রবিবার ১ জুন ২০২৫ - ২১:২৯
‘বেলায়তে ফকীহ' ছাড়া ইসলামি শাসনব্যবস্থা গঠন সম্ভব নয়

ইরানের বিশেষজ্ঞ পরিষদের সদস্য এবং কোমের প্রখ্যাত আলেম হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলিমিন সাইয়্যেদ সালেহ মির্জায়ী বলেন যে, ইসলামি শাসনব্যবস্থা ‘বেলায়তে ফকীহ’ ছাড়া প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না। তিনি ইমাম খোমেনি (রহ.)-এর উদ্ধৃতি দিয়ে উল্লেখ করেন যে, ইসলামি ফিকহ বা বিধান একা যথেষ্ট নয়—এগুলো বাস্তবায়নের জন্য একটি কার্যকর শাসনব্যবস্থা প্রয়োজন, যার নেতৃত্বে থাকতে হবে একজন যোগ্য ও দ্বীনদার ফকীহকে।

হাওজা নিউজ এজেন্সি: হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলিমিন সাইয়্যেদ সালেহ মির্জায়ী মসজিদের ইমামগণ ও ধর্মীয় নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান যে তারা যেন সমাজে বেলায়তে ফকীহ-এর গুরুত্ব ও ভূমিকা সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করেন এবং আধুনিক চ্যালেঞ্জের প্রেক্ষাপটে কুরআন ও আহলুল বায়তের শিক্ষা অনুযায়ী বিশুদ্ধ ব্যাখ্যা উপস্থাপন করেন।

সালেহ মির্জায়ী ইসলামি বিপ্লবের কেন্দ্র হিসেবে কোম শহরের ভূমিকা তুলে ধরেন এবং বলেন, যেভাবে ইসলামি বিপ্লব এখান থেকে শুরু হয়েছে, সেভাবেই এই কেন্দ্র থেকে বিপ্লববিরোধী ধারণাও গড়ে উঠতে পারে, তাই সতর্ক থাকা জরুরি।

তিনি উল্লেখ করেন যে, কিছু গোষ্ঠী ফিলিস্তিন সমস্যার সমাধান হিসেবে দুই রাষ্ট্র সমাধান ও ইসরায়েলের সঙ্গে সহাবস্থানের কথা বলছে, যা বিপ্লবের মূলনীতির পরিপন্থী।

তিনি আরও বলেন, ইসলামী বিপ্লবের সাফল্য, যেমন “৪০ বছরের আরোহন প্রকল্প”-এর মতো দলিলগুলো, বেলায়তে ফকীহের সুফল ও ইসলামি শাসনব্যবস্থার কার্যকারিতা ব্যাখ্যা করতে পারে এবং বর্তমানের অনেক সংশয় ও অপপ্রচারের জবাব দিতে পারে।

তিনি শহীদ কাসেম সোলাইমানি’র একটি বাস্তব ঘটনা তুলে ধরেন, যেখানে ২০০৬ সালের লেবানন যুদ্ধ চলাকালে তিনি ময়দান থেকে ফিরে এসে রাহবরে ইনকিলাবের (আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী) নির্দেশ পান, যা প্রতিরোধ আন্দোলনের কৌশলে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে। এই ঘটনা বোঝায় যে, রাহবরের কৌশলগত দৃষ্টিভঙ্গি কতটা দূরদর্শী ও প্রভাবশালী।

সালেহ মির্জায়ী বলেন, “বেলায়তে ফকীহ”-এর শাসনব্যবস্থা শুধু ধর্মীয় নির্দেশনা নয়, বরং জাতীয় সংকটে একটি কার্যকর ও বাস্তবসম্মত সমাধান দিতে পারে। তিনি বলেন, অতীতে বিভিন্ন সময় সরকার প্রধানদেরও রাহবরের বিশেষ অনুমতির প্রয়োজন হয়েছে, যেমনটি ইমাম খোমেনি (রহ.)-এর সময়েও ঘটেছে।

সর্বশেষে তিনি জোর দিয়ে বলেন, ইসলামি শাসনব্যবস্থা গঠনের জন্য বিলায়তে ফকীহ অপরিহার্য। এই শাসনব্যবস্থার মাধ্যমে জাতির অগ্রগতি, ষড়যন্ত্র প্রতিহত করা এবং ফিতনার মোকাবিলা করা সম্ভব। গবেষণা ও সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে সমাজে এই নেতৃত্বের বৈধতা ও কার্যকারিতা আরও সুদৃঢ় করতে হবে।

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha