হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, শুক্রবার (জুমার নামাজের পর) রাজধানীর মোহাম্মদপুর শিয়া জামে মসজিদ থেকে এ বিক্ষোভ শুরু হয়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো প্রদক্ষিণ শেষে মোহাম্মদপুর শিয়া জামে মসজিদের সামনে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
ইসরায়েলের নৃশংসতার বিরুদ্ধে ঐক্য:
হোসাইনী ট্রাস্ট ও দাস্তা-ই-হুসাইনী বাংলাদেশের যৌথ আয়োজনে এ মিছিলে দেশের শিয়া সম্প্রদায়ের পাশাপাশি সুন্নি মুসলিমরা ব্যাপকভাবে অংশ নেন। বিক্ষোভকারীরা ফিলিস্তিনি শিশু, নারী ও নিরীহ জনগণের ওপর ইসরায়েলের বর্বর হামলার নিন্দা জানান এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে হস্তক্ষেপের দাবি তোলেন। মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা "গাজায় রক্তের বন্যা বন্ধ করো", "ইসরায়েলি সন্ত্রাসী রাষ্ট্রের বিচার চাই" ও "ফিলিস্তিন মুক্তির সংগ্রামে সমর্থন জোরদার করো" ইত্যাদি স্লোগান দেন।
সমাবেশে বক্তাদের প্রত্যাশা:
মোহাম্মদপুর জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তারা ইসরায়েলের অপতৎপরতাকে "যুদ্ধাপরাধ" ও "গণহত্যা" আখ্যা দিয়ে এর বিচার দাবি করেন। তারা বলেন, "ফিলিস্তিনিরা তাদের ভূমি থেকে উচ্ছেদ হওয়ার পর ৭৫ বছর ধরে ইসরায়েলের অত্যাচার সহ্য করছে। এখন গাজায় নির্বিচারে বোমাবর্ষণ, হাসপাতাল ও স্কুলে হামলা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ।" এছাড়া বাংলাদেশ সরকারসহ মুসলিম বিশ্বের নেতাদের ফিলিস্তিনিদের পক্ষে কঠিন অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
শিয়া-সুন্নি সম্প্রীতির বার্তা:
আয়োজকরা জানান, এই বিক্ষোভ কেবল ইসরায়েলের বিরুদ্ধেই নয়, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষারও একটি উদাহরণ। শিয়া ও সুন্নি ভাইয়েরা একই মঞ্চ থেকে ফিলিস্তিনের সমর্থনে কণ্ঠ মেলান। দাস্তা-এ-হুসাইনী সাধারণ সম্পাদক বলেন, "ইসলামের মূল শিক্ষা হলো নিপীড়িতের পাশে দাঁড়ানো। আজ ফিলিস্তিনিরা সেই নিপীড়িত, এবং তাদের অধিকারের জন্য আমাদের সংহতি জরুরি।"
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ভূমিকা প্রশ্নে:
বিক্ষোভকারীরা জাতিসংঘ ও মানবাধিকার সংগঠনগুলোর "নিষ্ক্রিয়তা"কে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্ব হিসেবে উল্লেখ করেন। তারা যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতি ইসরায়েলকে অস্ত্র ও অর্থায়ন বন্ধের দাবি জানান।
পরবর্তী পদক্ষেপ:
আয়োজক সংগঠনগুলি জানায়, ফিলিস্তিনি জনগণের ন্যায্য সংগ্রামের সমর্থনে আগামী সপ্তাহগুলোতে দেশব্যাপী প্রচারাভিযান, মানববন্ধন ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হবে। এদিনের মিছিলে পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসন নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করে।
প্রেক্ষাপট:
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে গাজায় ইসরায়েলের বিমান হামলা ও ভূমি অভিযানে ৩০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে বলে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো জানিয়েছে। বাংলাদেশ সরকার বারবার ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের স্বীকৃতি ও ইসরায়েলের নিপীড়নের বিরুদ্ধে কঠিন ভাষায় বিবৃতি দিলেও বেসরকারি পর্যায়ে এ ধরনের বিক্ষোভ সাম্প্রতিক সময়ে তীব্রতা পেয়েছে।
রিপোর্ট: সৈয়দ রিয়াজ হোসেন
সাধারণ সম্পাদক
দাস্তা-এ-হুসাইনী
মোহাম্মদপুর ঢাকা বাংলাদেশ।
আপনার কমেন্ট