শুক্রবার ১১ এপ্রিল ২০২৫ - ১৫:৫৪
ফিলিস্তিনে গণহত্যা ও জান্নাতুল বাকী রওজা পুনর্নির্মাণের দাবিতে খালিশপুরে বিক্ষোভ সমাবেশ

ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের নির্মম গণহত্যার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও ইসলামের পবিত্র স্থান জান্নাতুল বাকী (মদিনা) রওজা শরিফ পুনর্নির্মাণের দাবিতে খালিশপুরের ঐতিহাসিক কাসরে আব্বাস (আ.) ইমামবাড়া থেকে জুমার নামাজের পর এক বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের নির্মম গণহত্যার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও ইসলামের পবিত্র স্থান জান্নাতুল বাকী (মদিনা) রওজা শরিফ পুনর্নির্মাণের দাবিতে খালিশপুরের ঐতিহাসিক কাসরে আব্বাস (আ.) ইমামবাড়া থেকে জুমার নামাজের পর এক বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শিয়া মুসলিম সংগঠন আঞ্জুমানে কাসরে আব্বাসের সদস্যদের সমন্বয়ে এবং হোসাইনী মিশনের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় এ আয়োজন করা হয়।  

দ্বৈত আন্দোলনের প্রতীকী মিছিল: বিক্ষোভকারীরা একইসঙ্গে ফিলিস্তিনের নির্যাতিত মানুষের প্রতি সংহতি ও সৌদি আরবের মদিনায় অবস্থিত জান্নাতুল বাকী কবরস্থানে ইসলামের  হজরত আলী (আ.)-এর স্ত্রী  ও নবী পরিবারের সদস্য হজরত ফাতেমা জাহরা (সা.)-এর সমাধিস্থলসহ অন্যান্য ঐতিহাসিক মাজার পুনর্নির্মাণের দাবি তুলে ধরে। মিছিলটি ইমামবাড়া থেকে শুরু হয়ে খালিশপুরের প্রধান সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে পুনরায় ইমামবাড়ায় গিয়ে শেষ হয়।  

ফিলিস্তিন ও রওজা পুনর্নির্মাণের দাবিতে সোচ্চার: সমাবেশে বক্তারা ইসরায়েলের সাম্প্রতিক সামরিক আগ্রাসনে গাজার হাজার নিহত শিশু-নারী ও বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের মৃত্যুর নিন্দা জানান। পাশাপাশি, সৌদি সরকারের কাছে জান্নাতুল বাকী কবরস্থানে ধ্বংসপ্রাপ্ত নবী পরিবারের সদস্যদের মাজার পুনর্নির্মাণের জোর দাবি তোলেন। বিক্ষোভকারীরা "ফিলিস্তিন হত্যা বন্ধ করো", "জালিম ইসরায়েলের বিচার চাই" এবং "জান্নাতুল বাকীর রওজা পুনর্নির্মাণ করুন" ইত্যাদি স্লোগান দেন।  

ধর্মীয় সম্প্রীতির অভিন্ন মঞ্চ: এই আয়োজনে শিয়া ও সুন্নি সম্প্রদায়ের শতাধিক মানুষ অংশগ্রহণ করেন। স্থানীয় সুন্নি নেতা মাওলানা আব্দুল হামিদ বলেন, ফিলিস্তিনের সংকট এবং ইসলামী ঐতিহ্য রক্ষার প্রশ্নে আমাদের বিভেদ নেই। সকল মুসলিমের এক হওয়ার সময় এখনই।

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান: বক্তারা জাতিসংঘ, ওআইসি এবং মানবাধিকার সংগঠনগুলোর কাছে ফিলিস্তিনে যুদ্ধবিরতি কার্যকর ও জান্নাতুল বাকী রওজার পুনরুদ্ধারে জোরালো ভূমিকা রাখার দাবি জানান। এছাড়া, সৌদি আরবের সরকারকে ইতিহাসের দায়বদ্ধতা স্মরণ করিয়ে দিয়ে মাজার পুনর্নির্মাণের প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার অনুরোধ করা হয়।  

 এদিনের মিছিলে স্থানীয় পুলিশ ও প্রশাসন নিরাপত্তা ও যানজট নিয়ন্ত্রণে সহযোগিতা করে।  

প্রাসঙ্গিক প্রেক্ষাপট: জান্নাতুল বাকী কবরস্থানে নবী পরিবারের সদস্যদের সমাধিগুলো ১৯২৫ সালে ওয়াহাবি নীতি অনুযায়ী ধ্বংস করা হয়, যা বিশ্বব্যাপী শিয়া মুসলিমদের মধ্যে ক্ষোভের কারণ। অন্যদিকে, গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযানে এ বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ৩৫ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জাতিসংঘের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক সংগঠন ফিলিস্তিনি জনগণের পক্ষে এবং ইসলামী ঐতিহ্য রক্ষায় ক্রমাগত সোচ্চার হচ্ছে।  

রিপোর্ট: সৈয়দ আলী আকবর

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha