হাওজা নিউজ এজেন্সি: পবিত্র কুরআনের সূরা আলে ইমরান (১৪৬–১৪৮ নং আয়াত)-এ রাব্বিয়্যুন—অর্থাৎ আল্লাহভীরু ধর্মীয় জ্ঞানী ব্যক্তিদের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, যারা নবীদের সঙ্গে সংগ্রামে অংশ নিয়েছিলেন। আয়াতগুলোতে বলা হয়েছে, তারা কঠিন পরিস্থিতির মুখে দুর্বল হয়ে পড়েননি কিংবা হাল ছেড়ে দেননি; বরং নিজেদের ভুল ও পাপের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন এবং ধৈর্য ও অবিচলতার জন্য দোয়া করেছেন।
তাদের দোয়া ছিল— “হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের পাপসমূহ এবং আমাদের কাজের সীমালঙ্ঘন ক্ষমা করে দিন, আমাদের পদচারণা দৃঢ় রাখুন এবং অবিশ্বাসীদের বিরুদ্ধে আমাদের বিজয় দান করুন।” (সূরা আলে ইমরান, ৩:১৪৭)
এখানে বিশেষভাবে লক্ষণীয় যে, তারা বিজয় ও সাহায্য প্রার্থনার পূর্বে প্রথমেই ক্ষমা প্রার্থনা (ইস্তিগফার) করেছেন। এর মাধ্যমে স্পষ্ট হয় যে, আল্লাহর সাহায্য লাভের ভিত্তি হলো তাঁর নিকট আন্তরিক ক্ষমা প্রার্থনা।
পরবর্তী আয়াত (১৪৮)-এ আল্লাহ তাআলা জানান যে, তিনি তাদেরকে দুনিয়া ও আখিরাত—উভয় জীবনে পুরস্কৃত করেছেন। দুনিয়ার পুরস্কার ছিল মিশ্র—যেখানে ছিল সুখ যেমন, তেমনি ছিল কিছু কষ্টও। আখিরাতের পুরস্কার হবে সম্পূর্ণ কল্যাণকর, নিখুঁত ও ত্রুটিমুক্ত।
আরেকটি দৃষ্টান্ত পাওয়া যায় পবিত্র কুরআনের সূরা আল-বাকারা (৫৮ নং আয়াত)-এ। সেখানে হযরত মূসা (আ.)-এর যুগে বনি ইসরাইলদেরকে বিনয়ের সঙ্গে একটি নগরে (জেরুজালেমে) প্রবেশ করতে এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল— “তোমরা দরজা দিয়ে সেজদাবনত অবস্থায় প্রবেশ করো এবং বলো, হিত্তাহ (ক্ষমা)। তাহলে আমরা তোমাদের পাপ ক্ষমা করে দেব এবং সৎকর্মশীলদের জন্য আরও অধিক দান করব।”
হিত্তাহ শব্দের অর্থ হলো ‘অপসারণ করা’ বা ‘ঝরিয়ে দেওয়া’। এখানে এর দ্বারা বোঝানো হয়েছে—আল্লাহর কাছে পাপ মোচনের আবেদন। এটি স্পষ্টভাবে প্রমাণ করে যে, ইস্তিগফারই আল্লাহর রহমত ও পুরস্কার লাভের একটি মৌলিক শর্ত।
আপনার কমেন্ট