শুক্রবার ১০ জানুয়ারী ২০২৫ - ১১:৩৬
নেতানিয়াহু

হাওজা / যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদ (হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভস) বৃহস্পতিবার ভোট দিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গাজায় অভিযানের জন্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির প্রতিবাদ জানানো হয়।

হাওজা নিউজ এজেন্সির প্রতিবেদন অনুযায়ী, শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) টাইমস অব ইসরায়েলের এক প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে এ খবর দিয়েছে যুগান্তর।

প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, মার্কিন আইনপ্রণেতারা ২৪৩-১৪০ ভোটে ‘অবৈধ আদালত প্রতিক্রিয়া’ আইন পাস করেন, যা আইসিসির কোনো কর্মকর্তা বা হেগকে সমর্থনকারী যে কোনো সংস্থার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার আহ্বান জানাবে। যারা যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের সুরক্ষিত ব্যক্তির বিরুদ্ধে তদন্ত, গ্রেফতার, আটক বা বিচারিক কার্যক্রমে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করবে, তাদের বিরুদ্ধে এই আইন কাজ করবে।

নিষেধাজ্ঞার মধ্যে ভিসা বাতিল বা প্রত্যাহার এবং মার্কিন সম্পত্তি লেনদেন নিষিদ্ধ করাও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

আইনটিতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরায়েল রোম চুক্তির স্বাক্ষরকারী নয়, যা আইসিসি প্রতিষ্ঠা করেছে এবং সেই অনুযায়ী তাদের কার্যক্রমের উপর আইসিসির কোনো অধিকার নেই।

৪৫ জন ডেমোক্র্যাট ১৯৮ জন রিপাবলিকানের সঙ্গে বিলটিকে সমর্থন করেন। কয়েকজন রিপাবলিকান এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে ভোট দেননি। তবে কেন্টাকির প্রতিনিধি থমাস ম্যাসি ভোটদানে বিরত ছিলেন। প্রতিনিধি পরিষদে তিনি বলেছেন, ‘অন্য দেশগুলোর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধে জড়ানো উচিত নয়’।

প্রতিনিধি পরিষদের এই ভোট, ইসরায়েল সরকারের প্রতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের রিপাবলিকান সমর্থকদের দৃঢ় সমর্থনকে প্রকাশ করেছে।রিপাবলিকানরা এখন কংগ্রেসের উভয় পরিষদে নিয়ন্ত্রণ করছে।

ট্রাম্প আগামী ২০ জানুয়ারি দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেবেন।

ফ্লোরিডার রিপাবলিকান এবং হাউস ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটির চেয়ারম্যান ব্রায়ান মাস্ট ভোটের আগে হাউসের ভাষণে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র এই আইন পাস করছে কারণ একটি কথিত আদালত আমাদের মহান মিত্র ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর গ্রেফতার চায়’।

গত বছরের নভেম্বরে নেতানিয়াহু, গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) প্রতিষ্ঠিত হয় ২০০২ সালে।

নেদারল্যান্ডের হেগে অবস্থিত এই আন্তর্জাতিক আদালতের উদ্দেশ্য ছিল, গণহত্যা, মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং যুদ্ধাপরাধের মতো নৃশংসতার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহির আওতায় আনা।  তবে এটি জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) থেকে আলাদা।

আইসিসির নিজস্ব কোনো পুলিশ বাহিনী নেই। ফলে জারি করা গ্রেফতারি পরোয়ানা কার্যকর করার জন্য তারা তাদের সদস্যভুক্ত দেশগুলোর উপর নির্ভর করে।

এই আদালত প্রতিষ্ঠার জন্য মোট ১২৪টি দেশ ‘রোম স্ট্যাটিউট’ নামে একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করে। এর মধ্যে ৩৩টি আফ্রিকান, ১৯টি এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয়, ১৯টি পূর্ব-ইউরোপীয়, ২৮টি ল্যাটিন আমেরিকান এবং ক্যারিবীয় এবং ২৫টি পশ্চিম ইউরোপীয় ও অন্যান্য রাষ্ট্র রয়েছে। তবে এটিকে আনুষ্ঠানিক অনুমোদন দেয়নি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন এবং ইসরায়েল।

Tags

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha