হাওজা নিউজ বাংলা রিপোর্ট অনুযায়ী, মিশরের অধিবাসী ড. মাজদী ক্বোরআনের মাধ্যমে আহলে বাইতের বারজন ইমামের প্রমাণ উপস্থাপন করেছেন। তিনি আল আযহার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। তিনি তার এক গবেষণায় বার সংখ্যার ব্যাপারে যে আশ্চর্যজনক ফলাফলে পৌছেছেন তা বিশ্ববাসীকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। পরিশেষে এ কারণে তিনি নিজেই পবিত্র বার ইমামের অনুসারী হয়ে গেছেন, সুবহানাল্লাহ।
জেনে রাখা দরকার যে, কোরআনুল কারিমে কোন সংখ্যার বর্ণনা ও হিসাব কোন কারণ ছাড়াই হয় নাই। বরং তা একটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যের দিকে দিক নির্দেশনা দিয়েছে। দৃষ্টান্তস্বরূপ ইয়াওম (یوم) বা দিন কোরআনুল কারিমে ৩৬৫ বার পুনরাবৃত্তি হয়েছে যা এক বত্সরের দিনের সংখ্যার সমান। অথবা শাহ্র (شهر) বা মাস কোরআনুল কারিমে ১২ বার পুনরাবৃত্তি হয়েছে যা এক বত্সরের মাসের সংখ্যার সমান। এরকম আরো উদাহরণ বিদ্যমান।
ড. মাজদী উপরোক্ত তথ্যের সাহায্যে তার গবেষণা চালিয়ে নিম্নলিখিত ফলাফলে উপণীত হয়েছেন যে,
ইমাম শব্দ বার (১২) বার এসেছে যা আহলে বাইতের ইমামদের সংখ্যার সমান।
ইমাম শব্দ নিচের আয়াতসমূহে উল্লেখিত হয়েছেঃ
আল বাক্বারা- ১২৪
আত তাওবা- ১২
হুদা- ১৭
আল ইসরা/বানিয়ে ইসরাইল-৭০
আল আম্বিয়া- ৭২
আল ক্বাসাস- ৫, ৪১
আল হিজর- ৭৯
আস সাজদাহ- ২৪
ইয়াসিন-২১
আল ফুরক্বান- ৭৪
আল আহক্বফ- ১২
শিয়া বা শিয়া ধাতু থেকে সৃষ্ট বিভিন্ন শব্দ ১২ বার কোরআনুল কারিমে বর্ণিত হয়েছে।
আল ইসমাহ (العصمه) বা নিষ্পাপতা শব্দ, যার উপর আহলে বাইতের অনুসারীদের বিশ্বাস যে, হযরত মুহাম্মাদ (সা.)-এর আহলে বাইত তথা হযরত ফাতিমা আলাইহাস সালাম ও বার ইমাম ইসমাত তথা নিষ্পাপতার অধিকারী। এই শব্দটি কোরআনুল কারিমে তাদের সমসংখ্যকবার ব্যবহৃত হয়েছে।
নিচের আয়াতগুলোর দিকে লক্ষ্য করুন, যেখানে ইসমাত শব্দটি নবীজীর আহলে বাইতের সমসংখ্যকবার ব্যবহৃত হয়েছেঃ
সূরা আন নিসা- ১৪৬, ১৭৫
সূরা আলে ইমরান- ১০১, ১০৩
সূরা আল মায়িদাহ- ৬৭
সূরা ইউসুফ- ৩২
সূরা ইউনুস-২৭
সূরা হুদা- ৪৩ (একি শব্দ দুই বার)
সূরা আল আহযাব- ১৭
সূরা গ্বাফির- ৩৩
সূরা আল মুমতাহানাহ- ১০
সূরা আল হাজ্ব-৭৮
আরেকটি দৃষ্টান্ত লক্ষ্য করুনঃ
আল কিসা (অর্থঃ) চাদর, সেই চাদরের নিচে পবিত্র পাঁচ জনের সম্মিলিত হবার ঘটনা, যার বর্ণনা হযরত উম্মে সালামা থেকে এবং সহি বুখারী ও মুসলিমে এসেছে। তাঁরা হচ্ছেনঃ হযরত মুহাম্মাদ, আলী, ফাতিমা, হাসান ও হুসাইন (আলাইহিমুস সালাম)। কোরআনুল কারিমে আল কিসা শব্দটি পাঁচ বার উল্লেখ করা হয়েছে।
সূরা আল বাক্বারা- ২৩৩, ২৫৯
সূরা আল মায়িদাহ- ৮৯
সূরা আল মুমিনুন- ১৪
সূরা আন নিসা- ০৫
কেন হযরত মুসা আলাইহিস সালাম তাঁর গোত্রের লোকদের পান করার জন্যে যে কয়টি ঝর্ণাধারার মুখ উম্মোচন করেছিলেন তা ১২টি ছিল বলে কোরআনুল কারিমে বর্ণিত হয়েছে?
তদ্রূপ বছরের ১২ মাসের (شهر) সংখ্যা কোরআনুল কারিমে ১২ বার উল্লেখ করা হয়েছে।
আরো দৃষ্টান্ত দেখুনঃ
আল ইসবাত্ব (الأسباط) (অর্থঃ নাতিগণ) শব্দটি ১২ বার,
সিবত (سبط) (অর্থঃ নাতি) শব্দটি ১২ বার,
আন নুক্বাবা (النقباء) (অর্থঃ নেতাগণ) শব্দটি ১২ বার,
আল বুরুজ (البروج) (স্তম্ভসমূহ) শব্দটি ১২ বার,
আল হাওয়ারিইয়িন (الحواريين) (অর্থঃ সাহায্যকারী) শব্দটি ১২ বার,
লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ
(لا اله إلا الله)বাক্যের মধ্যে ১২ট অক্ষর,
মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ
(محمد رسول الله) বাক্যে ১২ টি অক্ষর,
আন নাবিউল মুসত্বাফা
(النبي المصطفى) -এর মধ্যে ১২টি অক্ষর,
আস সাদিক্বুল আমিন
(الصادق الأمين) (অর্থঃ সত্যবাদী বিশ্বস্ত) বাক্যটির মধ্যে ১২টি অক্ষর নিহিত রয়েছে।
আরো দেখুনঃ
আহলে বাইতের ইমামদের
সংখ্যা ১২
এবং আমিরুল মুমিনিন
(أمير المؤمنين) বাক্যটির মধ্যে ১২টি অক্ষর,
ফাতিমাতুয যাহরা
(فاطمة الزهراء) -এর মধ্যে ১২টি অক্ষর,
আল হাসান ওয়াল হুসাইন
(الحسن والحسين) -এর মধ্যে ১২টি অক্ষর,
আল হাসানুল মুজতাবা
(الحسن المجتبى) -এর মধ্যে ১২টি অক্ষর,
আল হুসাইনুশ শাহীদ
(الحسين الشهيد) -এর মধ্যে ১২টি অক্ষর,
আল ইমামুস সাজ্জাদ
(الإمام السجاد) -এর মধ্যে ১২টি অক্ষর,
আল ইমামুল বাক্বির
(الإمام الباقر) -এর মধ্যে ১২টি অক্ষর,
আল ইমামুস সাদিক্ব
(الإمام الصادق) -এর মধ্যে ১২টি অক্ষর,
আল ইমামুল কাযিম
(الإمام الكاظم) -এর মধ্যে ১২টি অক্ষর,
আল ইমামুর রিদ্বা
(الإمام الرضاء) -এর মধ্যে ১২টি অক্ষর,
আল ইমামুল জাওয়াদ
(الإمام الجواد) -এর মধ্যে ১২টি অক্ষর,
আল ইমামুল হাদী
(الإمام الهادى) -এর মধ্যে ১২টি অক্ষর,
আল হাসানুল আসকারী
(الحسن العسكرى) -এর মধ্যে ১২টি অক্ষর,
আল ক্বায়িমুল মাহদী
(القائم المهدى) -এর মধ্যে ১২টি অক্ষর,
খালিফাতুন নাবিয়িন
(خليفة النبيين) -এর মধ্যে ১২টি অক্ষর
ওয়া খাতামুল ওয়াসিয়িন
(و خاتم الوصيين) -এর মধ্যে ১২টি অক্ষর,
ওয়া হাউলা-ইল ইতরাহ
(و هؤلاء العترة)
(অর্থঃ বংশের ঐসকল লোকেরা, যে শব্দটি নবীজীর আহলে বাইতের জন্যে প্রয়োগ করা হয়েছে) – এর মধ্যে ১২টি অক্ষর,
সাদাতু আহলিল জান্নাহ
(سادة أهل الجنة) (অর্থঃ জান্নাতবাসীদের নেতৃবৃন্দ) -এর মধ্যে ১২টি অক্ষর,
মুহিব্বুহুম মুমিনুন তাক্বী
(محبهم مؤمن تقى)
(অর্থঃ তাঁদের মহব্বতকারীরা মুমিন মুত্তাক্বী হয়) -এর মধ্যে ১২টি অক্ষর,
আদুউ-উহুম কাফিরুন শাক্বী
(عدوهم كافر شقى)
(অর্থঃ তাঁদের শত্রুরা কাফির হতভাগা হয়) -এর মধ্যে ১২টি অক্ষর বিদ্যমান।
এবার তাত্বহীরের আয়াতের দিকে দৃষ্টি দিন, অবাক করার মত বিষয় দেখতে পাবেনঃ
( إنما يريد الله ليذهب عنكم الرجس أهل البيت و يطهركم تطهيرا )
সূরা আহযাবের ৩৩ নং আয়াতের এই অংশটিকে বলা হয় তাত্বহীরের আয়াত। এ আয়াতটিতে ৪৭টি অক্ষর বিদ্যমান।
আর নিম্নলিখিত পবিত্র নামগুলোর মধ্যে নিহিত অক্ষরগুলোর মোট সংখ্যাও ৪৭।
ফাতিমা(فاطمة)-৫টি অক্ষর
আলী (على)- ৩টি
হাসান (حسن)- ৩টি
হুসাইন (حسين)- ৪টি
আলী (على) (চতুর্থ ইমামের নাম)-৩টি
মুহাম্মাদ (محمد) (পঞ্চম ইমামের নাম)- ৪টি
জা’ফার (جعفر) (ষষ্ঠ ইমামের নাম)- ৪টি
মুসা (موسى) (সপ্তম ইমামের নাম)- ৪টি
আলী (على) (অষ্টম ইমামের নাম)-৩টি
মুহাম্মাদ (محمد) (নবম ইমামের নাম)- ৪টি
আলী (على) (দশম ইমামের নাম)-৩টি
হাসান (حسن) (একাদশ ইমামের নাম)-৩টি
মুহাম্মাদ (محمد) (দ্বাদশ ইমামের নাম)- ৪টি।
সুতরাং আমাদের গর্ব করা উচিত যে, আমরা ইমামিয়া তরিকা তথা নবীজীর আহলে বাইতের বার ইমামের অনুসারী (اثنى عشرى)
কশ্মিনকালেও কেউ এই সত্য তরিকাকে নষ্ট অথবা ধ্বংস করতে পারবে না ইনশাআল্লাহ।
বার ইমামিয়া শীয়া ভাই বোনদের জন্য রয়েছে সুসংবাদ।
আগে আগে মুসা পিছে মুসার কওম। সামনে দরীয়ায়ে নীল। মুসার কওম পেরেশান। মুসা বলে হে আমার আল্লাহ এখন কি করব? আল্লাহ বলেন মুসা পেরেশান না হন। আমি আপনাকে আশা মোজেজা দিয়েছি। আশা দ্বারা দরীয়ায় আঘাত করুন। মুসা আশা দ্বারা দরীয়ায় আঘাত করে। কোরআন বলে দরীয়ায়ে নীলে রাস্তা হয়ে যায়। রাস্তা এক মুসা'র কওম বারো। একে অন্যের কলার ধরে বলে আমরা আগে যাবো আমরা আগে কালেমা পড়েছি। কেউ বলে আমরা ধনী কাবীলা আমরা আগে যাবো। কেউ বলে আমরা মুসা'র দ্বীনের জন্য বেশি ত্যাগ করেছি আমরা আগে যাবো। হট্টগোল চরম। মুসা বলে হে আমার আল্লাহ কি করবো?
আল্লাহ বলেন মুসা পেরেশান না হন দ্বিতীয় বার আপনার আশা দিয়ে দরীয়ায়ে নীল এ আঘাত করুন। মুসা দ্বিতীয় বার আঘাত করেন।
কোরআন বলে কোরআন বলে রাস্তা হয় বারো, রাস্তা হয় বারো, রাস্তা হয় বারো, রাস্তা হয় বারো, রাস্তা হয় বারো। হেদায়েতের রাস্তা হয় ই বারো। হেদায়েতের রাস্তা হয় ই বারো।
এক মাসুমের এত তাকাত যে বারো কওম পার করে। এক মাসুমের এত তাকাত যে বারো কওম পারে। আর বারো মাসুম(ইমাম) কি এক কওম(শীয়া) পার করবে না?
ইয়া ইয়াবনা জাহরা আল মোন্তাজের আল মাহদী (আঃ) আল মাদাদ।
আল্লাহুমা সাল্লে আলা মুহাম্মাদ ওয়া আলে মুহাম্মাদ ওয়া আজ্জিল ফারাজাহুম ,
আল্লাহুম্মা লা”ন কাতালাতাল আমিরিল মুমিনিন (আঃ) ।
কপি পোস্ট: মুহাম্মাদ হুসাইন বাংলাদেশ।
আপনার কমেন্ট