শনিবার ১৯ জুলাই ২০২৫ - ১৩:০৬
ইসলামী বিশ্বের দেশগুলো ইরান ও ইসরায়েল যুদ্ধ নিয়ে কী অবস্থান নিয়েছে?

যখন মুসলিম দেশগুলো একটি ঐক্যবদ্ধ কণ্ঠে কথা বলতে ব্যর্থ হয়, তখন শত্রুপক্ষ সুযোগ গ্রহণ করে।

মাওলানা মুহাম্মাদ আসগর আলী  গাইন, সভাপতি এ বি ডি কারবালা ইমামিয়া মিশন ও ইমাম জুমা আমরুলগাছা জামে মসজিদ, চকপাটলি হাসাবাদ উত্তর ২৪ পরগনা । 

প্রশ্ন: আসসালামু আলাইকুম, মাওলানা সাহেব। আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ আমাদের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার জন্য। প্রথমেই জানতে চাই, ইরান-ইসরায়েল দ্বন্দ্ব নিয়ে ইসলামী বিশ্বের দেশগুলো কী অবস্থান গ্রহণ করেছে?

মাওলানা আসগর আলী: ওয়ালাইকুমুস সালাম। ধন্যবাদ আপনাদের। এই বিষয়ে বলতে গেলে দেখা যায় যে ইসলামী বিশ্ব ঐক্যবদ্ধ অবস্থান গ্রহণ করতে পারেনি। কিছু দেশ যেমন ইরানের পক্ষে নৈতিক ও কূটনৈতিক সমর্থন প্রকাশ করেছে, আবার কিছু আরব দেশ নীরবতা পালন করছে বা ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছে।

প্রশ্ন: আপনি কি বলতে চাইছেন যে ইসলামী দেশগুলো বিভক্ত?

মাওলানা আসগর আলী: একথা অস্বীকার করার উপায় নেই। ইসলামী উম্মাহ আদর্শিকভাবে এক হলেও রাজনৈতিকভাবে বিভক্ত। সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মিশরসহ কিছু দেশ ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করেছে। আবার কাতার, আলজেরিয়া, পাকিস্তানের মতো কিছু দেশ এখনও ফিলিস্তিনের পক্ষে জোরালো অবস্থান নিয়ে চলেছে। তবে এদের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব রয়েছে।

প্রশ্ন: তাহলে আপনি কি মনে করেন, এই বিভাজন ইসলামী বিশ্বের দুর্বলতা তৈরি করছে?

মাওলানা আসগর আলী: নিঃসন্দেহে। যখন মুসলিম দেশগুলো একটি ঐক্যবদ্ধ কণ্ঠে কথা বলতে ব্যর্থ হয়, তখন শত্রুপক্ষ সুযোগ গ্রহণ করে। এই বিভক্তি ফিলিস্তিনসহ গোটা মুসলিম বিশ্বের ক্ষতিসাধন করছে। কুরআনে বলা হয়েছে, “তোমরা বিভক্ত হয়ো না।” কিন্তু দুঃখজনকভাবে আমরা সেই আদেশ উপেক্ষা করছি।

প্রশ্ন: কিছু মুসলিম দেশ ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করছে, আপনি কি এটিকে সমর্থনযোগ্য মনে করেন?

মাওলানা আসগর আলী: আমি মনে করি, যখন একটি জাতি নির্যাতিত হচ্ছে—যেমন ফিলিস্তিনি মুসলমানরা—তখন সেই নির্যাতনকারী রাষ্ট্রের সঙ্গে বন্ধুত্ব করা ইসলামি মূল্যবোধের পরিপন্থী। হাদীসে এসেছে, “যে ব্যক্তি জালেমের সাহায্য করে, সে কেয়ামতের দিন তার সঙ্গী হবে।” সুতরাং এই সম্পর্ক পুনর্বিবেচনা করা উচিত।

প্রশ্ন: তাহলে আপনার দৃষ্টিতে ইসলামী দেশগুলোর করণীয় কী?

মাওলানা আসগর আলী: প্রথমত, মুসলিম দেশগুলোর উচিত ফিলিস্তিন ও মজলুম জাতির পক্ষে একসাথে অবস্থান নেওয়া। দ্বিতীয়ত, ওআইসি (OIC) কে শুধু বিবৃতি দিয়ে নয়, কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। তৃতীয়ত, মুসলিম নেতাদের নিজেদের মধ্যে আস্থা ও সংহতি বৃদ্ধি করতে হবে। এটি কেবল ফিলিস্তিন নয়, গোটা উম্মাহর অস্তিত্বের প্রশ্ন।

প্রশ্ন: গুরুত্বপূর্ণ বিশ্লেষণের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, মাওলানা সাহেব।

মাওলানা আসগর আলী: আল্লাহ আপনাদের হিফাজত করুন। ধন্যবাদ আপনাকেও।

সাক্ষাৎকার গ্রহণ: মজিদুল ইসলাম শাহ

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha