন্দ্রের বিশেষজ্ঞ হামিদেহ নিয়াজি বলেন, মা–এর ভূমিকা পরিবারে অতুলনীয়ভাবে গুরুত্বপূর্ণ, যা মনোবিজ্ঞান ও ইসলামি শিক্ষা উভয় ক্ষেত্রেই বিশেষ মর্যাদাপ্রাপ্ত।

হাওজা নিউজ এজেন্সি: তিনি জানান, আধুনিক মনোবিজ্ঞানে প্রমাণিত যে মা শিশুর প্রথম আবেগিক ও আচরণগত রোল মডেল, যার প্রভাব সন্তানের মানসিক স্বাস্থ্য, আত্মবিশ্বাস, ব্যক্তিত্ব–বিকাশ এবং পরবর্তী আচরণে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলে।

জনাবা নিয়াজি আরও বলেন, ইসলামি শিক্ষায়ও মা–এর মর্যাদা অত্যন্ত উচ্চারিত; নবী করিম (সা.)–এর বাণী “মায়ের পায়ের নিচেই জান্নাত”—এ কথাই প্রমাণ করে যে প্রজন্ম–গঠনে মায়ের ভূমিকা কতটা অনন্য ও অপরিবর্তনীয়।

একজন সফল মায়ের মনোবৈজ্ঞানিক গুণাবলি
তিনি বলেন, একজন মায়ের উচিত—ধৈর্য, সহনশীলতা, মমত্ববোধ ও সদাচরণকে শক্তিশালী করা। নিজের আবেগ নিয়ন্ত্রণে সক্ষম হওয়া এবং সন্তানের আবেগও দক্ষতার সঙ্গে পরিচালনা করা

তিনি উল্লেখ করেন, যখন শিশু উদ্বেগ বা রাগে আক্রান্ত হয়, তখন মায়ের শান্ত স্বভাব, সক্রিয়ভাবে শোনা ও সহমর্মিতা শিশুকে নিরাপত্তা ও স্থিতির অনুভূতি দেয়।

তিনি বলেন, পরিবারে নিয়ম–শৃঙ্খলা, স্পষ্ট কাঠামো ও পূর্বানুমেয় পরিবেশ গড়ে তোলা শিশুদের আত্মবিশ্বাস ও মানসিক স্থিতি তৈরির একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।

মায়ের মানসিক সুস্থতা ও ভারসাম্য রক্ষার উপায়
তিনি জানান, দৈনন্দিন বহু দায়িত্বের চাপে মায়েরা প্রায়ই নিজেদের যত্ন নিতে ভুলে যান। তাঁর পরামর্শ—প্রতিদিন কিছু সময় নিজের জন্য নির্ধারণ করা।

• নামাজ, দোয়া ও  আধ্যাত্মিক চর্চার মাধ্যমে অন্তরকে শান্ত রাখা
• স্বামী ও পরিবারের সঙ্গে উদ্বেগ–চিন্তা নিয়ে খোলামেলা আলাপ করা
• স্ট্রেস ব্যবস্থাপনার দক্ষতা অর্জন করা
•গভীর শ্বাস–প্রশ্বাস, প্রশান্তি–চর্চা ও ধর্মীয়ভাবে গ্রহণযোগ্য ধ্যান–অনুশীলন করা

স্বামীর সহযোগিতা—মায়ের প্রশান্তির মূল স্তম্ভ
নিয়াজি জোর দিয়ে বলেন, স্বামীর সহায়তা ও মূল্যায়ন মা–এর মানসিক শক্তির বড় উৎস। ঘরকর্ম ও সন্তান লালন–পালনে স্বামীর অংশগ্রহণ মাকে আত্মবিশ্বাস দেয় এবং মাতৃত্বের দায়িত্ব পালনে তার উদ্যম বাড়ায়।

তিনি আরও বলেন, ইসলামও স্বামী–স্ত্রীর পারস্পরিক সম্মান, সহযোগিতা ও ভালোবাসাকে পরিবার–পরিবেশকে শান্তিপূর্ণ ও স্থিতিশীল করার প্রধান উপাদান হিসেবে তুলে ধরে—আর এমন পরিবেশেই সন্তানদের সুষম বিকাশ সম্ভব।

মা–দের প্রতি বিশেষ পরামর্শ
তরুণ মা–দের উদ্দেশে তিনি বলেন, কেউই নিখুঁত নয়; ভুল শেখারই অংশ। সৎ নিয়ত, আল্লাহর ওপর ভরসা এবং ধারাবাহিক উন্নতির মনোভাব একজন মাকে তার সর্বোত্তম রূপে পৌঁছাতে সাহায্য করে।

তিনি আরও বলেন—ধর্মীয় ও মনোবৈজ্ঞানিক শিক্ষা অধ্যয়ন, পারিবারিক পরামর্শ গ্রহণ, এবং সামাজিক সহায়তা ব্যবস্থার ব্যবহার মাতৃত্বকে আরও দক্ষ, সচেতন ও সমৃদ্ধ করে।

সাক্ষাৎকারের শেষে তিনি বলেন, মা ও সন্তানের মাঝে ভালোবাসাপূর্ণ ও ঘনিষ্ঠ সম্পর্কই একটি সফল ও সুস্থ পরিবারের ভিত্তি।

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha