হাওজা নিউজ এজেন্সি: ইমাম জয়নুল আবেদীন (আ.) সহিফায়ে সাজ্জাদিয়া গ্রন্থে এভাবে আল্লাহ তাআলার নিকট প্রার্থনা করেছেন,
وَاهْدِنِی لِلَّتِی هِیَ أَقْوَمُ وَ اسْتَعْمِلْنِی بِمَا هُوَ أَسْلَمُ
(সহিফায়ে সাজ্জাদিয়া, দোয়া ১৪)
আমাকে সর্বাধিক সঠিক পথের দিকে পরিচালিত করুন এবং আমাকে এমন কাজে নিয়োজিত করুন যা সর্বাধিক নিরাপদ।
ব্যাখ্যা: ইমাম সাজ্জাদ (আ.)-এর এই বাণী বুঝতে নিম্নোক্ত আয়াতটি বিবেচনা করা যাক:
أَلَمْ أَعْهَدْ إِلَیْکُمْ یَا بَنِی آدَمَ أَن لَّا تَعْبُدُوا الشَّیْطَانَ إِنَّهُ لَکُمْ عَدُوٌّ مُّبِینٌ وَأَنِ اعْبُدُونِی هَـٰذَا صِرَاطٌ مُّسْتَقِیمٌ.
(সূরা ইয়াসিন, আয়াত ৬০)
“হে আদম সন্তানগণ! আমি কি তোমাদের সাথে এই অঙ্গীকার নিইনি যে, তোমরা শয়তানের ইবাদত করবে না? নিশ্চয়ই সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু। আর তোমরা আমারই ইবাদত কর, এটাই সরল পথ।”
এই ঐশী বাণী অনুযায়ী, মানুষ দুইটি অবস্থার বাইরে নয়: হয় সে আল্লাহর বান্দা, নতুবা শয়তানের বান্দা।
প্রকৃতপক্ষে, মানুষ তার সমগ্র জীবনে সর্বদা দুটি শিবিরের মুখোমুখি হয়: আল্লাহর শিবির ও শয়তানের শিবির। যে কোনো একজনের আনুগত্য করার অর্থই হলো তার উপাসনা করা। কারণ, ইমাম জাফর সাদিক (আ.) একটি হাদীসে ’আনুগত্য’কে ‘ইবাদত’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন:
مَنْ أَطَاعَ رَجُلاً فِی مَعْصِیَةٍ فَقَدْ عَبَدَهُ
(উসুলে কাফি, খণ্ড- ২, পৃষ্ঠা- ৩৯৮)
যে ব্যক্তি কোনো ব্যক্তিকে আল্লাহর নাফরমানিতে আনুগত্য করে, সে নিশ্চিতভাবে তার ইবাদত করেছে। অর্থাৎ যে ব্যক্তি আল্লাহর অবাধ্য হয়ে কারো আনুগত্য করে, সে অবশ্যই তার ইবাদত করল।
এজন্যই ইমাম সাজ্জাদ (আ.) আমাদের শিক্ষা দিয়েছেন যে, আমরা যেন আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করি যেন তিনি আমাদের বিষয়গুলোর হিদায়াত নিজ হাতে গ্রহণ করেন। যেন চলার পথে তিনি আমাদেরকে সর্বোত্তম ও সবচেয়ে সুদৃঢ় পথের দিকে পরিচালিত করেন এবং আমলের সময় তিনি আমাদেরকে সবচেয়ে নির্ভুল কাজের দিকে পরিচালনা করেন।
কারণ, যদি আমরা আল্লাহর ইচ্ছা ও আনুগত্যের পথে অগ্রসর না হই, তাহলে অবশ্যই আমরা শয়তানের শিবিরে অবস্থান করব এবং তার আদেশগুলি বাস্তবায়ন করব। অর্থাৎ, যদিও আমরা নিজেদকে মুক্ত বলে দাবি করতে পারি এবং বলতে পারি যে আমরা দ্বীন বা অন্যান্যদের বিধি-নিষেধ থেকে মুক্ত, কিন্তু অজ্ঞতাবশত আমরা প্রকৃতপক্ষে শয়তানের অনুগত ও বান্দায় পরিণত হয়েছি। আর এই শয়তানই আমাদেরকে যেদিকে ইচ্ছা টেনে নিয়ে যায়।
সিদ্ধান্ত: প্রতিটি ব্যক্তির উচিত, সে যে পথেই থাকুক না কেন, তার পথ ও কর্মকাণ্ড পর্যালোচনা করা, যাতে সে এই বিশ্বে তার অবস্থান সম্পর্কে সচেতন হতে পারে। যাতে সে জানতে পারে যে, সে কি আল্লাহ ও নিরঙ্কুশ মাবুদের শিবিরে নিঃশ্বাস নিচ্ছে, নাকি শয়তানের শিবিরে?
হাওজা নিউজ এজেন্সির শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রস্তুতকৃত
আপনার কমেন্ট