হাওজা নিউজ এজেন্সি: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ১৩ মে ২০২৫ সালে পারস্য উপসাগরে তার সফর শুরু করেছেন এবং এই সফরের ধারাবাহিকতায় কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাতেও যাবেন। এই সফরের মূল উদ্দেশ্য হলো বিশাল বিনিয়োগ আকর্ষণ করা, যা ট্রাম্পের চিরাচরিত নীতিকে প্রতিফলিত করে: “টাকা দাও, সমর্থন নাও”।
অন্যদিকে, এই মাসের শেষের দিকে ইরাকে আরব নেতাদের শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। ইরাকি কর্মকর্তারা আগেই জানিয়েছিলেন যে সিরিয়ার বর্তমান শাসক আল-জোলানিকেও এই সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তবে, ইরাকে তাকে একজন সন্ত্রাসী হিসেবে গণ্য করা হয় এবং আইনি ব্যবস্থা অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। ইরাকের শিয়া গোষ্ঠীগুলো হুঁশিয়ারি দিয়েছে যে যদি তিনি ইরাকে আসেন, তবে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করতে হবে। তাই, তার উপস্থিতি নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে।
হাওজা নিউজ এজেন্সি’র আন্তর্জাতিক বিভাগ কাতায়েব সাইয়্যিদুশ শুহাদার ইরানের প্রতিনিধি শেখ হাসান আল-আব্বাদির সাথে একান্ত সাক্ষাৎকার দিয়েছেন:
প্রশ্ন: আপনি জানেন যে ট্রাম্প গতকাল থেকে সৌদি আরব, কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাত সফর শুরু করেছেন। ফিলিস্তিন থেকে শুরু করে সৌদি আরব ও অন্যান্য আরব দেশের নিপীড়ন ও অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যেও এই সফর আরব জনগণের জন্য কী বয়ে আনবে?
শেখ হাসান আল-আব্বাদি: এটি সবার জানা যে আমেরিকা ও ইহুদিবাদী শক্তি উভয়ই সাম্রাজ্যবাদী শক্তি—একটি মাফিয়া বা অপরাধী চক্র, যারা এই অঞ্চলের দুর্বল জনগণের রক্ত ও সম্পদ লুট করে বেঁচে আছে। গাজা, ইয়েমেন, সিরিয়া ও অন্যান্য দেশে ইহুদিবাদী শাসন ও তাদের মিত্র আমেরিকার অপরাধ সবাই দেখছে। ট্রাম্প আসলে একটি ব্যবসায়িক চক্রের নেতা, যে যুদ্ধ বাধিয়ে রক্তপাত ঘটায়, বিনিয়োগ ও করের মাধ্যমে লাভবান হয়, জনগণের সম্পদ লুট করে এবং তাদের শক্তি দুর্বল করে।
প্রশ্ন: ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য সফরের আগেই তার সংস্থা কাতারে একটি রিয়েল এস্টেট চুক্তি স্বাক্ষর করেছে, যেখানে দোহায় একটি গলফ কোর্স ও বিলাসবহুল ভিলা নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। এই বিনিয়োগগুলো এ অঞ্চলের জনগণের জন্য কী উপকার বয়ে আনবে?
শেখ হাসান আল-আব্বাদি: এটি আরব জনগণের গলায় ফাঁসির দড়ি পরানোর শামিল। আমেরিকা এভাবে পারস্য উপসাগরে নিজের অবস্থান শক্তিশালী করতে চায়, তেল ও সম্পদ নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রতারণা ও কৌশলের আশ্রয় নিচ্ছে। আমেরিকার নীতি হলো—জনগণের সম্পদ ও রক্ত লুট করে নিজেদের সমৃদ্ধ করা।
প্রশ্ন: ইরাকে শীর্ষ আরব সম্মেলন হতে যাচ্ছে। আল-জোলানি, যার বিরুদ্ধে ইরাকে সন্ত্রাসী মামলা রয়েছে, তাকে কি আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে?
শেখ হাসান আল-আব্বাদি: ইরাকে তাকে স্বাগত জানানো হবে না, কারণ সে ইরাকি জনগণের রক্তপাতের দায়ে দোষী। তার উপস্থিতি শহীদ ও নিরপরাধ মানুষের রক্তের প্রতি অবমাননা। ইরাকি সরকারের দায়িত্ব হলো তাকে গ্রেফতার করা। আমরা ফিলিস্তিনের সংগ্রাম ও ইয়েমেনের সমর্থনে ঐক্য চাই, যাতে আরব জনগণের রক্ষার পথ খুঁজে পাওয়া যায়।
হাওজা নিউজের তথ্য: সিরিয়ার শিয়া গোষ্ঠীগুলোর তীব্র প্রতিবাদের পর, সিরিয়ার প্রেসিডেন্সি নিশ্চিত করেছে যে আহমদ আল-শারাহ (আবু মুহাম্মদ আল-জোলানি), সিরিয়ার স্বঘোষিত অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান, বাগদাদের সম্মেলনে অংশ নেবেন না। তার বিরুদ্ধে ইরাকে সন্ত্রাসী মামলা রয়েছে এবং হাজারো ইরাকির রক্তের দায় তার উপর বর্তায়।
সাক্ষাৎকারগ্রহণ: ওয়াজিহা সাদাত হোসেইনি
আপনার কমেন্ট