হাওজা নিউজ বাংলা রিপোর্ট অনুযায়ী: সৈয়দ ইব্রাহিম খলিল রিজভী উক্ত বিষয় সম্পর্কে বলেন: পর্ব ৩- উপরোক্ত আয়াতসমূহ থেকে স্পষ্ট হয়ে যে, যা শরীয়তে নেই তাকে শরীয়তের রূপ দেয়া,আল্লাহর প্রতি মিথ্যা আরোপ করা এবং আল্লাহর প্রতি অবিচার করার সমতুল্য হবে। কিন্তু প্রশ্ন হলো কোন ‘মুবাহ’ কর্ম যদি সম্পাদন করা হয় এবং ঐ কর্মকে ওয়াজিব, মুস্তাহাব,মাকরূহ এবং হারাম আখ্যায়িত না করা হয় তাহলেও কী ওই কর্ম শরীয়তের দৃষ্টিতে বিদ্’আত বলে গণ্য হবে এবং আল্লাহর প্রতি মিথ্যা আরোপ করা হবে? নিশ্চয় না। যে কর্ম বিদ’আতে শারয়ী ও ফিকাহশাস্ত্রের সজ্ঞায় খারিজ বা নাকচ করা হয়েছে তা যদি সম্পাদন করা হয় তাহলে ওই কর্মটি ‘বিদ্’আত’ বলে গণ্য হবে না। কারণ শরিয়তের বিধানদাতা শরিয়তের বিস্তারিত তালিকা বর্ণনা করেছেন , হারাম ও হালালের মূল নীতিসমূহ স্পষ্ট করে দিয়েছেন।
যদি তালিকায় না-ও থাকে সে ক্ষেত্রে নীতিসমূহের উপর ভিত্তি করে তা পরখ করা যেতে পারে। “লা যারারা,ওয়ালা যারারা ফিল ইসলাম ” لا ضرر و لاضرار فی الاسلام ( کافی جلد ৫ ص ২৯২) অর্থাৎ ক্ষতি বা ক্ষতিসাধন করার কোন অনুমতি নেই। (কাফি খঃ ৫, পৃঃ ২৯২)।
এটি একটি মানদন্ড। শরীয়ত এবং শরীয়তের ফকীহগণ এমন ধরণের অনেক মাপকাঠি বর্ণনা করেছেন। রাসূল (সাঃ)-এর একটি হাদিস যা বার বার বর্ণনা করা হয়ে থাকে যে, তিনি (সাঃ) ইরশাদ করেন-“কোন কিছু আবিষ্কার করা পাপ এবং নুতন কিছু আবিস্কার ‘বিদ্’আত’ বলে গণ্য আর বিদ’আত হচ্ছে পথভ্রষ্টতা এবং পথভ্রষ্টের ঠিকানা জাহান্নাম”।
আলোচ্য হাদিসে ‘নুতন আবিষ্কার’ বলতে এখানে সকল নুতন আবিষ্কারকে বুঝানো হয়নি বরং ওই সকল আবিষ্কারকে বুঝানো হয়েছে যা দ্বীনের বা শরীয়তের নামে করা হয়। দ্বীনের অন্তর্ভূক্ত নয় এমন কোন কাজ দ্বীনের নামে যদি করা হয়ে থাকে তাহলে স্পষ্টতই উক্ত কাজ ‘বিদ্’আত’ বলে গণ্য এবং তা হবে পথভ্রষ্টতা। কোন মুস্তাহাব নামাজ যা জামাতের সাথে আদায় করার অনুমতি নেই যদি জামাতে আদায় করা হয় তা হবে ‘বিদ্’আত’। কেননা এ কর্মটিও “ইদখালা মা লাইসা” شرالامور محدثاتها و کل محدثة بدعت و کل بدعت ضلالة و کل ضلالة فی النار. অর্থাৎ দ্বীনে অন্তর্ভূক্ত নয় এমন কিছু দ্বীনের মধ্যে প্রবিষ্ট করার ন্যায়।
‘বিদ্’আত’ কর্মকে যতই বিদ্’আতে হাসনাহ অর্থাৎ উত্তম বিদ’আত বলা হোক না কেন শরীয়তের পরিভাষায় বিদ্’আত বলেই গণ্য হবে। উত্তম বা মন্দ বিদ্’আতের কোন অনুমতি নেই, কিন্তু তা যদি রাসূল (সাঃ)-এর হাদীস (ক্বাত্তল), কর্ম (ফেল) এবং তাক্বরীরে (আল্লাহর নবীর (সাঃ) উপস্থিতিতে যে সকল কর্ম সম্পাদন করা হয়েছে) পাওয়া যায় অথবা আমাদের ইমাম (আঃ) গণের ক্বাওল, ফেল ও তাক্বরীরে পাওয়া যায় তাহলে ম্স্তুাহাব কর্মকে মুস্তাহাব হিসেবে, ওয়াজিব কর্মকে ওয়াজিব হিসেবেই সম্পাদন করতে হবে। এখানে পরিবর্তন বা রূপান্তরের কোন অনুমতি নেই। ইজতিহাদের নামে শরীয়তের আহকামসমূহের পরিবর্তনের কোন সুযোগ নেই। কেননা কুরআন ও সুন্নাতের সাহায্যে আহকাম বা বিধি-বিধান সমূহের উন্মোচন করার নাম হচ্ছে ইজতিহাদ, আবিষ্কার করা নয়। সমাপ্ত
আপনার কমেন্ট