হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, গত প্রায় ৯ মাস ধরে ফিলিস্তিনের গাজায় নির্বিচারে হামলা ও অত্যাচার চালিয়ে যাচ্ছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী। দখলদার দেশটির হামলায় গাজাজুড়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৭ হাজার ৭১৮ জনে এবং আহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮৬ হাজার ৩০০ এর বেশি।
তবে লেবাননের পরিণতি একই হলেও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত বলছেন লেবাননে বসবাসকারী ফিলিস্তিনিরা। খবর আল জাজিরা।
বৈরুতের শাতিলা ফিলিস্তিনি শরণার্থী শিবিরে, প্রতিরোধ আন্দোলনের সাথে জড়িত অনেকেই আল জাজিরাকে জানিয়েছেন যে, এই উত্তেজনা এবং যুদ্ধের খবরে তারা ভীত নন। ইসরায়েলের বিরুদ্ধে এই অঞ্চলে হিজবুল্লাহকে সমর্থন করার জন্য লড়াই করবে তারা।
কিন্তু তাদের একটাই শঙ্কা, তাদের পরিবার এবং বেসামরিক নাগরিকদের জন্য। তাদের উদ্বেগ ইসরায়েলের সাথে হিজবুল্লাহর যুদ্ধ শুরু হলে ইসরায়েল ইচ্ছাকৃতভাবে লেবাননের ঘনবসতিপূর্ণ আবাসিক এলাকাগুলোকে বিশেষ করে লেবাননে ফিলিস্তিনি শিবিরগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করবে। যেখানে কয়েক লাখ ফিলিস্তিনি বাস করে।
এ বিষয়ে, শাতিলায় পপুলার ফ্রন্ট ফর দ্য লিবারেশন অফ প্যালেস্টাইন-জেনারেল কমান্ডের সদস্য আহেদ মাহার বলেন, “ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর কোনো নৈতিকতা নেই। তারা মানবাধিকার মানে না বা শিশুদের অধিকার বিবেচনা করে না।”
আল জাজিরা জানায়, প্রায় আড়াই লাখ ফিলিস্তিনি লেবানন জুড়ে ১২টি শরণার্থী শিবিরে বাস করে। ১৯৪৮ সালে নাকবার সময় লেবাননে আশ্রয় নিয়েছিলেন তারা।
লেবাননে ফিলিস্তিনিদের শরণার্থী শিবিরগুলো ধ্বংস হয়ে গেলে ফিলিস্তিনিদের তাদের মাতৃভূমিতে ফিরে যাওয়া ছাড়া অন্য কোন বিকল্প থাকবে না বলে জানান শাতিলায় বেড়ে ওঠা ২৯ বছর বয়সী হাসান আবু আলী।
তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রহীন শরণার্থী হিসাবে ফিলিস্তিনিরা কঠোর আইনি বৈষম্যের সম্মুখীন হয় এবং লেবাননে দারিদ্র্যের মধ্যে বসবাস করে।‘
আবু আলী আরও বলেন, “কিন্তু যুদ্ধ শুরু হলে আমি শুধুমাত্র ফিলিস্তিন বা ইউরোপে যেতে সক্ষম হব। কিন্তু ইউরোপে যেতে হলে একজন চোরাকারবারিকে ১০-১২ হাজার ডলার দেয়া লাগবে। সেটা আমার পক্ষে অসম্ভব।"
অন্যদিকে শাতিলা ফিলিস্তিনি শরণার্থী শিবিরে, বেশ কয়েকজন ফিলিস্তিনি পুরুষ আল জাজিরাকে জানিয়েছেন যে, “তাদের সহকর্মীরা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রামে যোগ দেবে যদি এটি হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে ব্যাপক যুদ্ধ শুরু করে।“
সেখানে থাকা একজন ব্যক্তি বলেন, “প্রথমত, লেবাননের সমস্ত শিবিরে প্রচুর প্রতিরোধ যোদ্ধা রয়েছে। দ্বিতীয়ত, যদি একটা বড় যুদ্ধ শুরু হয়, তাহলে আমরা ভয় পাই না। আমাদের হাজার হাজার যোদ্ধা আছে যারা ফিলিস্তিনকে মুক্ত করার জন্য শহীদ হতে প্রস্তুত।”
তবে হুমকি দিলেও হিজবুল্লাহর শক্তি ও অস্ত্রের বিবেচনায় ইসরায়েল লেবাননের বিরুদ্ধে বৃহত্তর যুদ্ধ শুরু করবে না বলছেন অনেকে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হিজবুলাহর অস্ত্রাগারে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র, ইরান-নির্মিত ক্ষেপণাস্ত্র এবং অত্যাধুনিক ড্রোন রয়েছে যা ইসরায়েলকে সংঘাতকে গুরুতরভাবে বাড়ানো থেকে বিরত রাখছে।
আপনার কমেন্ট