হাওজা নিউজ এজেন্সি: বুধবার এক বিবৃতিতে ইয়েমেনের সশস্ত্র বাহিনী জানিয়েছে, “ইটারনিটি সি” (ETERNITY C) নামক জাহাজটি সৌদি আরব থেকে ইসরায়েলের অধিকৃত ফিলিস্তিন ভূখণ্ডের উম্মুল রাশরাশ (এলাত) বন্দরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছিল। ইয়েমেনি নৌবাহিনীর পক্ষ থেকে একাধিকবার সতর্কবার্তা উপেক্ষা করায় জাহাজটিকে লক্ষ্য করে আক্রমণ চালানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, এই সামরিক অভিযানে একটি স্বচালিত সমুদ্রযান (Unmanned Surface Vehicle) এবং ছয়টি ক্রুজ ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহৃত হয়েছে।
জাহাজটি পুরোপুরি ডুবে গেছে এবং গোটা অভিযানের অডিও ও ভিডিও ফুটেজ সংরক্ষিত হয়েছে বলে জানানো হয়। তবে জাহাজটির কর্মীদলকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
ইয়েমেনি বাহিনী জানিয়েছে, উম্মুল রাশরাশ বন্দরের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা থাকা জাহাজ ও মালিকানাধীন সংস্থাগুলোর ওপর সানার (ইয়েমেনের রাজধানী) আরোপিত নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করায় এই হামলা চালানো হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, লোহিত সাগর ও আরব সাগরে ইসরায়েল-সংশ্লিষ্ট জাহাজের ওপর নিষেধাজ্ঞা এখনো বহাল রয়েছে। ইসরায়েলের সঙ্গে লেনদেনে জড়িত দেশ ও কোম্পানিগুলোকে আবারও সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে।
"জাহাজ ও এর কর্মীদের নিরাপত্তার স্বার্থে, আমরা আবারও সকল কোম্পানি ও দেশের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করছি—জায়নিস্ট সত্ত্বার (ইসরায়েল) সঙ্গে যে কোনো লেনদেন ও অধিকৃত ভূখণ্ডে তাদের বন্দর ব্যবহারের ফলাফল ভয়াবহ হতে পারে।"
ইয়েমেনি বাহিনী আরও জানায়, গাজায় আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত এবং অবরোধ না উঠা পর্যন্ত প্রতিশোধমূলক সামরিক অভিযান চলবে।
এর আগে চলতি সপ্তাহে ইয়েমেনি বাহিনী “ম্যাজিক সিজ” নামের আরেকটি জাহাজ দখল ও ডুবিয়ে দেওয়ার ভিডিও প্রকাশ করে, যার মালিক সংস্থা একই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেছিল।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর থেকে ইয়েমেনি সেনাবাহিনী গাজাবাসীর পক্ষে বহু সামরিক অভিযান চালিয়ে আসছে। তারা অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডসহ ইসরায়েলগামী জাহাজগুলোকেও হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে।
উল্লেখ্য, ফিলিস্তিনিদের ওপর দীর্ঘ সময় ধরে ইসরায়েলি হত্যাযজ্ঞ ও ধ্বংসযজ্ঞের জবাবে গাজার প্রতিরোধ যোদ্ধারা হঠাৎ "আল-আকসা স্টর্ম" অভিযান শুরু করে, যার জবাবে ইসরায়েল ভয়াবহ যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। এই আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত অন্তত ৫৭,৬৮০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।
আপনার কমেন্ট