হাওজা নিউজ বাংলা রিপোর্ট অনুযায়ী, ২৭ রজবের রাত মহানবীর ( সা . ) নুবুওয়াতের ঘোষণা ও দ্বীন প্রচারের দায়িত্ব সহ মানব জাতির কাছে প্রেরিত হওয়া অর্থাৎ মাব'আসের রজনী । আর এ রাত ইসলামের মুবারক রাত সমূহের অন্তর্ভুক্ত এবং এ রাতের বেশ কিছু আমল আছে । ২৭ রজবের প্রভাতে মহানবীর ( সা .) মাব'আস অর্থাৎ নুবুওয়ত ও রিসালতের ঘোষণা দেয়া হয় ( অর্থাৎ মহান আল্লাহ হযরত মুহাম্মদকে সা. নুবুওয়ত ও রিসার্চ প্রচারের দায়িত্ব দিয়ে মানবজাতির কাছে প্রেরণ করার ঘোষণা দেন )। আহলুল বাইতের ( আ.) অনুসারীদের মধ্য থেকে যে কেউ এ রাতে আমল করবে তার জন্য ষাট বছর ধরে আমল করার সওয়াব দেয়া হবে । এ রাতের আমল সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে ইমাম সাদিক্ব ( আ.) বললেন : ইশার নামায পড়ার পর বিছানায় শুয়ে যাবে ও ঘুমিয়ে নেবে ; তোমার ইচ্ছানুযায়ী মধ্যরাত্রি হওয়ার আগেই যে কোনো সময় ঘুম থেকে জেগে যাবে । এরপর ১২ রাকাত নামায পড়বে এ নিয়মে যে প্রতিটি রাকাতেই সূরা - ই হামদ এবং সূরা - ই মুহাম্মাদ থেকে পবিত্র কুরআনের শেষ পর্যন্ত দীর্ঘ ও নাতিদীর্ঘ সূরা সমূহের মধ্য থেকে যে কোনো একটি সূরা ক্বিরাআত করবে অত:পর যখন দু রাকাত নামাযের সালাম দিবে এবং এ ভাবে যখন ঐ বারো রাকাত নামায শেষ করবে তখন সালামের পর বসবে এবং ৭ বার সূরা - ই হামদ , মুআওওয়িযাতাইন্ ( সূরা - ই ফালাক্ব্ ও সূরা - ই নাস প্রতিটি ) ৭ বার , সূরা - ই ইখলাস ৭বার , সূরা - ই ক্বুল্ ইয়া আইয়ুহাল্ কাফিরূন্ ৭বার , সূরা - ই ক্বদর ৭ বার , আয়াতুল কুরসি ৭ বার এবং এ সব সূরা ও আয়াত ক্বিরাআতের পর নিম্নোক্ত দুআ পাঠ করবে :
لَمْ یَتَّخِذْ وَلَدَاً وَ لَمْ یَکُنْ لَّهُ شَرِیْکٌ فِي
الْمُلْکِ وَ لَمْ یَکُنْ لَّهُ وَلِيٌّ مِّنَ الذُّلِّ وَ کَبِّرْهُ
تَکْبِیْرَاً اَللّٰهُمَّ إِنِّيْ أَسْأَلُکَ بِمَعَاقِدِ عِزِّکَ
عَلَیٰ أَرْکَانِ عَرْشِکَ وَ مُنْتَهَی الرَّحْمَةِ مِنْ
کِتَابِکَ وَ بِاسْمِکَ الْأَعْظَمِ الْأَعْظَمِ الْأَعْظَمِ
وَ ذِکْرِکَ الْأَعْلَی الْأَعْلَی الْأْعْلَیٰ وَ
بِکَلِمَاتِکَ التَّامَّاتِ أَنْ تُصَلِّيَ عَلَیٰ مُحَمَّدٍ وَ
آلِهِ وَ أَنْ تَفْعَلَ بِيْ مَا أَنْتَ أَهْلُه.
অত:পর তুমি যে দুআটি পড়তে চাও তা পড়বে ।
২. এ রাতে গোসল করা মুস্তাহাব
এবং ১৫ রজবের রাতে যে নামায
পড়া হয় তা এ রাতেও পড়া যাবে ;
৩. ইমাম আমীরুল মু'মিনীন আলীর (আ :) যিয়ারত এ রাতের সর্বশ্রেষ্ঠ আমল । আর এ রাতে হযরত আলীর ( আ : ) ৩টি যিয়ারত বর্ণিত হয়েছে ।
৪ . কাফ'আমী বালাদুল আমীন গ্রন্থে বলেছেন যে মাব'আসের রাতে নিম্নোক্ত দুআটি পাঠ করা হয় দুআটি :
اَللّٰهُمَّ إِنِّيْ أَسْأَلُکَ بِالتَّجَلِّي الْأَعْظَمِ فِيْ
هٰذِهِ اللَّیْلَةِ مِنَ الشَّهْرِ الْمُعَظَّمِ وَ الْمُرْسَلِ
الْمُکَرَّمِ أَنْ تُصَلِّيَ عَلَیٰ مُحَمَّدٍ وَ آلِهٖ وَ أَنْ
تَغْفِرَ لَنَا مَا أَنْتَ بِهٖ مِنَّا أَعْلَمُ یَا مَنْ یَعْلَمُ
وَ لَا نَعْلَمُ .......
দ্র : মাফাতীহুল জিনান , পৃ : ২৭২ - ২৭৪
এ দুইটি পাঠ করার সিজদা করবে এবং সিজদায় ১০০ বার বলবে :
اَلْحَمْدُ لِلّٰهِ الَّذِيْ هَدَانَا لِمَعْرِفَتِهِ وَ خَصَّنَا
بِوِلَایَتِهٖ وَ وَفَّقَنَا لِطَاعَتِهٖ شُکْرَاً شُکْرَاً
এরপর সিজদা থেকে মাথা তুলে নিম্নোক্ত দুআ পড়বে :
اَللّٰهُمَّ إِنِّيْ قَصَدْتُّکَ بِحَاجَتِيْ وَ اعْتَمَدْتُّ
عَلَیْکَ بِمَسْأَلَتِيْ وَ تَوَجَّهْتُ إِلَیْکَ بِأَئِمَّتِيْ
وَ سَادَتِيْ اَللّٰهُمَّ انْفَعْنَا بِحُبِّهِمْ وَ أَوْرِدْنَا
مَوْرِدَهُمْ وَ ارْزُقْنَا مُرَافَقَتَهُمْ وَ أَدْخِلْنَا
الْجَنَّةِ فِيْ زُمْرَتِهِمْ
আর এ দুআটি সাইয়েদ মাব'আস দিবসের ( ২৭ রজব ) জন্যও উল্লেখ করেছেন ।
২৭ রজব মাব'আস দিবসের কতিপয় আমল :
১. গোসল
২. রোযা রাখা : এ দিবসটি সমগ্র বছরের বিশেষ বৈশিষ্ট্য ও মর্যাদা সম্পন্ন ৪ দিবসের অন্তর্ভুক্ত এবং এ দিনের রোযা ৭০ বছরের রোযার সমান ।
৩. বেশী বেশী দরূদ ও সালাত প্রেরণ
৪. হযরত রাসূলুল্লাহ ( সা .) ও হযরত আমীরুল মু'মিনীন আলীর
( আ . ) যিয়ারত করা
৫. ইমাম জাওয়াদ ( আ . ) যখন বাগদাদে ছিলেন তখন তিনি ১৫ রজব ও ২৭ রজব রোযা রাখতেন , তাঁর সকল কর্মচারীরাও তাঁর নির্দেশে রোযা রাখত । আমাদেরকে
১২ রাকাত নামায পড়ার আদেশ দিয়েছেন রসূল্লাহ ( সা :) ঠিক এ ভাবে যে , প্রতি রাকাতে সূরা ই হামদ্ ও যে কোনো একটি সূরা পড়বে এবং নামাযের পর সূরা - ই হামদ , সূরা - ই ইখলাস এবং মুওয়াওওয়িযাতাইন ( সূরা - ই ফালাক ও সূরা -ই নাস ) প্রতিটি ৪ বার পড়বে
এরপর ৪বার পড়বে : লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ ওয়াল্লাহু আকবার ওয়া সুবহানাল্লাহি ওয়াল হামদু লিল্লাহি ওয়া লা হাওলা ওয়া লা ক্বুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহিল্ আলীয়িল্ আযীম্ ।
এরপর ৪ বার পড়বে : আল্লাহ আল্লাহ রব্বী রা উশরিকু বিহী শাইয়াঁ ।
এরপর ৪ বার পড়বে : লা উশরিকু বিরব্বী আহাদাঁ
لَا أُشْرِکُ بِرَبِّيْ أَحَدَاً .
৬. এ দিন ১২ রাকাত নামায পড়া এভাবে যে প্রতি রাকাতে সূরা - ই হামদ ( ফাতিহা ) ও যে কোনো একটি সূরা পড়তে হবে দ্বিতীয় রাকাত শেষে তশাহহুদ পাঠ করে সালাম দিতে হবে ; এরপর বসে নিম্নোক্ত দুআটি পড়তে হবে :
আল - হামদু লিল্লাহিল্লাযী লাম্ ইয়াত্তাখিয্ ওয়ালাদাও ওয়া লাম্ ইয়াকুল্লাহু শারীকুন্ ফিল্ মুলক্ ...... ( মাফাতীহুল জিনান , পৃ : ২৭৮ দ্র:৮ )
আপনার কমেন্ট