বৃহস্পতিবার ১৭ এপ্রিল ২০২৫ - ১৪:০৬
গাজা অপরাজেয়—শত্রুর সামনে নত হওয়া, ইমাম হুসাইন (আ.)-এর পথ থেকে বিচ্যুতি: আয়াতুল্লাহ জাওয়াহেরী

নজফে আশরাফের জ্যেষ্ঠ আলেম আয়াতুল্লাহ হাসান জাওয়াহেরী বলেছেন, গাজার সংগ্রাম চিরন্তন এবং ইসরাইলের বিজয়ের দাবি নিছক এক ধোঁকা মাত্র। তিনি জোর দিয়ে বলেন, শত্রুর সামনে মাথা নত করা, ইমাম হুসাইন (আ.)-এর পথ থেকে বিচ্যুতি এবং ইসলামী মূল্যবোধের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা।

হাওজা নিউজ এজেন্সি-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, আয়াতুল্লাহ জাওয়াহেরী গাজার বর্তমান পরিস্থিতি ও মুসলিম উম্মাহর অবস্থান নিয়ে এক বিবৃতিতে বলেন, উলামাদের দায়িত্ব হলো জাতিকে সঠিক পথে পরিচালিত করা। তিনি বলেন, নজফের মারজা ইনসাফ, প্রজ্ঞা ও যুক্তির পথে অটল থেকে উম্মাহর দিকনির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছেন।

তিনি ইসরাইলের বিজয়ের দাবিকে "একটি কল্পনা ও মিথ্যা ধারণা" হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, গাজা কখনও পরাজিত হয়নি এবং ভবিষ্যতেও হবে না। গাজার জনগণের প্রতিরোধ এবং দখলদারদের হতাশ মুখই প্রকৃত বিজয়ের প্রমাণ।

আয়াতুল্লাহ জাওয়াহেরী আরও বলেন, যারা শত্রুর সঙ্গে আপসের কথা বলেন, তারা ইমাম হুসাইন (আ.)-এর আদর্শ থেকে সরে গেছেন। হাওযা বা ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সব সময়ই মজলুমদের পক্ষে থেকেছে—হোক তা গাজা, লেবানন কিংবা অন্য কোনো অঞ্চল।

তিনি কিছু আরব সরকারের সমালোচনা করে বলেন, তাদের বিশ্বাসঘাতকতা প্রতিরোধ শক্তিকে আঘাত করলেও এই প্রতিরোধ আজও শক্ত অবস্থানে রয়েছে এবং শত্রুকে আলোচনার টেবিলে তাদের শর্ত মেনে নিতে বাধ্য করেছে।

তিনি বলেন, যারা মারজিয়াত বা ধর্মীয় নেতৃত্বকে দুনিয়াবি লাভের মাধ্যম ভাবে, তারা মিথ্যাবাদী। এটি একটি শরয়ি দায়িত্ব যা আলেমগণ একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য পালন করে থাকেন। তিনি ‘নিযামে ওলায়াতে ফকীহ’কে রাসূল (সা.) এবং আহলুল বায়েত (আ.)-এর ওলায়াতের ধারাবাহিকতা হিসেবে উল্লেখ করেন।

তার বক্তব্যে শহীদ সাইয়্যেদ মোহাম্মদ বাকির সাদরের বিশেষ উল্লেখ ছিল। তিনি বলেন, শহীদের বই "ইকতিসাদুনা" বস্তুবাদী মতবাদের একটি একাডেমিক জবাব ছিল, এবং তিনি সত্যের পতাকা উঁচু রাখতেই প্রাণ উৎসর্গ করেছিলেন।

শেষে আয়াতুল্লাহ জাওয়াহেরী মুসলিম উম্মাহকে সতর্ক করে বলেন, তারা যেন উপনিবেশবাদীদের চিন্তাগত ও সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সজাগ থাকে এবং দ্বীনের শিক্ষায় দৃঢ় থেকে মজলুমদের সমর্থনে নিজেদের ধর্মীয় দায়িত্ব পালন করে। তিনি বলেন: জিহাদ ও প্রতিরোধের পথ চলতেই থাকবে, এবং আলেমদের ঐতিহাসিক ভূমিকা উম্মাহর দিকনির্দেশনায় চিরকাল বেঁচে থাকবে।

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha