বৃহস্পতিবার ৫ জুন ২০২৫ - ২০:২৭
আরাফাহ দিবসে আয়াতুল্লাহ্ আল উজমা সফি গুলপায়েগানীর উপদেশ ও সুপারিশ: আমরা আল্লাহর কাছে কী চাইবো?

মরহুম আয়াতুল্লাহ্ আল উজমা সফি গুলপায়েগানী বলেন: আরাফাহ দিবসে ইমাম হুসাইন (আঃ) যে দোয়াটি পড়েছেন, তাতে তিনি আল্লাহর কাছে যেসব গুরুত্বপূর্ণ চাহিদা ব্যক্ত করেছেন, তার মধ্যে অন্যতম হলো—দেহ এবং দ্বীনের জন্য আরোগ্য ও নিরাপত্তা চাওয়া: "اللّهُمَّ ... عَافِنی فی بَدَنی و دینی" (হে আল্লাহ! আমার দেহে ও দ্বীনে আমাকে আরোগ্য দান করো)। যে ব্যক্তি এই দুইটি আল্লাহর নেয়ামত পায়, সে ব্যক্তি দুনিয়া ও আখেরাতে সফলতা অর্জন করে।

হাওযা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, মরহুম হযরত আয়াতুল্লাহ্ সফি গুলপায়েগানী আরাফাহ দিবস উপলক্ষে এক লেখায় এই প্রশ্নের জবাবে—"আরাফাহ দিবসে আল্লাহর কাছে কী চাইবো?"—বলেছেন:

আরাফাহ হলো ইবাদত ও আল্লাহর প্রতি আত্মনিবেদনের দিন। এ দিনটি এমন একটি দিন, যখন মানুষ নিজেদের আল্লাহর রহমতের খুব কাছাকাছি অনুভব করে।

এই দিনে পাঠিত দোয়াগুলো মানুষকে আত্মিক উন্নতির পথে নিয়ে যায়, চেতনার দ্বার উন্মুক্ত করে এবং আত্মাকে পূর্ণতা দেয়। বিশেষ করে ইমাম হুসাইন (আঃ)-এর আরাফার দোয়া এমন এক মহৎ দোয়া, যার আধ্যাত্মিকতা ও জ্ঞানের গভীরতা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়।

এই দোয়ার প্রতিটি বাক্য একটি আলোর মত, যা মানুষের অন্তরজগতে আলো ছড়ায়, হৃদয়ের মলিনতা দূর করে, জীবনের প্রকৃত অর্থ তুলে ধরে, আল্লাহর নেয়ামতগুলো স্মরণ করিয়ে দেয় এবং সেইসব নেয়ামতের শোকর আদায়ে মানুষের অক্ষমতাও বর্ণনা করে। যে কেউ, যত উচ্চ পর্যায়ের জ্ঞানীই হোক না কেন, এই দোয়া পড়ে আত্মিক আনন্দ অনুভব করে এবং নিজেকে আল্লাহর সান্নিধ্যে উপস্থিত দেখতে পায়।

সত্যিই, যে জাতি এরকম আধ্যাত্মিক ও নৈতিক ভাণ্ডারের অধিকারী, তার উচিত—তার সমাজব্যবস্থা, কার্যক্রম ও জীবনধারার প্রতিটি দিক থেকে আলোকিততা, পবিত্রতা এবং পার্থিব সম্পদের প্রতি উদাসীনতা ফুটে উঠুক।

দুনিয়া ও আখিরাতের সফলতা নির্ভর করে আরোগ্যতার উপর

ইমাম হুসাইন (আঃ)-এর দোয়ায় উল্লেখিত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রার্থনাগুলোর একটি হলো দেহ ও দ্বীনে আরোগ্য:
"اللّهم …. عَافِنی فی بَدَنی و دینی"
(হে আল্লাহ! আমার শরীরে এবং দ্বীনে আমাকে নিরাপত্তা ও আরোগ্য দান করো)।
যে এই দুইটি নেয়ামত পায়, সে ব্যক্তি দুনিয়া ও আখিরাতে সফল হয়।

দেহে আরোগ্য অর্থ হলো শারীরিক সুস্থতা, রোগ ও অঙ্গহানির অভাব, এবং সুষম ও সঠিক সৃষ্টি—যা আল্লাহর অন্যতম বড় নেয়ামত। যেহেতু অসংখ্য রোগ আছে, তাই প্রতিটি রোগ থেকে মুক্ত থাকাও আলাদা করে একটি নেয়ামত। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ এই নেয়ামতের শোকর আদায়ে গাফেল, কারণ তারা এই নেয়ামতের গুরুত্ব বোঝে না, কিংবা চিনতেই পারে না।

এই নেয়ামতগুলোর সঠিক জ্ঞান অর্জনের জন্য বহু শারীরিক বিজ্ঞান জানতে হয়—যা দেহের মাংস, চামড়া, হাড়, রক্তনালী, স্নায়ু, রক্ত, অস্থিসন্ধি, কোষ, বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ অঙ্গসমূহের সাথে সম্পর্কযুক্ত। এমনকি যদি কেউ এই সকল বিষয়ে জানেও, তবুও এই জ্ঞান এখনো পূর্ণতা পায়নি, ফলে আল্লাহর এই সব নেয়ামতের যথার্থতা ও শোকর আদায়ে মানুষ এখনও অক্ষম।

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha